পোষ্য পার্ভো আক্রান্ত, বুঝবেন কী করে? ছবি: ফ্রিপিক।
পথকুকুর কেবল নয়, বাড়ির পোষা কুকুরও আক্রান্ত হতে পারে পার্ভো ভাইরাসে। সঠিকক সময়ে পোষ্যকে প্রতিষেধক না দিলেই এই রোগের আশঙ্কা থাকে। মূলত ৬ মাস বয়সের পর থেকেই পার্ভোতে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। বেশ কিছু লক্ষণও দেখা দিতে থাকে পোষ্যের শরীরে। এই বিষয়ে পশু চিকিৎসক সবুজ রায়ের মত, পার্ভো ভাইরাস খুব বিপজ্জনক। এক সময়ে পথকুকুরদের মধ্যে মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। বাড়ির পোষা কুকুরের শরীরেও এই ভাইরাস ঢুকতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭০ সালের শেষ দিকে পার্ভোর সংক্রমণ নজরে আসে। ১৯৭৮ সালের পর থেকে বছর দুয়েক বিশ্বের নানা দেশে পার্ভোর সংক্রমণ ঘটেছিল। প্রায় ছ’মাস বয়স পর্যন্ত কুকুরের মধ্যেই পার্ভো-র সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। পশু চিকিৎসক জানাচ্ছেন, কুকুর কিনে এনে অনেকেই সঠিক সময়ে প্রতিষেধক দেন না। সেই কুকুরকে নিয়ে যত্রতত্র ঘুরেও বেড়ান। ফলত, রোগ ছড়িয়ে পড়ে।
কী এই ভাইরাস, কোন কোন লক্ষণ দেখা দেয়?
পার্ভো দু’রকমের হয়। এর পুরো নাম ক্যানাইন পার্ভো ভাইরাস। প্রথম অবস্থায় চিকিৎসা না করালে পরে আর ওষুধে তেমন কাজ হয় না। প্রাণসংশয়ও দেখা দেয়।
চিকিৎসক বলছেন, রটওয়েলার, পিটবুল, ল্যাব্রাডর, গোল্ডেন রিট্রিভার, ডোবারম্যান, জার্মান শেফার্ড, স্প্যানিয়েল ককারের মতো প্রজাতির কুকুর তাড়াতাড়ি আক্রান্ত হতে পারে। ক্যানাইন পার্ভো ভাইরাস বা সিপিভি সংক্রমিত কুকুরের মল কিংবা বমি শুঁকে নিলে বা তার সংস্পর্শে এলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। আক্রান্ত কুকুরের বমি, ডায়েরিয়া, ওজন কমে যাওয়া, খিদে কমে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। মলের সঙ্গে রক্ত বার হয়। প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে কুকুর।
আক্রান্ত কুকুরের থেকে তার গর্ভস্থ সন্তানের মধ্যেও ঘটতে পারে সংক্রমণ। জন্মানোর পরে খুব অল্প বয়সে এই কুকুরগুলি মারা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছ’সপ্তাহ থেকে ছ’মাস বয়সের মধ্যে কুকুরের মৃত্যু হয়।
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, বাড়ির পোষ্যের যদি জ্বর, পেটখারাপ, বমি চলতেই থাকে, সেই সঙ্গে খিঁচুনির লক্ষণ দেখা দেয়, তা হলে দেরি না করে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এই সময়ে কুকুরদের হৃৎস্পন্দনের হারও বেড়ে যায়। শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে স্যালাইন ও অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা যায়।