যত বার মিথ্যা বলবে, তত বাড়তে থাকবে নাক। ‘পিনাকিও’র গল্প বহু যুগ ধরে প্রচলিত। ছবি: সংগৃহীত
মিথ্যা আমরা সকলেই কমবেশি বলে থাকি। কিছু কিছু মিথ্যা অন্যের কোনও রকম ক্ষতি করে না। কোনও পরিস্থিতি এড়াতে মিথ্যা বলতে হয়। রোজকার জীবনে টুকটাক মিথ্যা বলতে হয় নানা কারণে। কেউ কেউ আবার অকারণেও অনেক সময় মিথ্যা বলে থাকেন। হাতেগোনা কিছু মানুষ রয়েছেন, যাঁদের মিথ্যা বলাটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। নিত্য জীবনের সঙ্গী করেই চলেন তাঁরা মিথ্যাকে। কিন্তু আমাদের সকলের মধ্যে এক ধরনের স্বাভাবিক প্রবণতা থাকে, অন্যদেন মিথ্যা ধরার। কেউ আপনাকে মিথ্যা বলছেন কি না, তা বুঝতে পারলে এক অন্য রকম তৃপ্তি অনুভব করে থাকেন সকলে। তবে সেটা খুব একটা সহজ নয়।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক একটি সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। সেখানে কিছু লক্ষণ বলা হয়েছে, যা আমরা অনেক সময়ে উপেক্ষা করে থাকি। একটু মন দিয়ে এই লক্ষণগুলি যদি কেউ ধরতে পারেন, তা হলে কোনও মিথ্যা ধরে ফেলা খুব কঠিন হবে না। সেগুলি কী, জেনে নিন।
১। এলোমেলো কথা
অনেক সময়ে কোনও বিষয়ে কেউ মিথ্যা বললে, খুব বেশি খুঁটিনাটি নিয়ে কথা বলতে চান না। কোনও বিষয়ে কথা বলার সময়ে অনেক এলোমেলো কথা চলে আসে তাঁর বিবৃতিতে। সেই থেকেই বোঝা যায়, কেউ কোনও কথা গোপন করছেন।
২। বিবৃতি বদলে যায়
বার বার কোনও প্রসঙ্গ উঠলে কেউ যদি এক এক বার এক এক ধরনের কথা বলেন, তা হলেও বুঝতে হবে, তিনি সত্য বলছেন না। সময়ের সঙ্গে খানিক স্মৃতিভ্রম সকলেরই হতে পারে। কিন্তু সব জরুরি খুঁটিনাটি যদি বদলে যায়, তা হলেই বোঝা যাবে কিছু একটা গন্ডগোল রয়েছে।
৩। অত্যধিক চিন্তাভাবনা
আমরা যখন কোনও কথা বলি, স্বাভাবিক একটি গতি থাকে কথা বলার। তাতে হঠাৎ বাধা পড়লে খানিক গতিরোধ হতে পারে। কিন্তু শুরু থেকেই যদি কেউ অনেক ভেবে থেমে থেমে কথা বলেন, তা হলে সন্দেহ করতে পারেন।
৪। বার বার একই শব্দ প্রয়োগ
কোনও কথা বলার সময়ে কেউ যদি একই শব্দ বা শব্দবন্ধ ব্যবহার করেন, তা হলে বুঝতে হবে, তিনি চট করে কথা সাজাতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রে তাঁর মিথ্যা বলার সম্ভাবনা থাকে।
বেশির ভাগ মানুষই মিথ্যা বলার সময়ে খানিক অস্বস্তিতে পড়েন। ছবি: সংগৃহীত
৫। নড়াচড়া না করা
মিথ্যা বলা খুব সহজ কাজ নয়। একমাত্র প্যাথোলজিক্যালি যাঁরা মিথ্যা বলেন, তাঁরা বাদে, বাকিরা কোনও মিথ্যা বলায় সময়ে খুব সন্তর্পণে বলার চেষ্টা করেন। ফলে অনেক সময়ে তাঁদের শরীরী ভাষা বড্ড বেশি স্থির হয়ে যায়। যদি এই ধরনের ব্যবহার কখনও লক্ষ্য করেন, তা হলে সন্দেহ করতেই পারেন।
৬। গলার সুর বদলে যাওয়া
যাঁরা মিথ্যা বলতে খুব একটা স্বচ্ছন্দ নন, তাঁরা মিথ্যা বলার সময়ে অস্বস্তিতে পড়েন। তাই অনেক ক্ষেত্রে কথা বলার সময়ে গলার সুর একদম অন্য রকম হয়ে যায়। মিথ্যা ধরে ফেলার এটি সহজতম উপায়।
৭। অহেতুক খুঁটিনাটি
যাঁরা মিথ্যা বলায় পারদর্শী, তাঁরা অনেক সময়ে আপ্রাণ চেষ্টা করেন, যাতে তাঁদের মিথ্যা ধরা না পড়ে। ফলে কোনও স্বাভাবিক বিষয়ে প্রশ্ন করলেও নানা রকম খুঁটিনাটি বলতে থাকেন। যেগুলি শুনেই মনে হতে পারে, এত বিষদে কে শুনতে চেয়েছেন। তবে এই লক্ষণের উপর ভিত্তি করে কাউকে সন্দেহ করার আগে একটু সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কারণ অনেকে এমনিতেই বেশি কথা বলেন। তাঁদের এই এক দলে ফেলা যাবে না।