Dating

ধরি মাছ না ছুঁই পানি? কেন বাড়ছে ‘আধা অন্তরঙ্গতা’ বা ‘হাফ-মাস্টিং’-এর প্রবণতা

সম্পর্কের জটিল টানাপড়েন এড়াতে সম্প্রতি বেশ কিছু মানুষ ঝুঁকছেন ‘হাফ-মাস্টিং’-এর দিকে। নতুন এই চল কী? কেমন তার গতিপ্রকৃতি? খোলাখুলি মুখ খুললেন তরুণ-তরুণীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২২ ১৯:০৫
Share:

সম্প্রতি বেশ কিছু মানুষ ‘হাফ-মাস্টিং’ বলে একটি পন্থা নিয়েছেন। ছবি: প্রতীকী

মনের আদানপ্রদান হলে কাছাকাছি আসাই দস্তুর। কিন্তু কাছাকাছি আসায় প্রশ্নের মুখে পড়বে না তো স্বকীয়তা? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খায় অনেকের মনেই। কেউ আবার সম্পর্কে থেকেও গুমরে মরেন। প্রিয়জনকে কষ্ট দিতে চান না, অথচ সর্ব ক্ষণ যে তাঁর সঙ্গ পেতে ইচ্ছা করছে না, এমনও নয়। তাই এ দিক-ও দিক যেতে চাইলেও রোজ ফিরতে হয় তাঁর কাছেই। এই সব টানাপড়েন থেকে বাঁচতেই সম্প্রতি বেশ কিছু মানুষ মাঝামাঝি একটি পন্থা নিয়েছেন। বিষয়টিকে বলা হচ্ছে ‘হাফ-মাস্টিং’।

Advertisement

কী এই ‘হাফ-মাস্টিং’? পতাকার ক্ষেত্রে অনেক নির্দেশ দেওয়া হয়। এ-ও তেমনই এক চলতি পরিভাষা। “পতাকা পুরোপুরি উত্তোলন করা যেমন বিজয়ের প্রতীক ধরা হয়, তেমনই এই অর্ধেক তোলা পতাকার মাধ্যমে বোঝানো হয় কেউ আপনাকে পছন্দ করেন, কিন্তু এখনই গোটা জীবন তাঁর সঙ্গেই থাকতে চান কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন। মানে অন্তরঙ্গতা রয়েছে কিন্তু একে অন্যের মধ্যে বিলীন হওয়া নেই। অর্ধেক অন্তরঙ্গ একটি অবস্থার মতো।” বলছিলেন তথ্যপ্রযুক্তিকর্মী তৃণা সেনগুপ্ত।

শুদ্ধদীপ সরকার একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। বেঙ্গালুরু আর কলকাতা যাতায়াত করতে হয় মাসে বেশ কয়েক বার। সম্প্রতি একটি ডেটিং অ্যাপে কলকাতার এক তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয়। পেশায় শিক্ষিকা ওই তরুণী কিছু দিন পরই বিদেশে পড়াশোনা করতে যেতে চান। সব মিলিয়ে পরস্পরকে পছন্দ করলেও এখনও নিজেদের নিয়ে স্থায়ী কিছু ভাবেননি তাঁরা। শুদ্ধদীপ বলেন, “আসলে বিষয়টা কিছুটা তারে ধরি ধরি মনে করি, ধরতে গেলে আর পাবে না-র মতো। আমি আর প্রেমিকা দু’জনেই পরস্পরকে চাই। কিন্তু একে অন্যকে ছাড়াও আরও অনেক কিছু রয়েছে আমাদের ইচ্ছার তালিকায়। তাই সম্পর্কে থাকার পরেও আমরা বিষয়টিকে একটি মধ্যবর্তী স্তরে রেখেছি।” তাঁর কথায়, দু’জন এখনই দু’জনকে ছাড়তে চান না। আবার এখনই সম্পূর্ণ একে অপরের মধ্যে ডুবেও যেতে চান না। ভবিষ্যতে যদি মনে হয়, এ বার তাঁরা তৈরি। তখন থেকে একসঙ্গে থাকবেন তাঁরা।

Advertisement

‘হাফ-মাস্টিং’ সেই জটিলতা এড়াতে সাহায্য করে? প্রতীকী ছবি

কলকাতার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অবশ্য বিষয়টি পছন্দ করেন না মোটেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২১ বছর বয়সি অর্থনীতির ছাত্রী বলেন, “এ সব অন্য জনকে ঝুলিয়ে রাখা ছাড়া কিছুই নয়। ভাল লাগলে একসঙ্গে থাকব, না থাকলে থাকব না। এতে জটিলতার কী আছে?” পেশায় সাংবাদিক রুদ্র মৈত্রের মত অবশ্য কিছুটা আলাদা। তাঁর মতে, মানুষের মন জটিল। সাদা-কালোতে ভাগ করা যায় না। অনেক সময়ে দেখা যায়, কেউ সম্পর্কে গেলেন কিন্তু কিছু দিন পরেই মতের অমিল হওয়ায় বিচ্ছেদের পথে হাঁটতে হল। কিন্তু বিচ্ছেদের পরেও পরস্পরের প্রতি টান অটুট। অথচ ফেরার পথ নেই। নতুন এই ‘হাফ-মাস্টিং’ সেই জটিলতা এড়াতে সাহায্য করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement