নেটমাধ্যম কৈশোরদের জন্য যথেষ্ট বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
সন্তানের নেটমাধ্যমে আসক্তি নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। আবার ইন্টারনেটের যুগে নেটদুনিয়া থেকে শিশুদের দূরে রাখাও কার্যত অসম্ভব। কিন্তু সঠিক ব্যবহারে নেটমাধ্যমই হয়ে উঠতে পারে শাপে বর। দেখে নেওয়া যাক কী ভাবে সম্ভব এই অসাধ্য সাধন।
নাগরিক জীবনে কর্মব্যস্ততা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যক্তি জীবনের একাকিত্ব। ব্যতিক্রম নয় শিশুরাও। খেলার মাঠে বন্ধু তৈরির সুযোগ থেকে ব়়ঞ্চিত হতে হচ্ছে অনেককেই। ফলে চাপ বাড়ছে শিশু মনে, সমস্যা হচ্ছে মানুষের সঙ্গে মিশতে। এখানেই মুশকিল আসান হতে পারে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম কিংবা টুইটারের মতো মাধ্যম।
শৈশব থেকে কৈশোরে পা দেওয়ার সময় বাড়ির চার দেওয়ালের বাইরে নানা বিষয়ে কৌতূহল তৈরি হওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক। আর এই কৌতূহল নিরসনে নেটমাধ্যমের জুড়ি মেলা ভার। বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে সচেতনতাই হোক বা কৃষক আন্দোলনের মতো সামাজিক আন্দোলন; সব কিছু নিয়েই প্রাথমিক ধারণা মিলতে পারে নেটমাধ্যমের নানা শিক্ষামূলক ভি়ডিওতে।
সন্তানদের নেটমাধ্যমে আসক্তি নিয়ে নিত্য উদ্বেগ লেগে থাকে বাবা-মায়েদের। ছবি: সংগৃহীত
বয়ঃসন্ধির কালে মানসিক স্বাস্থ্য, যৌনতা, লিঙ্গপরিচয়ের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে কথা বলতে সংকোচ বোধ করে অনেকেই। নেটমাধ্যমে এই বিষয়গুলি নিয়ে দেখা যায় নানা সচেতনতামূলক প্রচার, যা বিষয়গুলি নিয়ে সাবলীল হতে সাহায্য করতে পারে আপনার সন্তানকে।
কৌশোরের সৃজনশীলতা প্রকাশের অদ্বিতীয় মাধ্যম হতে পারে নেটদুনিয়া। নিজের আঁকা ছবি, সদ্য শেখা আবৃত্তি কিংবা ভালবেসে গেয়ে ওঠা গানে কয়েকটি প্রশংসা কৌশোর মনে সঞ্চার করতে পারে অনাবিল আনন্দ। হয়তো চর্চার অভাবে হারিয়ে যেতে বসত যে প্রতিভা, নেটিজেনদের উৎসাহে তা-ই চমকে দিতে পারে সকলকে।
তবে নেটমাধ্যমে এই সব কিছুর পাশাপাশি রয়েছে ঠকানো বা অনলাইন হেনস্থার মতো নানা বিপদ। তাই নেটমাধ্যমে সন্তানদের আনাগোনা নিয়ে কিছুতেই চিন্তামুক্ত হতে পারেন না অভিভাবকরা। সে ক্ষেত্রে উপায় হতে পারে ‘প্যারেন্টাল লক’এর মতো ব্যবস্থা। তা ছাড়া শিশুদের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি অ্যাপও এনেছে একাধিক সংস্থা। তবে অভিভাবকদের অতিরিক্ত নজরদারি যেন শিশু মনে ভয় বা অবিশ্বাসের কারণ না হয়ে ওঠে সতর্ক থাকা দরকার সেটা নিয়েও। সব মিলিয়ে নেটমাধ্যম নিয়ে সন্তানের সঙ্গে অভিভাবকদের স্বাস্থ্যকর আলাপচারিতা কিন্তু ভীষণ জরুরী।