পিঠ ও কোমরের ব্যথার অন্যতম কারণ দীর্ঘ ক্ষণ চেয়ারে বসে থাকা। ছবি: শাটারস্টক।
একটানা অফিসে বসে কাজ করে কোমর ও পিঠে ব্যথানিত্যসঙ্গী অনেকেরই। কয়েক জনের আবার বয়সের সঙ্গে ব্যথাও মাথাচাড়া দেয়। পিঠের লিগামেন্ট, পেশি, জয়েন্ট ও হাড়ের উপর কোনও না কোনও ভাবে বেশি ও ভুল ভাবে চাপ পড়লে এই ধরনের ব্যথা বাড়ে। চোট আঘাত বা আর্থ্রাইটিস থাকলে এই ব্যথাগুলো বেশি পরিমাণে সমস্যা তৈরি করে।
পিঠের ব্যথায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুবই প্রয়োজন। নিয়ম করে ওষুধ ও ব্যায়ামই এই অসুখের দাওয়াই। তবে নিয়মিত কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চললেও মিলতে পারে সমাধান। অনেক সময় এই সব উপায় মেনে চললেই সমস্যা অনেকটা আয়ত্তে আনা যায়।
অস্থিবিশেষজ্ঞ অমিতাভ নারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘ইদানীং তরুণ প্রজন্মের পিঠের বা কোমরের ব্যথা বা়ড়ছে। বেশির ভাগ সময়েই অফিসে একটানা বসে কাজের জন্য এই ধরনের সমস্যার শিকার হতে হয়। চাকা দেওয়া চেয়ার এমনিই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া তো প্রয়োজনীয় বটেই। তবে জুতো বদলানো, ঠান্ডা-গরম সেঁক এগুলোও অনেক সময় নিলে আরাম পান রোগী। সঙ্গে ব্যায়ামও খুব দরকার।’’
কোন কোন ঘরোয়া উপায়ে পিঠের ব্যথা কমতে পারে, রইল তার হদিশ।
সেঁক: শরীরের অভ্যন্তরে হওয়া প্রদাহ থেকেই মূলত ব্যথা হয়। সেই প্রদাহ কমাতে সেঁক দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঠান্ডা ও গরম সেঁক দিন ব্যথার জায়গায়। এক বার হট ওয়াটার ব্যাগ ১০ সেকেন্ড মতো রেখে ফের আইস ব্যাগ রাখুন ব্যথার জায়গায়। সেটিও রাখুন ১০ সেকেন্ড।
চেয়ার বদলান: চাকা দেওয়া চেয়ারে না বসে চেষ্টা করুন কাঠের চেয়ারে বসতে। যদি একান্তই তা সম্ভব না হয় তা হলে এমন চেয়ার বাছুন যাতে পিঠ সোজা থাকার পাশাপাশি পায়ের পাতাও মাটিতে ঠেকে থাকে। মেরুদণ্ড সোজা করে বসুন। ঝুঁকে বা পেলভিসের উপর চাপ দিয়ে বসার অভ্যাস ত্যাগ করুন। দরকারে কোমরে একটা সাপোর্ট রাখুন।
জুতো বদলান: এত দিন যা জুতো পরেছেন তা থেকেও ব্যথা বাড়তে পারে। কোন জুতো বাছবেন তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিন। জুতোর সমস্যা থেকেও কোমর ও পিঠের ব্যথা হয়। তাই বদলের ভাবনা এলেই নিজের ইচ্ছেমতো পরীক্ষামূলক ভাবে তা বেছে নেবেন না।
স্ট্রেচিং: ব্যায়ামের প্রয়োজনীয়তা খুবই। অন্তত স্ট্রেচিংটুকু করতেই হবে। এতে পিটের পেশি, হাড় ও স্নায়ু আরাম পায়। প্রদাহ কমে। সকালে ঘুম থেকে উঠে কাটে বা চেয়ারে বসে দুই হাত মাথার উপর টানটান তুলে দিন। পা দু’টিকেও যতটা পারেন সামনে দিকে ছড়িয়ে দিন টান করে। কিছু ক্ষণ এ ভাবে ধরে থাকুন।
এর পর সোজা হয়ে দাঁড়ান। ডান হাঁটু ভেঙে বাঁ পা কে টান করে পিছনের দিকে ছড়িয়ে দিন। শরীরের পুরো ভর ধীরে ধীরে বাঁ পায়ের উপর দিন। কিছু ক্ষণ ধরে রেখে একই কাজ করুন ডান পায়ে। এ ভাবে প্রতি পায়ে পাঁচ বার করে অভ্যাস করুন। ফিটনেস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আও কিছু স্ট্রেচিং অভ্যাস করতে পারেন।