জল না খেলে বয়স্কদের কী কী শারীরিক সমস্যা হতে পারে? ছবি: ফ্রিপিক।
পুজো এসেই গেল। আর পুজো মানেই এখনও অনেক বাড়িতে উপোস করার চল আছে। বিশেষ করে বাড়ির বয়স্করা এই নিয়ম খুব কঠোর ভাবে মেনে চলেন। অনেককেই দেখা যায়, নির্জলা উপোস করে থাকেন সারা দিন। তার পরেই বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। অনেকের শরীরে জলশূন্যতার লক্ষণও ফুটে ওঠে। তাই বিশেষ ভাবে সাবধান থাকতে হবে। বয়স্কদের শরীরে জলের ঘাটতি হলে বিপদ ঘটতে পারে। কোন কোন সমস্যা দেখা দিতে পারে, তা জেনে নিয়ে সতর্ক থাকাই উচিত।
নির্জলা উপোস করলে কী কী সমস্যা হবে?
এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলছেন, উপোস করা শুধু নয়, এমন অনেকেই থাকেন, যাঁরা জল তো খানই না, ওষুধও বাদ দেন। ফলে রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে বিপত্তি বাধে। আবার কেউ যদি ওষুধ খাওয়া দরকার ভেবে সুগারের ওষুধ খেয়ে সারা দিন উপোস করেন, তা হলে রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকা নেমে গিয়ে অন্য বিপত্তি ঘটতে পারে। জলের অভাবে শরীরে রক্তের পরিমাণ কমে যায়, তাই সমস্ত অঙ্গে পর্যাপ্ত রক্ত পৌঁছে দিতে হৃদ্যন্ত্রকে আরও বেশি পরিশ্রম করতে হয়। ফলে হৃদ্যন্ত্রের উপর চাপ পড়ে। হঠাৎ করে হৃদ্স্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়।
বাঙালিদের গ্যাস-অম্বলের সমস্যা লেগেই থাকে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, বেশি উপোস করলে ও জল কম খেলে গ্যাসের সমস্যা তো বাড়েই, পেশি থেকে প্রোটিন বেরিয়ে গিয়ে যে ক্ষতি হয়, তা আর সে ভাবে পূরণ হয় না। চিকিৎসকের পরামর্শ, আলসার বা লিভারের কোনও রোগ থাকলে, উপোস করা একেবারেই চলবে না। বরং ঘণ্টায় ঘণ্টায় গ্লুকোজ মেশানো জল খান। ডাবের জল খেলেও শরীরে জলের ঘাটতি হবে না।
আর কী কী মানতে হবে?
চিকিৎসকের পরামর্শ, জল না খেয়ে বা কম খেয়ে থাকা যাবে না। সুগার-প্রেসারের ওষুধও বন্ধ করলে হবে না। যদি উপোস করে বা জল না খেয়ে বাড়ির বয়স্ক কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়েন, তা হলে রোগীকে শুইয়ে দেবেন। কখনই দাঁড় করাবেন না বা বসাবেন না। পায়ের তলায় বালিশ দিয়ে উঁচু করে রাখতে হবে। সঙ্গে সঙ্গেই নুন-চিনির জল খাওয়াতে হবে। যদি রক্তচাপের হেরফের হয় অথবা রক্তে শর্করার পরিমাণ অনেকটা কমে যায়, তা হলে দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।