তীব্র দাবদাহে নাজেহাল রাজ্য। বড় থেকে ছোট সকলেরই সর্দি-গরমির মতো সমস্যা দেখা যাচ্ছে। দীর্ঘ দু’বছরের অনভ্যাসের পরে স্কুলে ফিরেছে ছোটরা। তাই তাদের অস্বস্তি হয়তো খানিক বেশি। সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা খুসখুস বা গলা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে ছোটদের। তবে সব কিছুর নেপথ্যে যে গরমের তেজ, তেমনটা নয় বলেই মত চিকিৎসকদের।
ভাইরাল সংক্রমণ
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অপূর্ব ঘোষের মতে, ‘‘অনেকে হয়তো ভাবছেন, গরমের কারণে ছোটদের জ্বর বা এমন সমস্যা হচ্ছে। তা কিন্তু নয়। একটা ভাইরাল সংক্রমণ হচ্ছে, যার কারণে জ্বর, গলাব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়ার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। তবে এগুলির কোনওটিই গুরুতর নয়। দিনকয়েকের মধ্যে সেরেও যাচ্ছে।’’
গরমে কী করবে ছোটরা?
ডা. ঘোষের কথায়, ‘‘শহরাঞ্চলের অনেক বাড়িতেই এসি থাকে। ছোটরা এত দিন বাড়িতে ছিল বলে, ততটা কষ্ট হয়তো অনুভব করেনি। তবে রাস্তায় বা স্কুলবাসে যাওয়ার সময়ে গরম লাগবেই। সেটা একটু সহ্য করতে হবে।’’
জল খাওয়ার বিকল্প নেই এই গরমে। তাই জল, ফলের রস, টিফিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল দিতে হবে ছোটদের। বাড়িতে যে ভাবে অভিভাবকেরা ঘণ্টায় ঘণ্টায় জল খাওয়ানোর কথা বলতে পারেন, স্কুলে তা না-ও হতে পারে। ডা. ঘোষ বললেন, ‘‘স্কুলের তিন-চার ঘণ্টায় জল একটু কম খাওয়া হলেও একটি সুস্থ শিশুর কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। শরীরের সেটুকু ক্ষমতা থাকে।’’
গ্রাম বা মফস্সলের দিকে সাইকেলে চড়ে অনেকটা পথ পেরিয়ে স্কুলে যায় ছোটরা। তারা যেন ছাতার ব্যবহার করে, বললেন ডা. ঘোষ। স্কুলে যাওয়ার আগে এবং ফিরে এসে দু’বার স্নান করতে পারে ছোটরা।
গরমে তেল মাখলে রোমকূপগুলি বন্ধ হয়ে যায়। তাই তেল না মাখাই ভাল।
স্কুলে ভরদুপুরে রোদের মধ্যে খেলাধুলো না করাই ভাল। খেলতে হলে ছায়াঘেরা জায়গায় খেলতে হবে।
সুতির-ঢিলেঢালা পোশাক পরবে ছোটরা। তবে স্কুলের পোশাকে আলাদা কিছু করার অবকাশ নেই। তবে টাইট জামাকাপড় এখন না পরাই ভাল।
ইউটিআই
ডা. ঘোষ বললেন, ‘‘ইউটিআই প্রতিরোধ করার অন্যতম প্রধান পথ হল, শৌচাগার ব্যবহার করার অবাধ সুযোগ। স্কুল কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকতে হবে যেন, সময়মতো ছোটরা টয়লেট করতে পারে। শৌচাগার যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। টয়লেট চেপে রাখা কখনও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।’’
ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধের জন্য ওআরএস বা অন্য ইলেকট্রোলাইট জাতীয় পানীয় দিয়েই থাকেন অভিভাবকেরা। তবে কতক্ষণ এসিতে থাকবে ছোটরা, এসি থেকে বেরিয়েই যেন খুব গরমের মধ্যে চলে না যায়, এই বিষয়গুলিতেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।