সৃজন ভট্টাচার্য। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ। (মূল ছবি ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
চেয়েছিলেন ‘ভাইচুং ভুটিয়া’ হতে। হয়ে গেলেন সিপিএমের হোলটাইমার। ফুটবল মাঠের বদলে রাজনীতির ময়দানে নিজেকে সঁপে দিলেন। তিনি সৃজন ভট্টাচার্য। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থী। সাউথ পয়েন্ট স্কুলের এই ছাত্র মাধ্যমিকে অঙ্কেয় একশোয় একশো পেয়েও জেদ করে কলা বিভাগে ভর্তি হন। দু’চোখে তখন ইতিহাস নিয়ে পড়ার স্বপ্ন।
উচ্চ মাধ্যমিকের পর ভর্তিও হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তখন থেকেই সক্রিয় রাজনীতিতে পা রাখেন তিনি। তার পর রাজনীতির স্রোতেই ভেসে গিয়েছেন। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব সামলেছেন। যাদবপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র থেকে নির্বাচনী লড়াইয়ের ছাড়পত্র পেয়েছেন দলের তরফে। তাই জান লড়িয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কোনও ত্রুটি রাখছেন না। নির্বাচনের দিন আসন্ন। তবে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির ফাঁকেই আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে ফুরফুরে মেজাজে গল্প জুড়ে দিলেন সৃজন।
১) দিনের শুরুতে প্রথম কোন কাজটি করেন?
সৃজন: আগে যা করতাম, এখনও তা-ই করছি। প্রথমে অ্যালার্ম বন্ধ করা। তার পর দাঁত মেজে দ্রুত তৈরি হয়ে প্রচারে বেরিয়ে পড়ছি। রুটিনে বিশেষ কোনও বদল আসেনি।
২) খেতে ভালবাসেন? খাবারের প্রতি আলাদা প্রেম আছে?
সৃজন: সেটা আছে। তবে পাত পেড়ে খাওয়ার সময় থাকে না। এই যেমন প্রচারে বেরোনোর আগে ছাতুর শরবত, শসা খেয়ে নিচ্ছি। আর বেশি করে জল।
৩) কোন তিনটি জিনিস ছাড়া প্রচারে বেরোনোর কথা ভাবতেই পারেন না?
সৃজন: মোবাইল তো রাখতেই হয়। সঙ্গে অবশ্যই মোবাইলের চার্জার। আর গলায় ঝোলানো দলের লাল উত্তরীয়।
৪) কোনও সংস্কারে বিশ্বাস করেন?
সৃজন: (খানিক ক্ষণ ভেবে) না। সে ভাবে কোনও সংস্কার আমার মধ্যে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি।
৫) প্রিয় অভিনেতা?
সৃজন: বেশ বড় তালিকা। তবু নাসিরউদ্দিন শাহ, সব্যসাচী চক্রবর্তী আর জাস্টিন হফম্যান— এই তিন জনের নাম আলাদা করে বলতে পারি।
৬) সামনে পরীক্ষা। প্রস্তুতির মাঝে চাপ কাটাতে কি সিনেমা দেখা হচ্ছে?
সৃজন: সিনেমা দেখার সময় একদমই হচ্ছে না। তবে মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে তো সিনেমার রিভিউ, ট্রেলার চোখে পড়ছেই।
৭) সিনেমা দেখার মতো গান শোনারও কি সময় নেই?
সৃজন: গান শুনি। শুনছিও। তবে কোন গান শুনব, সেটা নানা বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এই যেমন সঞ্জীব চৌধুরীর ‘আমি তোমাকেই বলে দেব কিছু একা দীর্ঘ রাত’ শুনছি বার বার।
৮) রাজনীতিটাই বেছে নিলেন কেন?
সৃজন: সুদীপ্ত গুপ্তের যে দিন মৃত্যু হয়, আমি তখন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সে রাতেই ঠিক করে নিয়েছিলাম রাজনীতিটা আমার গন্তব্য হবে।
৯) তার আগে নিজেকে কোথায় দেখতে চাইতেন?
সৃজন: ভেবেছিলাম কলেজে পড়াব। তারও আগে ফেলুদা পড়ে গোয়েন্দা হওয়ার কথা ভাবতাম। ফুটবলার হওয়ার পরিকল্পনাও ছিল। তবে বড় হওয়ার পর রাজনীতি ছাড়া অন্য কিছু আর ভাবিনি।
গ্রাফিক: সনৎ সিংহ। (মূল ছবি ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
১০) রাজনীতিতে আসা কাকে দেখে?
সৃজন: অনেক নাম আছে। তবু আলাদা করে বিমান বসুর কথা বলব। কারণ বিমানদার জীবনযাপন, তাঁর কর্মকাণ্ড কমিউনিস্ট রাজনীতি করার ক্ষেত্রে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে তো বটেই।
১১) ভয় শব্দটি আপনার জীবনের সঙ্গে কী ভাবে জড়িয়ে?
সৃজন: কিছু কিছু বিষয়ে ভয় তো পাই অল্পসল্প। অন্ধকারে বেশ ভয় পাই। গা ছমছম করে। সেটা অবশ্য ছোটবেলায় প্রচুর ভূতের গল্প পড়ার ফল।
১২) সমাজমাধ্যমে অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের কাউকে ফলো করেন?
সৃজন: রাহুল গান্ধী। গত কয়েক বছরে তিনি যে ভাবে এগিয়ে চলেছেন, সেটা দেখে ভাল লাগে।
১৩) অন্য কোন নেতা-নেত্রীর সাজপোশাক আলাদা করে নজর কাড়ে?
সৃজন: সকলের আলাদা আলাদা স্টাইল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক রকম, বিমান বসু কিংবা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আবার অন্য রকম। তবে তাঁরা কী পরছেন, সেটার চেয়েও, কী বলছেন সেটা বেশি গুরুত্ব পায়।
১৪) প্রচারের ফাঁকে নিজের জন্য আলাদা কোনও সময় পাচ্ছেন?
সৃজন: খুব কম। তবে যেটুকু পাচ্ছি, ঘুমিয়ে পড়ছি। সারা দিনের ঘোরাঘুরিতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। বাড়িতেও সময় দিতে হচ্ছে।
১৫) আর স্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন?
সৃজন: কম। যাদবপুরে আমার বৃহত্তর পরিবারের সঙ্গেই সিংহভাগ সময় কাটছে। তবে তা নিয়ে উল্টো দিকের মানুষটার কোনও অভিযোগ নেই। আমাদের বহু দিনের সম্পর্ক। তিনি আমার কাজের পরিসরটা বোঝেন।
১৬) বেড়াতে যেতে ভালবাসেন?
সৃজন: ভীষণ! পাহাড়ে ট্রেক করতে খুব পছন্দ করি। চেষ্টা করি প্রতি বছর এক বার করে পাহাড়ে যাওয়ার।