ওটিটি মাধ্যমে সিনেমার বাছাই প্রক্রিয়া নষ্ট করছে সিনেমার সংস্কৃতি, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ছবি: সংগৃহীত
নিয়মিত অনলাইন মাধ্যমে সিনেমা বা সিরিজ দেখেন? তা হলে নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন ওই প্ল্যাটফর্মটি আপনাকে মাঝে মধ্যেই জানাতে থাকে, আপনার ভাল লাগবে এমন সিনেমা বা সিরিজ এসে গিয়েছে সেখানে। কিংবা একটা সিনেমার পাতাতে ঢুকলেই তার তলায় আসতে থাকে, একই ঘরানার কোনও সিনেমা বা সিরিজ আপনার পছন্দ হতে পারে। এই যে সম্ভাব্য পছন্দের তালিকা প্রকাশ করার প্রক্রিয়া, তা সিনেমা-সংস্কৃতির ক্ষতি করছে। এমনটাই দাবি পরিচালক মার্টিন স্করসেসির। পরিচালকের বক্তব্য, এতে সাধারণ দর্শক নিজেদের পছন্দের ছবিটি খুঁজে নিতে পারেন না। বদলে তাঁদের উপর ওটিটি মাধ্যমের ‘অ্যালগোরিদম’ নিজেদের বাছাই চাপিয়ে দেয়। যা শিল্পমাধ্যমটিকে প্রচণ্ড পরিমাণে যন্ত্রনির্ভর করে তুলছে।
‘দ্য আইরিশম্যান’ বলে কয়েক বছর আগে একটি সিনেমা তৈরি করেছিলেন স্করসেসি। সেই ছবি মুক্তি পায় নেটফ্লিক্স নামের অনলাইন সিনেমা দেখার প্ল্যাটফর্মেই। তখন পরিচালক বলেছিলেন, হলিউডের প্রযোজকরা তাঁর পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। তাই এই অনলাইন মাধ্যমেই ছবি প্রকাশের সিদ্ধান্ত। সেই স্করসেসিই হালে অনলাইন মাধ্যম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তবে তিনি একাই নন, বহু পরিচালক এবং ফিল্ম সমালোচকই হালে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের এই সিনেমা বা সিরিজের ‘সাজেশন’ বিভাগের নিন্দা করছেন। অনেকেরই অভিযোগ, দর্শকদের সিনেমা খুঁজে নিতে না দিয়ে, নিজেদের ইচ্ছেমতো ছবি দেখানোর চেষ্টা করে এই মাধ্যমগুলির ‘আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স’।
আলাদা আলাদা ব্যবহারকারীর জন্য একই সিরিজের আলাদা পোস্টার। যাকে যে ভাবে আকৃষ্ট করা যায়।
তবে বিষয়টি এখানেই শেষ নয়। হালে অনেকেরই দাবি, নেটফ্লিক্স আলাদা আলাদা ব্যবহারকারীর জন্য একই সিনেমা বা ছবির আলাদা আলাদা পোস্টার ব্যবহার করে। ধরুন, আপনি প্রেমের ছবির খুব ভক্ত। আর আপনার বন্ধু মারপিটের ছবির। সেক্ষেত্রে আপনি যখন নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে নেটফ্লিক্সে ঢুকছেন, তখন কোনও ছবির পোস্টারে আপনি হয়তো দুই চরিত্রের ঘনিষ্ঠ ছবি দেখছেন। ঠিক তখনই ওই একই ছবির পোস্টারে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে আপনার বন্ধু দেখছেন, মারপিটের ছবি।
এই গোটা পদ্ধতি সিনেমা দেকার সংস্কৃতির ক্ষতি করছে বলেই অভিযোগ তুলেছে ওয়াকিবহাল মহল। এই পদ্ধতির বিরোধিতা করছেন মার্টিন স্করসেসির মতো অনেকে।