পিঠ ও কোমরের ব্যথা সারাতে মেনে চলুন বিশেষ কিছু নিয়ম। ছবি: আইস্টক।
মাঝে মাঝেই কোমরে ব্যথা হয়? একটানা বসে থাকলে পিঠের দিক থেকে নামতে থাকে যন্ত্রণা? না, আপনি একা নন। এই সমস্যার ভুক্তভোগী অনেকেই। অফিসে অনেক সময়ই একটানা চেয়ারে বসে কাজ করতে করতে মেরুদণ্ডের কাছে ব্যথা শুরু হয় অনেকেরই। বস্তুত, বসে কাজ করার সময় মেরুদণ্ডের যো জোর ও পেশীগুলির যে শক্তি প্রয়োজন হয়, তার অনেকটাই হারিয়ে ফেলি আমরা। পরিচর্যার অভাবে বয়স বাড়ার অনেক আগেই ব্যথাজনিত সমস্যা নাস্তানাবুদ করে ফেলে।
ব্যথাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে অসুখ কমানোর আধুনিক চিকিৎসা ‘পেন ম্যানেজমেন্ট’। সেই বিভাগেরই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেবাঞ্জলি রায়ের মতে, ‘‘ক্রনিক এই সমস্যার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম, ওষুধ এ পর্যাপ্ত ঘুম কার্যকরী। বেদনানাশক ওষুধ খেয়ে দিনের পর দিন ব্যথাকে নিয়ন্ত্রণ করে যাওয়া নিছক বোকামি। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অন্য অসুখ ডেকে আনে, আর সাময়িক আরাম মিললেও মূল অসুখ কোনও দিনই কমে না। বরং জীবনযাপনের তালিকায় কিছু জিনিস প্রবেশ করাতে পারলে সমস্যাগুলো দ্রুত সারে।’’
প্রতি দিনই তাই রুটিনে প্রবেশ করান এমন কিছু বিষয় যা পেশী ও হাড়কে মজবুত করে ব্যথা সরাতে বিশেষ কাজে আসবে। মূলত পাঁচটি বিষয়ের উপর জোর দিলেই দিনের শেষে অনেকটা সুস্থ থাকবেন আপনি।
আরও পড়ুন: শীতের শুরুতেই অ্যাজমাকে জব্দ করুন, শ্বাসকষ্ট রুখতে মানুন এ সব
আরও পড়ুন: শীতের ফ্যাশনে ‘ইন’ সেকুইন, পার্টি হোক বা ডিস্ক, এই পোশাকেই শো স্টপার আপনি
শরীরচর্চা: হাড়, পেশী ও মেরুদণ্ডের জোর বাড়াতে এর চেয়ে উপকারী কোনও ওষুধ নেই। বিশেষজ্ঞ ট্রেনারের কাছ থেকে শরীরের গড়ন ও ধরন বুঝে জেনে নিন প্রয়োজনীয় ব্যায়াম। এ ছাড়া দৌড়নো, জগিং কিছু স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ ব্যথা সারাতে ও পেশীর জোর বাড়াতে বিশেষ কাজে আসে।
ঠান্ডা-গরম সেঁক: ব্যথা জানান দিলে পেশীদের আরাম দিতে ও শরীরের প্রদাহ কমাতে ঠান্ডা ও গরম সেঁক দিন। এক বার হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যথার জায়গায় ধরে থাকুন ১৫ সেকেন্ডের মতো। তার পর আবার সেখানে ১৫ সেকেন্ডের জন্য কোল্ড ব্যাগ সেঁক দিন। এ ভাবে মিনিট দশ-পনেরো সেঁক দেওয়ার ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে, পেশীকে শিথিল করবে। এদের হাত ধরেই কমবে ব্যথা।
ঘুম: ক্রনিক ব্যথায় যাঁরা ভোগেন, তাঁরা প্রতি দিন প্রায় ৭-৮ ঘণ্টা নিয়ম করে ঘুমোন। ঘুমনোর সময় শোওয়ার ধরনও ঠিক রাখুন। অনেক সময় ভুল ধরন থেকেও পেশীতে ব্যথা হয়।
জুতো: কোমর ও পিঠে ব্যথা প্রায়ই হলে জুতো বদলাতে হবে। হিল তো নৈব নৈব চ। যদি কোনও দিন পরতে ইচ্ছেও হয়, তা হলেও হাই হিল কখনওই নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে জুতো বাছুন। শুধু নরম চামড়াই নয়, জুতোর গ্রিপ, আকার সব কিছুই খতিয়ে দেখে কিনতে হবে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তবেই এই কাজটা সারুন।
ডায়েট: খাওয়ার পাতে হাড় শক্ত করার খাবার রাখুন রোজই। ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি ১২, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ খাবার হাড় ও পেশীর জোর বাড়ায়। হাড়ের ভঙ্গুরতা রোধ করে। সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার চেয়ে এই সব খাবারে পেশীকে মজবুত রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। ঠিকঠাক ডায়েট ও ব্যায়ামের কারণে ওজনও কম থাকবে। ওজন কম রাখলে হাঁটু ও কোমরের উপর বেশি ভার না পরায় তারা দীর্ঘ দিন মজবুত থাকবে।