—প্রতীকী ছবি।
কাজের ফাঁকে হোক কিংবা ভিড় মেট্রোতে বাড়ি ফেরার পথে, এক বার সমাজমাধ্যমের পাতায় চোখ বুলিয়ে নেন অনেকেই। ছবি, ভিডিয়ো, বিতর্কিত বিষয় নিয়ে লেখালিখি, রিল এ সব দেখতে দেখতে কখন যে সময় বয়ে যায়, টের পাওয়া যায় না। এই ব্যস্ততার যুগে আলাদা করে তো নিজের জন্য সময় পাওয়া যায় না। তাই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম থেকে সাময়িক বিনোদন খুঁজে নেন অনেকেই। কিন্তু সমীক্ষা বলছে, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক বেশি স্ক্রল করলে মানসিক অবসাদ আর উদ্বেগ বাড়তে থাকে।
‘বিহেভিয়ার অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি’ নামক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা জানাচ্ছে, কমবয়সিদের মধ্যে সমাজমাধ্যম ব্যবহারের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। সারা ক্ষণই সমাজমাধ্যমে সক্রিয় থাকে তাঁরা। এমনকি, বন্ধুদের জমায়েতে গিয়ে কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে নিভৃতে সময় কাটানোর সময়েও চোখ থাকছে মোবাইলে। আর এই কারণেই কমবয়সিদের মধ্যে বাড়ছে একাকিত্ব, মনস্তাত্ত্বিক নানা যন্ত্রণা।
১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সিদের মোট ২৮৮ জনের উপরে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। প্রায় প্রত্যেকেই ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, মেসেঞ্জারে অত্যন্ত সক্রিয়। তবে সকলেই একই রকম ভাবে সক্রিয় নন। অনেকেই আছেন শুধুমাত্র অন্যের ছবি, লেখা, ভিডিয়োয় পছন্দ চিহ্ন দেন আর মন্তব্যে করেন। আবার এক দল রয়েছেন, তাঁরা দিনে ৩-৪টি পোস্ট করেন। ব্যবহারের ধরন আলাদা হলেও সকলেই প্রায় সারা দিন সমাজমাধ্যমে সক্রিয় থাকছেন। একইসঙ্গে অধিকাংশেই একাকিত্বে ভুগছেন। প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, সমাজমাধ্যমে ব্যবহারের সময়টুকু তাঁরা অন্যান্য চিন্তাভাবনা থেকে দূরে থাকতে পারেন। কিন্তু তার পরেও নানা চিন্তা, উদ্বেগ ঘিরে ধরে। সৃজনশীল কোনও ভাবনা মাথায় আসে না।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, অনলাইনের যুগে সমাজমাধ্যম থেকে দূরে থাকা সম্ভব নয়। অনলাইনে ব্যবসা করেন যাঁরা, তাঁদের কাছে সমাজমাধ্যমটাই কর্মক্ষেত্র। সমাজমাধ্যম ব্যবহার না করলে অনেক বিষয় থেকে পিছিয়েও পড়তে হয়। তবে সব কিছুরই নির্দিষ্ট একটি সময় রয়েছে। অধিকাংশ সময় যদি সমাজমাধ্যমের পাতায় চোখ থাকে, তা হলে সমস্যা হবেই। সমাজমাধ্যম ব্যবহার বন্ধ না করে সময়ে রাশ টানা জরুরি। এ ক্ষেত্রে নিজেকেই ঠিক করতে হবে কতটা সময় নিজেকে দেবেন আর কতটা সমাজমাধ্যমকে।