ল্যাব্রাডর পুষছেন? জেনে নিন এদের স্বভাব, অসুখ, আচরণ সম্পর্কেও। ছবি:ফ্রিপিক।
বন্ধুর বাড়িতে দেখেছিলেন টিটোকে। উজ্জ্বল বর্ণ, ফন রঙা চারপেয়ে যখন ঘরময় ঘুরে বেড়ায়— তাকেই নিয়ে সকলে মেতে থাকে। ছেলের বায়না ছিলই। টিটোকে দেখে আপনিও তেমনই একটি পোষ্য ঘরে এনেছেন। তবে আনার পরই মনে হচ্ছে, বিষয়টি এত সহজ নয়। সে কী খাবে, কতটা খাবে, কী ভাবে বড় করবেন— তা-ও যেন ভাবনার বিষয়। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই পশু চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া দরকার। তবে ল্যাব্রাডর রিট্রিভার প্রজাতির সারমেয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকলেও তাকে বড় করতে সুবিধা হতে পারে।
ল্যাব্রাডর রিট্রিভার বা ল্যাব্রাডর, রিট্রিভার গান ডগের একটি প্রজাতি। ইংল্যান্ডে তাদের আদিনিবাস। গান ডগ বলতে শিকারের সময় সঙ্গে থাকা কুকুরদের বোঝায়। তবে ল্যাব্রাডর মোটেই হিংস্র নয়। বরং অন্য অনেক প্রজাতির সারমেয়র তুলনায় শান্ত, বুদ্ধিদীপ্ত। এদের ঘ্রাণশক্তিও প্রখর। এরা মনুষ্য মনিবদের সঙ্গে মিশেও যেতে পারে। সে কারণে পোষ্য হিসাবে ল্যাব্রাডরের জনপ্রিয়তা বরাবরই।
এই প্রজাতির প্রাপ্তবয়স্ক সারমেয়র ওজন হয় সাধারণত ২৫-৩৫ কেজি। সাদা, ফন, কালো বিভিন্ন রঙের হয় তারা। গড় আয়ু ১০ থেকে ১২ বছর। কী ভাবে বড় করবেন এই প্রজাতির সারমেয়কে?
১. ল্যাব্রাডর সাধারণত খেতে ভালবাসে। খাবারের পরিমাণও বোঝে না। বেশি খাবার দিলেও চেটেপুটে সাবাড় করে দিতে পারে। এই ধরনের সারমেয়দের মধ্যে স্থূলতার সমস্যাও দেখা যায়। ফলে, প্রথম থেকে তার খাবার এবং পরিমাণ সম্পর্কে জানা খুব জরুরি। বয়স অনুযায়ী কতটা খাবার তাকে দিতে হবে, জেনে নিন।
২. এই প্রজাতির সারমেয়র যথেষ্ট বুদ্ধি থাকে। সঠিক প্রশিক্ষণ দিলে এরা নানা কাজও করতে পারে। পুলিশের ডগ স্কোয়াডেও কিন্তু সে কারণে এই প্রজাতির কুকুর রাখা হয়। মলমূত্র ত্যাগের প্রশিক্ষণ থেকে আচরণ শিক্ষা— অনেক কিছুই এরা চট করে আত্মস্থ করে ফেলতে পারে। তাদের মধ্যে সঠিক অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য ছোট থেকেই প্রশিক্ষণ জরুরি।
৩. এই প্রজাতির সারমেয়র সাধারণত লোকজনের সঙ্গে মিশতে অসুবিধা হয় না। তবে সেই শিক্ষা ছোট থেকে হওয়াই ভাল। তাকে হাঁটাতে নিয়ে গেলে, বাড়িতে আগত অতিথিদের সামনে তাকে আনলে সে ধীরে ধীরে লোকজনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে।
৪. বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ল্যাব্রাডরের আর্থ্রাইটিস, পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া বা শিথিল হয়ে যাওয়ার মতো নানা সমস্যা দেখা যায়। মিশ্র প্রজাতির অন্যান্য সারমেয়দের চেয়ে এই ধরনের অসুখ বা লক্ষণ ল্যাব্রাডরদের একটু বেশি দেখা দেয়। বিভিন্ন ধরনের ডিজ়প্লেসিয়া, যেমন অস্থিসন্ধির জোর কমে যাওয়া, অস্থিসন্ধিতে কোনও রকম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির মতো নানা সমস্যা তাদের হয়। সে কারণে, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি। হাঁটাচলায় সমস্যা হলে দেরি না করে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার। এ ছাড়াও এদের ত্বকেও অ্যালার্জি, পোকাজনিত সমস্যা দেখা দেয়। স্থূলতার মতো সমস্যাও দেখা যায় এদের মধ্যে।
৫. স্থূলতা, অস্থিসন্ধির ব্যথা বশে রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি। তা ছাড়া নিয়মিত শারীরিক কসরত এদের সুস্থ রাখতেও সাহায্য করবে।