গানের সঙ্গে যোগ রয়েছে আপনার মন এবং শরীরের। প্রতীকী ছবি।
গান গাওয়ার কথা বললেই ‘সহজপাঠ’-এর কথা মনে পড়ে যায়— ‘উফ কী শীত, কষে গাও গীত’। শীতের সঙ্গে গীতের ওতপ্রোত একটা সম্পর্ক যে আছে তা বোঝাই যাচ্ছে। এ ছাড়াও গানের সঙ্গে আপনার মন এবং শরীরেরও যে যোগ রয়েছে, সে কথা কি জানতেন?
গান গাইলে শরীর ভাল হয়?
বিলক্ষণ! গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত গান গাইলে শরীর এবং মস্তিষ্কের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে, ছোটবড় অনেক রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চাবিকাঠিও আছে গানের মধ্যে।
গান আপনার শরীরে কেমন প্রভাব ফেলে?
১) মন ভাল রাখে
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গান গাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীর থেকে তিনটি ‘হ্যাপি হরমোন’ যথা এন্ডরফিন, সেরেটোনিন এবং ডোপামাইন ক্ষরণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। অধ্যাপক ডেইজি ফ্যানকোর্ট বলছেন, ‘‘গান গাইলে কর্টিসলের মতো স্ট্রেস হরমোন বা মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী হরমোনের পরিমাণ কমে যায়।’’
ফলে আমাদের মন ফুরফুরে থাকে সব সময়।
২) ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে
নিয়মিত গান গাইলে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, বতর্মান সময়ে আমাদের দেশে প্রতিটি বড় শহরে যে হারে বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ছে, তাতে আরও বেশি করে ফুসফুসের খেয়াল রাখা প্রয়োজন। শুধু তাই নয় কোভিড পরবর্তী সময়ে ফুসফুসের জটিলতা কাটিয়ে তুলতে গান গাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
গান গাইলে শরীর এবং মস্তিষ্কের ভিতরে বিশেষ কিছু পরিবর্তন হয়। প্রতীকী ছবি।
৩) অবসাদ আসতে দেয় না
গান গাওয়ার সময় মস্তিষ্কের অন্দরে এন্ডরফিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যার প্রভাবে মানসিক চাপ তো কমেই, সেই সঙ্গে মন খুশিতে ভরে ওঠে। তাই এ বার থেকে যখনই মন খারাপ করবে, তখনই দু’কলি গান গেয়ে নেবেন, দেখবেন সঙ্গে সঙ্গে উপকার মিলবে।
৪) স্মৃতিশক্তি উন্নত করে
গান গাওয়ার সময় ব্রেনে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। স্বাভাবিক ভাবেই মনোযোগ এবং স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে। এ ছাড়া কথা মনে করে, সুরে, লয়ে এবং তালে গান গাওয়াটাও কিন্তু মস্তিষ্কে এক ধরনের চর্চা।
৫) একতা গড়ে তোলে
গান গাইতে জানলে পাড়ার সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গানের সুযোগ এসেই যায়। ফলে লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা বাড়তে থাকে। বাড়ে বন্ধুর সংখ্যাও। একসঙ্গে গান গাওয়ার মানসিকতা থেকেই একতা গড়ে ওঠে।
৬) নিজেকে প্রকাশ করতে শেখায়
অনেকেই নিজের মনের কথা উল্টো দিকের মানুষটিকে ঠিক মতো বুঝিয়ে বলতে পারেন না। গানের কথা আপনার সেই অনুভূতি ফিরিয়ে দিতে পারে। নিজের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গানের দু’কলি গেয়ে তা সহজেই বোঝানো যায়।
৭) ব্যথার অনুভূতি হয় না
ব্যথা নিয়েই যাঁদের আগামী জীবন কাটাতে হবে, তাঁদের জন্য গানই ভরসা। ব্যথার ওষুধ খাওয়ার অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। তাই গান শুনে বা গান গেয়ে যদি ব্যথা লাঘব করা যায় মন্দ হয় না।