সন্তান দত্তক নেওয়ার নিয়ম কী? গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
চাইলেই কোনও শিশুকে দত্তক নেওয়া যায় না। সন্তান দত্তক নেওয়ার বিষয়ে ভারতে নির্দিষ্ট কিছু আইন রয়েছে। সেই আইনের বেশ কিছু ধারা-উপধারাও আছে। এমনিতে এখনও সমাজের একটি বড় অংশের মানুষের মধ্যে দত্তক নেওয়া নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে। তার উপর এই আইনের প্যাঁচে ভয় পেয়ে অনেক সময়ে ঘাবড়ে যান দত্তক নিতে উৎসাহী মানুষও। দেখে নিন দত্তক নেওয়ার বিষয়ে কী বলছে ‘সেন্ট্রাল অ্যাডপশন রিসোর্স অথরিটি’র ওয়েবসাইট।
দত্তক কন্যাদের সঙ্গে সুস্মিতা সেন। ছবি: সংগৃহীত
১। দত্তক নিতে উৎসাহী পিতা-মাতাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ হতে হবে। অর্থনৈতিক দিক থেকে হতে হবে স্থিতিশীল। কোনও মারণ রোগে আক্রান্ত হলে নেওয়া যাবে না দত্তক।
২। আগে কোনও সন্তান থাকুক বা না থাকুক, কিংবা বিবাহিত হন বা না হন, নিম্নলিখিত কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে প্রত্যাশিত বাবা-মা দত্তক নিতে পারেন—
ক) বিবাহিত দম্পতির ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই সম্মতি থাকতে হবে।
খ) এক জন অবিবাহিতা কিংবা বিবাহবিচ্ছিন্না নারী যে কোনও লিঙ্গের শিশু দত্তক নিতে পারবেন।
গ) অবিবাহিত কিংবা বিবাহবিচ্ছিন্ন পুরুষ শিশুকন্যা দত্তক নিতে পারবেন না।
৩। অন্তত দু’বছর স্থিতিশীল বিবাহিত সম্পর্কে না থাকলে মিলবে না দত্তক নেওয়ার অনুমতি।
৪। প্রত্যাশিত মা-বাবার বয়সের উপরেও বেশ কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে। ৪ বছর বয়স পর্যন্ত কোনও শিশুকে দত্তক নিতে চাইলে, কোনও দম্পতির বয়সের সমষ্টি ৯০ বছরের বেশি হওয়া চলবে না। একা কোনও ব্যক্তি দত্তক নিতে চাইলে বয়স হতে হবে ৪৫ বছরের কম। ৪ থেকে ৮ বছর বয়সি শিশু দত্তক নিতে চাইলে, দম্পতির বয়সের সমষ্টির সর্বোচ্চ সীমা ১০০ বছর। একক ব্যক্তির ক্ষেত্রে বয়সের সর্বোচ্চ সীমা ৫০ বছর। ৮ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে এই সীমা যথাক্রমে ১১০ ও ৫৫ বছর। দত্তক নেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করার দিন থেকে বয়সের হিসাব করা হবে।
৫। দম্পতিদের ক্ষেত্রে বয়সের সমষ্টিই বিবেচিত হবে।
৬। দত্তক নেওয়া শিশুর সঙ্গে প্রত্যাশিত মা-বাবার উভয়েরই বয়সের পার্থক্য অন্তত ২৫ বছরের হতে হবে।
৭। তবে কোনও আত্মীয় ও সৎ বাবা-মা দত্তক নিতে চাইলে বয়সের কোনও বিধি-নিষেধ নেই।
৮। তিন বা তার বেশি সন্তান থাকলে নেওয়া যাবে না দত্তক। তবে এই নিয়মটির বেশ কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে, যেগুলির কথা বিভিন্ন উপধারায় বলা রয়েছে।