Best Backpack For Cat

বিড়াল নিয়ে ঘোরার জন্যও আছে আলাদা ব্যাকপ্যাক! পোষ্যের জন্য কোনটি কিনবেন?

ব্যাকপ্যাকে পোষ্য বিড়ালকে ভরে দিব্যি এদিক-ওদিক করা যায়। এর সুবিধা কী? রকমারি ব্যাকপ্যাকের মতো উপযোগী কোনটি?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:১১
Share:

বিড়ালেরও ব্যাকপ্যাক হয়। কোন কাজে লাগে এটি? ছবি:ফ্রিপিক।

সমাজমাধ্যমের পাতায় স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ করেই জিনিসটি চোখে পড়েছিল তিথির। মজবুত একটি পিঠের ব্যাগ। সামনে স্বচ্ছ ফাইবার জাতীয় কিছু। তাতে বড় বড় ছিদ্র। এক মহিলা ব্যাগের চেন খুলে দিলেন । ছোট্ট মার্জার তার মধ্যে গুটি গুটি পায়ে ঢুকে পড়ল। চেন টেনে পিঠে ব্যাগ নিয়ে দিব্যি বেরিয়ে পড়লেন তিনি।

Advertisement

এমন জিনিসও পাওয়া যায়! দেখে অবাক হয়েছিলেন তিথি। তার পর খোঁজ করে জেনেছেন, জিনিসটি বিড়ালকে নিয়ে ঘোরাঘুরির জন্য একটি ব্যাকপ্যাক। পোষ্যকে নিয়ে যাওয়ার জন্য নানা ধরনের পিঠের ব্যাগ রয়েছে। এক একটির ভূমিকা, কাজ এক এক রকম। কাজের জিনিস তো পাওয়া গেল, কিন্তু বেছে নেবেন কোনটি?

এমন ব্যাকপ্যাকও বেছে নিতে পারেন পোষ্যের জন্য।

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিলেন তিথিও। মাস ছয়েক ধরে বিড়াল পুষছেন তিনি। সমস্যা হয়, তাকে বাড়িতে একলা রেখে কাজে কোথাও গেলেই। এক দিন জানলা গলে বাইরে বেরিয়ে এমন জায়গায় চলে গিয়েছিল, তাকে খুঁজে পেতে হয়রান হতে হয়। বিড়ালের অভিভাবকেরা হয়তো কম-বেশি এমন সমস্যার সম্মুখীন। তখন থেকেই তিথি বাইরে কোথাও গেলে আদরের পোষ্যকে হয় কোলে নয়তো প্লাস্টিকের বাক্সে ভরে নিয়ে যান।

Advertisement

সে দিক থেকে দেখতে গেলে এই ধরনের ব্যাকপ্যাক যথেষ্ট উপযোগী। এর প্রথম সুবিধাই হল, পিঠে নেওয়া যায়। ফলে দুই খালি থাকে, যে কোনও কাজই করা যায়।

আর কী উপযোগিতা?

১. পোষ্যকে গলায় কলার এবং ফিতে লাগিয়ে হাঁটিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা নিয়ে যাওয়াই যায়। কিন্তু এতে তার পায়ে নোংরা লেগে যেতে পারে, পথে নোংরা বা কিছু পড়ে থাকলে পোষ্য তা খেয়ে ফেলতে পারে।

২. কাছাকাছি কোথাও যেতে হলে টুকটাকি বাজার-দোকান করার জন্য হলেও চট করে তাকে ব্যাগে ভরে নিয়ে যাওয়া যায়। স্বচ্ছ আবরণ এবং বড় ছিদ্র থাকায় সে প্রয়োজন মতো মুখ বার করতে পারে, সব কিছু দেখতেও পায়।

৩. কোলে করে তাকে নিয়ে যেতে হলে কোনও সময় ছটফট করে নেমে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সেই ভয় থাকে না।

৪. ভ্রমণের সময় অনেকে পোষ্যকে নিয়ে যান। সে ক্ষেত্রে বিড়ালকে ব্যাকপ্যাকে ভরে দিব্যি এ দিক-ও দিক ঘোরাও যায়।

কী কী ধরনের ব্যাকপ্যাক পাওয়া যায়?

ছোট, বড়, লম্বা, খাটো, প্যাড দেওয়া— বিভিন্ন মডেল রয়েছে। বিড়ালকে নিয়ে হাইকিংয়ের জন্যেও ব্যাকপ্যাক পাওয়া যায়। এগুলি একটু বড়, জায়গা বেশি। ব্যাগও মজবুত হয়। অন্য দিকে, কাছাকাছি যাতায়াতের জন্য ছোট আকারের ব্যাকপ্যাকও মেলে।

এই ধরনের ব্যাকপ্যাক পিঠে নেওয়া যায় প্রয়োজনে পিছনের অংশ বাড়িয়ে কোথাও রাখাও যায়। ছবি: সংগৃহীত।

কোনও ব্যাকপ্যাকের উপরে দিকে ঢাকনা মতো থাকে, যেটি খুলে ইচ্ছামতো গুটিয়ে দেওয়া যায়। সেই জায়গা দিয়ে বিড়াল মাথা বার করে থাকতে পারে।

আবার এমন এমন ব্যাকপ্যাক পাওয়া যায়, যেটি মুড়ে নিলে সহজে যে কোনও জায়গায় রাখা যায়। সেটি যেমন পিঠে নেওয়া যায়, তেমনি পিঠের চেনে থাকে অতিরিক্ত একটি অংশ ভাঁজ করা। ব্যাগ নিয়ে কোথাও বিশ্রাম করলে ওই ভাঁজ করা অংশটি খুলে দিলে জিনিসটি একটি ছিদ্রযুক্ত বাক্সের মতো হয়ে যায়। ফলে পোষ্য সেই জায়গাটিও ব্যবহার করতে পারে।

এ ছাড়া স্বচ্ছ ফাইবারের মতো ব্যাকপ্যাকও পাওয়া যায়। এমন ব্যাকপ্যাকও হয় যেটি ট্রলি হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন, আবার কাঁধেও নেওয়া যায়।

ব্যাকপ্যাক কী দেখে বাছবেন?

১. বিড়ালের আকার, ওজন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কী ভাবে তা ব্যবহার করবেন সেটিও ভেবে নেওয়া দরকার। হাইকিংয়ের পরিকল্পনা থাকলে, ব্যাকপ্যাক হতে হবে মজবুত, জায়গা বেশি থাকা দরকার। আবার দৈনন্দিন বা ঘন ঘন এ দিক-ও দিক যাতায়াতে বিড়ালের ব্যাকপ্যাক কিনতে হলে সেটি তুলনায় ছোট, হালকা হলে সুবিধা।

২. বিভিন্ন ধরনের উপকরণে তৈরি ব্যাকপ্যাক পাওয়া যায়। তাতে যথেষ্ট ছিদ্র রয়েছে কি না, বিড়াল যেখানে বসবে সেই প্যাডিং কতটা আরামদায়ক, ফিতে মোটা-প্যাডেড কি না, দেখে নেওয়া খুব জরুরি। কোনও ব্যাকপ্যাকের সঙ্গে পোষ্যের ক্যারিয়ার যোগ করা থাকে। সেগুলিও বেছে নিতে পারেন।

৩. সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও সুবিধাজনক পোষ্যের ব্যাকপ্যাক তৈরি হচ্ছে। এতে শুধু পোষ্যকে রাখার জায়গাই থাকে না, জরুরি জিনিসের জন্য ছোট ছোট পকেটও থাকে। কেনার আগে ব্যাকপ্যাকের ফিচার বা বৈশিষ্ট্যগুলি বুঝে নিন।

কী ভাবে পোষ্যকে অভ্যাস করাবেন?

শুরুতেই চেন খুলে দিলে পোষ্য ব্যাগে ঢুকে যাবে, সহজেই ঘুরতে বেরোবে এমনটা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাকে অভ্যাস করাতে হবে।

১. প্রথমে পোষ্যকে ব্যাগটি শুঁকতে দিন। তার পর ব্যাগে ভরুন।

২. শুরুতেই লম্বা পথ নয়। ব্যাগের ভিতরে তাকে ধাতস্থ হতে দিতে হবে।

৩. এক দিন ভাল ভাবে ঘুরে এলে তাকে পুরস্কার দিতে পারেন।

৪. শুরুটা স্বল্প সময়ের জন্য করতে হবে। বিড়ালের ভিতরে কোনও কষ্ট হচ্ছে কি না, প্রথম দিকে বার বার দেখা দরকার। সে যদি থাকতে না চায়, তা হলে থামতে হবে, তাকে বিশ্রাম দিতে হবে।

তবে পোষ্যকে ব্যাগে নিয়ে ঠিক কত ক্ষণ ঘোরা যাবে, কোন আচরণ দেখলে সতর্ক হতে হবে এ বিষয়ে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়াই ভাল। কারণ, সব বিড়াল এক রকম হয় না। কেউ যদি বেশি ভয় পায়, তা হলে জোর না করাই উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement