ইনফোসিস-এর দুই প্রতিষ্ঠাতা সুধা মূর্তি এবং নারায়ণ মূর্তি। ছবি: সংগৃহীত।
সালটা ১৯৮১। ভারতের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘ইনফোসিস’-এর জন্ম। তার পর কেটে গিয়েছে কয়েক দশক। এতগুলি বছরে কাজের চাপ সামলে দু’জনে মিলে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হয়নি সংস্থার দুই কাণ্ডারি সুধা মূর্তি এবং নারায়ণ মূর্তির। সম্প্রতি কপিল শর্মার শোয়ে রবীনা ট্যান্ডন এবং প্রযোজক গুনীত মোঙ্গার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সুধা। এই অনুষ্ঠানেই ব্যক্তিগত জীবনের কিছু কথা ভাগ করে নেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ইনফোসিস ফাউন্ডেশন’-এর পুরোধা। সংস্থার শুরুর সময় এখনও পর্যন্ত, প্রায় ৩০ বছর স্বামীর সঙ্গে কোনও ছুটি কাটাতে পারেননি বলে জানান তিনি।
দু’জনের কাছেই কাজের গুরুত্ব সবার আগে। ১৯৭৮ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন দু’জনে। পরের তিন বছরের মধ্যেই দু’জনে মিলে তৈরি করেন সংস্থা। স্বামী নারায়ণ মূর্তি কাজ পাগল মানুষ। কাজ ছাড়া অন্য কোনও দিকে মন নেই তাঁর। তা নিয়ে অবশ্য কোনও ক্ষোভ নেই সুধার। তিনি জানান, কখনও মুখ ফুটে বলেনওনি বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা। প্রথম দিকে সংস্থার দায়িত্ব পালন করলেও, পরে অবশ্য স্বেচ্ছায় সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। একাই সংসার এবং সন্তানের সমস্ত দায়িত্ব সামলান। সুধা বলেন, ‘‘আমার স্বামী বছরে ৭-৮ মাস বিদেশসফর করতেন। সংসারের দায়িত্ব তো দূর, মেয়ের সঙ্গেই কথাই বলতে পারতেন না তিনি। তা ছাড়া আমি কখনও আশা করিনি যে, তিনি আমাদের সময় দিতে পারবেন। সন্তান যখন বড় হল, পড়াশোনা করতে বাইরে গেল, আমারও দায়িত্বের বাঁধন কিছুটা আলগা হয়। নারায়ণের কথাতেই আমি আবার নতুন করে কাজ শুরু করি।’’
সুধা বিশ্বাস করেন গ্রামীণ ভারতের উন্নয়নে। তাঁর স্বপ্ন গ্রামের শিশুরা যেন তিন বেলা খাবার পায়। শিক্ষার আলো দেখে। ১৯৯৬ সালে তৈরি এই সংস্থার সমাজসেবার বিস্তৃত শাখায় ব্রতী। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মহিলাদের স্বনির্ভরতা, জনস্বাস্থ্য-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেবার অগ্রণী ভূমিকা এই সংস্থার। সুধার লক্ষ্য, দেশের প্রত্যেক স্কুলে একটা করে সুন্দর পাঠাগার থাকবে। তাঁর সংস্থা ইতিমধ্যে ৭০ হাজার পাঠাগার তৈরি করেছে। বই কিনে পড়ার জন্য বাড়তি উৎসাহ দেন সুধা। তিনি মনে করেন, পাঠকদের বই কেনার অভ্যাস না থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন লেখকেরা। বই পড়ার পাশাপাশি সুধার আর দু’টি পছন্দের শখ হল বেড়াতে যাওয়া আর সিনেমা দেখা।