কোন গুণে সকলের কাছে হয়ে উঠতে পারেন গ্রহণযোগ্য ছবি: সংগৃহীত।
বন্ধু হোক বা আত্মীয়, কিংবা বেড়ানোর দল, অসংখ্য মানুষের ভিড়ে এমন কেউ থাকেন, যাঁকে ছোট থেকে বড় সকলেই পছন্দ করেন। যে কোনও আড্ডাতেই সেই মানুষটিকে খোঁজেন অন্যেরা। আবার তিনি না থাকলে, অভাব বোধটাও স্পষ্ট হয়।
হয়তো তাঁর প্রাণখোলা স্বভাব, রসবোধ কিংবা এমন কোনও গুণ আছে, যা তাঁকে সকলের প্রিয়পাত্র করে তোলে। কিন্তু শুধুই কি চরিত্রের একটা কোনও বিশেষত্বের জন্যই তিনি সকলের কাছে পছন্দের, শ্রদ্ধার হয়ে ওঠেন? নাকি তাঁর সমগ্র ব্যক্তিত্ব ও স্বভাবের জন্যই তিনি সমস্ত মহলে সমাদৃত? এক বার তলিয়ে ভাবতে পারেন। তা হলেই হয়তো খুঁজে পাবেন বন্ধু থেকে আত্মীয় মহলে মধ্যমণি হয়ে ওঠার চাবিকাঠি।
প্রতিটি মানুষের মধ্যেই নিজস্বতা থাকে। কেউ বেশি কথা বলেন, কেউ একটু কম। কেউ আবার বন্ধু মহলে বেশি বকবক করলেও অচেনা মানুষের সামনে জড়োসড়ো হয়ে যান। কোনও মানুষের সরলতা, ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গির স্বচ্ছতা দিয়েই তাঁকে চেনা যায়। জেনে নিন চরিত্রে কোন গুণ থাকলে অন্যেরা কাউকে বেশ পছন্দ করেন।
বিশ্বাস
যে মানুষকে বিশ্বাস করা যায় বন্ধু হোক বা আত্মীয়, তাঁর সঙ্গে কোথাও গিয়ে মনের সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। কারণ, নিশ্চিন্তে তাঁকে মনের কথা বলা যায়। ভরসা করা যায়। যে মানুষ সম্পর্কে এ বিষয়ে নিঃসন্দিহান হওয়া যায়, সকলে কিন্তু বন্ধু হিসাবে তাঁকেই পেতে চায়। তাই সকলের প্রিয় পাত্র হতে গেলে, বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে শিখুন।
অন্যকে সাহায্য করা
কিছু মানুষ থাকে যাঁরা সব সময়ে অন্যের বিপদ-আপদে ছুটে যান। পাশে থাকেন। বিপদের সময় যিনি পাশে থাকেন, তাঁকেই কিন্তু সকলে মনে রাখেন। এটা চরিত্রের একটি বিশেষ গুণ। সকলের মধ্যে থাকে না। তবে, এই মানসিকতা যে নিজের ক্ষেত্রেও তৈরি করা যায় না এমনটা নয়। মানুষের ধর্মই কিন্তু অন্যের পাশে দাঁড়ানো, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। তা হলেই কিন্তু অন্যের ভালবাসা, শ্রদ্ধা পাওয়া সম্ভব।
সমালোচনা নয়
কিছু মানুষ থাকেন, যাঁদের কাজ অন্যের হ্যাঁ-তে হ্যাঁ মেলানো আর কারও অনুপস্থিতিতে তাঁকে নিয়ে সমালোচনা করা। হয়তো তিনি আপনার সামনে আপনাকে সমর্থন করে তৃতীয় মানুষটির সমালোচনা করছেন। তিনি যে পরবর্তীকালে ওই তৃতীয় মানুষটির সামনে আপনার অনুপস্থিতিতে আপনারও সমালোচনা করবেন না, তার কোনও গ্যারান্টি নেই। এই ধরনের মানুষের প্রকৃত স্বভাব জানতে পারলে সকলেই তাঁকে এড়িয়ে চলেন। সকলের কাছে পছন্দের হয়ে উঠতে গেলে সমালোচনা, অন্যের অনুপস্থিতিতে তাঁকে নিয়ে নেতিবাচক কথা বলার অভ্যাস বদলাতে হবে।
ইতিবাচক মানসিকতা
সেই মানুষই সকলের প্রিয় হতে পারে যাঁর কথায় ‘পজিটিভিটি’ থাকে। জীবনের খারাপ সময়ে এমন বন্ধু, আত্মীয়, পরিচিত যিনি আপনাকে সমস্যা কাটিয়ে এগিয়ে চলার সাহস জোগাতে পারেন। কিছু মানুষ থাকেন যাঁরা ক্রমাগত নিজের জীবনের দুঃখ, কত কষ্টে আছেন সেই নিয়েই বলে চলেন। এই কথাগুলি অন্যপক্ষ এক বার, দু’বার মন দিয়ে শুনলেও একটা সময়ের পর বিরক্ত হবেন। তার বদলে জীবনে কোনটা পারা যায়, কী ভাবে ভাল থাকা সম্ভব তা নিয়ে কথা বলুন।
মানসিক সমর্থন
অন্যের সমস্যার কথা মন দিয়ে শোনা তাঁকে মানসিক সমর্থন জোগাতে পারাটা চরিত্রের বড় গুণ। এই ধরনের মানুষরা কিন্তু সকলের কাছে পছন্দের হয়ে ওঠেন। তার কারণ, কেউ যখন মানুষটির সঙ্গে কথা বলেন তিনি জানেন, পাল্টা সমর্থনটুকু তিনি পাবেন। তাই কোনও বন্ধু, আত্মীয় বা পরিচিত সমস্যায় থাকলে মন দিয়ে তাঁর কথাটা শুনুন। তাঁকে সেই মুহূর্তে পরিস্থিতির জন্য দোষারোপ না করে কী ভাবে সমস্যার সমাধান হতে পারে বোঝান।
রসিকতা
কিছু মানুষের মধ্যে রসবোধ থাকে। জীবনের সাধারণ পরিস্থিতি থেকেই তিনি এমন কথা বা উদাহরণ তুলে ধরেন যা শুনে অন্য মানুষ আনন্দ পান। এই গুণ সকলের মধ্যে থাকে না। থাকলে নিঃসন্দেহে তিনি অনেকের কাছে প্রিয়পাত্র হয়ে উঠতে পারেন।
কথা বলা
সাধারণত দেখা যায় ভাল করে যাঁরা কথা বলতে পারেন, তাঁরা অনেকের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন। তার মানে কিন্তু বাড়তি কথা নয়। অপ্রাসঙ্গিক কথা বললে তা কিন্তু গ্রহণযোগ্য হয় না। অনেকে যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলেন। অনেকে ভাল গান করেন, কেউ ভাল রান্না করেন। প্রত্যেকের কিছু না কিছু গুণ থাকে। সেই গুণের জন্যেই তিনি যে কোনও আড্ডায় বা আসরে প্রিয়পাত্র হয়ে উঠতে পারেন।