মাকে কাঁধে তুলে তাঁর স্বপ্ন পূরণ! ছবি: সংগৃহীত
ছোটবেলায় পুজোর ছুটি হোক কিংবা গরমের ছুটি— বাবা-মায়ের কাছে ঘুরতে যাওয়ার আবদার কমবেশি সকলেই করেন। আর বাবা-মায়েরাও সময় সুযোগ করে সেই আবদারগুলি পূরণ করে থাকেন। তবে বয়স বাড়লে তাঁদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা ক’জন মনে রাখেন, বলতে পারেন? বয়স বাড়লে হয় বন্ধুবান্ধব, না হয় সঙ্গীর সঙ্গেই ঘুরতে যেতে স্বচ্ছন্দবোধ করেন অধিকাংশ লোক! বাবা-মাকে নিয়ে ঘোরার কথা খুব কম লোকেই ভাবেন।
কেরলের দুই ভাইয়ের কাহিনি শুনলে আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। বৃদ্ধা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে তাঁকে কাঁধে নিয়ে পাহাড় চড়লেন সেই দুই ভাই। কোট্টায়াম জেলার মুতুচিরার বাসিন্দা ৮৭ বছর বয়সি এলিকুট্টি পল তাঁর ছেলেদের এক বার বলেছিলেন যে তিনি পার্শ্ববর্তী জেলা ইদুক্কিতে ফুটে থাকা নীরকুঞ্জি নামের দুর্লভ ফুলগুলি দেখতে চান। মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে উদ্যোগী হলেন তাঁর দুই পুত্র। নীরকুঞ্জি ফুলটি বারো বছরে এক বারই ফোটে।
মায়ের সঙ্গে দুই ভাই পাহাড়ের চূড়ায়।
তাঁর ছেলে রোজন এবং সত্যান বৃদ্ধাকে একটি জিপে করে মুন্নারের কাছে কালিপাড়া পাহাড়ে পৌঁছনোর জন্য ১০০ কিলোমিটারের ভ্রমণ করেন। তবে সেই স্থানে পৌঁছে তাঁরা দেখেন, গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বাকিটা পথ তাঁদের হেঁটেই অতিক্রম করতে হবে। মায়ের স্বপ্নভঙ্গ করা যাবে না, তাই দুই ছেলে মাকে কাঁধে তুলেই দেড় কিলোমিটার খাড়া পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছন। পাহাড়ের চূড়া যেন নীল নীরকুঞ্জি ফুলের চাদরে ঢাকা।
সমাজমাধ্যমে এই দুই ভাইয়ের কীর্তি দেখে প্রশংসার জোয়ার আসে। অনেকেই তাঁদের প্রতি শুভকামনা জানান।
দীর্ঘ বারো বছর পর এ বছর নীলকুরিঞ্জি ফুটেছে কেরলের কালিপাড়ায়। কালিপাড়া হল ইদুক্কি জেলার মুন্নারের কাছে একটি গ্রাম। নীলকুরিঞ্জি ফুলের জন্যই এই গ্রাম পর্যটন মানচিত্রে স্থান পেয়েছে।