প্রতীকী ছবি।
বহু সময়েই যোনিপথের নানা সংক্রমণের কারণে গর্ভপাত হয়। সেই সংক্রমণ এমনিতে টের পাওয়া সম্ভব নয়। এত দিন যে পরীক্ষার মাধ্যমে সংক্রমণ টের পাওয়া যেত, তাতে সময় লেগে যেত আট ঘণ্টার বেশি। বিপদের আশঙ্কাও অনেক খানি বেড়ে যেত এই সময়ের মধ্যে। কিন্তু নতুন পরীক্ষা সেই আশঙ্কা কমিয়ে দিচ্ছে। মাত্র তিন মিনিটেই বোঝা যাবে সংক্রমণের আশঙ্কা আছে কি না।
হালে ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষকরা এমনই এক পরীক্ষাপদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। যোনিপথের রস পরীক্ষা করে মাত্র তিন তার ফল পাওয়া যাবে।
প্রতীকী ছবি।
গবেষক দলের প্রধান ডেভিড ম্যাকিনটায়ার জানিয়েছেন, খাদ্যনালীর মতোই যোনিপথেও নানা ধরনের জীবাণু বাসা বাঁধে। এগুলির সব ক’টিই যে শরীরের জন্য খারাপ, তা নয়। খাদ্যনালীর জীবাণুরাও যেমন খাবার হজম করতে সাহায্য করে, তেমনই যোনিপথের জীবাণুরা গর্ভের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু দু’টি ক্ষেত্রে জীবাণুর চরিত্রগত পার্থক্য রয়েছে। খাদ্যনালীতে নানা ধরনের জীবাণু থাকে। জীবাণুর বৈচিত্র যত বাড়ে, তত ভাল ভাবে খাবার হজম হয়। কিন্তু যোনিপথে ঠিক তার উল্টো। জীবাণুর বৈচিত্র যত কমে, গর্ভ তত ভাল থাকে।
ডেভিডের কথায়, যোনিপথে বেশি মাত্রায় থাকে ল্যাকটোব্যাসিলাস ক্রিসপাটাস নামের জীবাণু। এই জীবাণুই যোনিপথ-সহ গর্ভের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। কিন্তু যদি অন্য জীবাণু মাত্রা ছাড়া ভাবে বাড়তে থাকে, তা হলে ল্যাকটোব্যাসিলাস ক্রিসপাটাসের সংখ্যা কমতে থাকে। তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে। এই সংক্রমণ গর্ভ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাতে যেমন গর্ভপাতের আশঙ্কা বাড়ে, তেমনই বাড়ে নির্ধারিত সময়ের আগে সন্তানের জন্মের সম্ভাবনাও। সেটিও সদ্যজাতের প্রাণসংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
নতুন পরীক্ষাপদ্ধতি এই ঝুঁকিই অনেক কমিয়ে দেবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তিন মিনিটেই হাতে পরীক্ষার ফল চলে আসবে, তাই সংক্রমণ ঠেকাতে চিকিৎসকরাও দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।