সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবেন কোন উপায়ে? ছবি: ফ্রিপিক
আত্মবিশ্বাসী ব্যাক্তি জীবনে সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় মানসিক দৃঢ়তা ধারণ করেন। তাঁরা জীবনে ঝুঁকি নিতে, সমস্ত পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে ভয় পান না এবং লক্ষ্যপূরণে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকেন।
কী ভাবে সন্তানের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা সম্ভব?
১) কঠোর সমালোচনা করা উচিত নয়: সন্তানকে কোনও ভুলের জন্য খুব কঠিন ভাবে সমালোচনা করা উচিত না। এতে তারা ভয় পেতে শিখবে। বরং সন্তানকে বোঝানো প্রয়োজন যে সমস্ত ত্রুটিই শুধরে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব এবং সকল ত্রুটি সত্ত্বেও, বাবা ও মায়ের ভালবাসা ও সমর্থন সর্বদা তার সঙ্গে আছে।
২) সন্তানকে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া প্রয়োজন: কোনও ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও তাকে ভুল ধরিয়ে দিন এবং সমর্থন করুন, যাতে সে ভুল বুঝতে পেরে, ঠিক সিদ্ধান্ত বেছে নেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করতে পারে।
৩) সন্তানের জীবন অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা উচিত নয়: বাবা-মা সন্তানের জীবনকে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ করলে, সন্তান কোনও দিনই আত্মনির্ভর হতে পারবে না এবং নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে শিখবে না।
সন্তানের সঙ্গে সময় কাটান। ছবি: সংগৃহীত
৪) সন্তনের প্রতিভা ও সাফল্যের প্রশংসা করা: সন্তানের সাফল্যে নিরপেক্ষ হয়ে থাকা তাদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারে। তাদের বোঝানো প্রয়োজন যে তাদের সাফল্যে বাবা-মা গর্বিত। এটি তাকে আত্মবিশ্বাসী হতে এবং জীবনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
৫) স্বাধীনতা ও দায়িত্ব প্রদান করা: তাদের বয়স অনুযায়ী স্বাধীনতা দেওয়া প্রয়োজন। সন্তানের জীবনকে কুক্ষিগত করে রাখলে তারা ভবিষ্যতে বৃহত্তর পরিবেশে মিশতে শেখে না এবং কর্মজীবনে সমস্যা ভোগ করে।
৬) ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি: ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সন্তানকে বড় করায় খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভবিষ্যৎ নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে সন্তান ভীত হতে শেখে। সন্তানের সম্ভাবনায় বিশ্বাস রাখা প্রয়োজন এবং তাদের সাফল্যের প্রতি ইতিবাচক প্রত্যাশা রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
৭) ভাল উদাহরণ হওয়ার চেষ্টা করা প্রয়োজন: সন্তান বাবা-মায়ের কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি শেখে। তাই আত্মবিশ্বাস, সাহস এবং ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করা খুবই প্রয়োজন।
৮) প্রয়োজনে পরামর্শ প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ: নিজের জীবন, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা থেকে সন্তানকে দিকনির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু কিছুই চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।
৯) তুলনা করা উচিত নয়: প্রতিটি শিশু অনন্য। তাদের অন্যদের সঙ্গে তুলনা করা কখনওই উচিত না, বরং তাদের নিজস্ব উন্নতিতে মনোযোগ দিতে উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন।
১০) ধৈর্য: আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে সময় লাগে। ধৈর্য ধরা প্রয়োজন এবং সন্তানের প্রতিভা এবং সম্ভাবনার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব থাকা প্রয়োজন।
সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানো গুরুত্বপূর্ণ। তাদের মনের কথা শোনা দরকার। তাদের আগ্রহ ও শখকে সমর্থন করা প্রয়োজন। সন্তানের জন্য একটি নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ তৈরি করলে সে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে এবং নিজের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি করতে সমর্থ হবে।