Holi 2025

হোলির দিনে স্কুটিতে চেপে ‘পাল্‌টু চাচার’ খোঁজে লালু-পুত্র

বছর শেষে বিহারে বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে তেজস্বীর নেতৃত্বে বিহারের বিরোধী দলগুলি যখন ঘর গোছানোর কাজ শুরু করেছে, তখন তেজপ্রতাপের একের পর এক হোলি উদ্‌যাপনের ভিডিয়ো গোটা বিরোধী শিবিরের মুখ পুড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫ ০৭:২৮
Share:
তেজপ্রতাপ যাদব।

তেজপ্রতাপ যাদব। —ফাইল চিত্র।

কখনও অস্থায়ী মঞ্চে বসে পুলিশকে তাঁর পছন্দের গানের সঙ্গে ‘ঠুমকা’ লাগাতে বলছেন তো কখনও বিনা হেলমেটে এক সঙ্গীকে নিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন চত্বরে স্কুটি চালিয়ে ঢুকে পড়ে ‘পাল্‌টু চাচা’ বলে নীতীশ কুমারকে কটাক্ষ করছেন! দিনভর এ ভাবেই হোলিতে আনন্দ করলেন তিনি!

Advertisement

তিনি বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের ছেলে তেজপ্রতাপ! যিনি একই সঙ্গে লালুর দল আরজেডি-র নেতাও! সে দলের প্রধান অবশ্য এখন তেজপ্রতাপের ভাই তেজস্বী যাদব।

বছর শেষে বিহারে বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে তেজস্বীর নেতৃত্বে বিহারের বিরোধী দলগুলি যখন ঘর গোছানোর কাজ শুরু করেছে, তখন তেজপ্রতাপের একের পর এক হোলি উদ্‌যাপনের ভিডিয়ো গোটা বিরোধী শিবিরের মুখ পুড়িয়েছে। এমন সুযোগকে কাজে লাগাতে এতটুকু সময় নষ্ট করেনি বিহারের শাসক বিজেপি-জেডিইউ জোট। এখন থেকেই বিহারের শাসক জোট বলতে শুরু করেছে, লালুর দলের জোট ক্ষমতায় এলে ফের এই জঙ্গলরাজ শুরু হয়ে যাবে।

Advertisement

শুক্রবার হোলির দিনই নিজের দেহরক্ষী পুলিশকে তেজপ্রতাপের নাচতে বলার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। সেখানে দেখা যায়, এক পুলিশকে গানের সঙ্গে নাচতে বলার ‘নির্দেশ’ দেওয়ার পাশাপাশি না নাচলে বরখাস্ত করার হুমকি দিচ্ছেন লালু-পুত্র! হুমকির মুখে কোমর দোলাতে দেখা যায় ওই পুলিশকে। সেই ভিডিয়ো ঘিরে লালু-বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার ঝড় থামার আগেই দ্বিতীয় ভিডিয়ো সামনে আসে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, এক সঙ্গীকে নিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বাসভবনের বাইরে দু’চাকায় চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তেজপ্রতাপ। কারও মাথাতেই হেলমেট নেই! ওই অবস্থায় ‘পাল্‌টু চাচা’কে হোলির শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন লালু-পুত্র! গত কয়েক বছরের একাধিক বার ডিগবাজি খেয়ে জোট বদল করায় নীতীশ কুমারকে বিরোধীরা ‘পাল্‌টু চাচা’ বলে বিদ্রুপ করেন। তেজপ্রতাপও সেই বিদ্রুপই করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর কীর্তি উল্টে নীতীশ ও তাঁর সঙ্গীদের হাতই শক্ত করেছে।

গোটা ঘটনায় অস্বস্তি লুকোতে পারেনি বিহার কংগ্রেস। লালু বা তাঁর পরিবারের তরফে প্রতিক্রিয়া মেলেনি। আরজেডি-র সঙ্গী শরিক দলের নেতারাও গোটা বিষয়টিতে বিরক্তি গোপন করেননি। তাঁদের বক্তব্য, তেজস্বী যখন বিহারে দলকে শক্ত জমির উপর দাঁড় করাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন, তখন তেজপ্রতাপ বারবার সে পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। একটি অংশের বক্তব্য, লালু-পত্নী রাবড়ি দেবীর আপত্তিতেই বহু কাণ্ডের পরেও তেজপ্রতাপের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেননি লালু বা তেজস্বী।

অপ্রত্যাশিত ভাবে হাতে অস্ত্র পেয়ে উল্লসিত শাসক শিবির। তেজপ্রতাপের দেহরক্ষী যে কনস্টেবলকে নাচতে দেখা গিয়েছে, তাঁকে রবিবারই পুলিশ লাইনে ফিরিয়ে নিয়েছে বিহার সরকার। দীপক কুমার নামের ওই পুলিশ উর্দি পরেই তেজপ্রতাপের গানের সঙ্গে কোমর দুলিয়েছিলেন। কর্তব্যে গাফিলতির কারণেই তাঁকে পুলিশ লাইনে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন পটনার এসএসপি।

পাশাপাশি বিনা হেলমেটে স্কুটি চালানো এবং স্কুটিটির দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র না থাকায় তেজপ্রতাপকে চার হাজার টাকা জরিমানা করেছে বিহার সরকার। বিরোধীরা বলছেন, লালুর ছেলে ও বিধায়ক তেজপ্রতাপকে আইন না মানার জন্য সরকারি ভাবে জরিমানা করা হয়েছে, বিষয়টি ভোটের আগে বিহারে ভিন্ন রাজনৈতিক বার্তা দেবে। রাজনৈতিক ভাবেও লালুর দলকে কোণঠাসা করতে ভিডিয়োকে অস্ত্র করেছে জেডিইউ ও বিজেপি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement