গণ আতঙ্ক আদতে কী?
স্কুলে নাকি বাসা বেঁধেছে ভূতের দল! প্রতিদিন ছাত্রছাত্রীদের ঘাড়ে চাপছে। কেউ আচমকা মূর্ছা যাচ্ছে, কেউ আবার প্রলাপ বকছে। উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর জেলার এক সরকারি স্কুলে ঘটেছে এমনই আজব ঘটনা। স্কুল চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে কয়েক জন ছাত্রী। স্কুলের উচ্চ আধিকারিক ও চিকিৎচকরা পরিদর্শনে এলে চোখে পড়ে অবাক করা চিত্র। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে কাঁদতে থাকে কয়েক জন ছাত্রী, কেউ আবার চিৎকার করে গলা ফাটাচ্ছে, আবার কয়েক জন অকারণেই দেওয়ালে মাথা ঠুকছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ভিমলা দেবী বলেন, ‘‘গত মঙ্গলবার থেকেই এই ঘটনা শুরু হয়েছে। ছাত্রীরা কাঁপছে, চিৎকার করছে, কান্নাকাটি করছে। আমরা ছাত্রীদের পরিবারের সদস্যদের ডাকি। তাঁরা ওঝা নিয়ে আসেন। তার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। কিন্তু আবার বৃহস্পতিবার একই ঘটনা ঘটে।’’
তিনি আরও জানান, ছাত্রছাত্রীদের বাবা-মায়েরা জোর করে স্কুলে পুজো করা শুরু করেন। তাঁদের ধারণা স্কুলে জিন ঢুকেছে। এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য চিকিৎসকদের কাছ থেকেও পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের দাবি, অন্ধকার ক্লাসঘরই তাদের ভয়ের আঁতুরঘর।
মনোবিদদের মতে, এটা আসলে গণ আতঙ্ক। এক জনের থেকে আর এক জনের মনে দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। তারা ভাবছে সত্যিই বুঝি ওই স্কুলে জিন আছে। তাদের ক্ষতি করবে। এটা আসলে মনের ভুল। ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে এর থেকে ওই ছাত্রীদের মুক্ত করা সম্ভব।
দেরাদুনের শিক্ষা বিভাগের এক জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মুকুল সতীর বক্তব্য, এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। কারণ একই রকম ঘটনার খবর চক্রতা এবং উত্তরকাশীর কয়েকটি স্কুল থেকেও এসেছে। মুকুল বলেন, ‘‘আমরা একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারা পড়ুয়াদের মধ্যে ভয় কমানোর প্রয়াসে রাজ্য জুড়ে সরকারি স্কুল পরিদর্শন করবে।’’