শৌচালয় থেকে যে কোনও ধরনের সংক্রমণই বেশি ছড়ায়। ছবি: সংগৃহীত
একে ভাল ভাবে বাতাস চলাচল করতে পারে না, তার উপর ঘনঘন মানুষের যাতায়াত, আর প্রতি বার জল ঢালার পর বাতাসে জলকণার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া— সব মিলিয়ে সাধারণের ব্যবহার করার শৌচালয়গুলি জীবাণুর আঁতুড় ঘর। আর এখান থেকেই করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা সবেচেয়ে বেশি। এমনই দাবি ভারতীয় গবেষকের।
আমেরিকার ফ্লোরিডা আটলান্টিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সিদ্ধার্থ বর্মা হালে কাজ করেছেন আমেরিকার বেশি কিছু সাধারণের ব্যবহার যোগ্য শৌচালয় নিয়ে। আর সেখান থেকেই উঠে এসেছে এই তথ্য। দেখা গিয়েছে পরিবেশের সুবিধা পায় বলেই শৌচালয়গুলির ভিতরে জাীবাণুদের বাড়বাড়ন্ত সবচেয়ে বেশি। বোতাম টিপে জল ঢালা বা ফ্লাশ করার সময়ে ভাসমান জলকণার পরিমাণ ব্যাপক হারে বেড়ে যায় শৌচালয়গুলির ভিতরে। আর সেই জলকণাকে আশ্রয় করে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাসের মতো জীবাণু।
সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, ৩ ঘণ্টা ধরে প্রায় ১০০ বার বোতাম টিপে জল ঢালার সময়ে শৌচালয়গুলির বাতাস তাঁরা পরীক্ষা করেছেন। দেখা গিয়েছে, ফ্লাশ করার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, জীবাণুরা প্রায় ৫ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উঠে গিয়ে সেখানে ২০ সেকেন্ড ধরে ভেসে থাকতে পেরেছে। এই তথ্য থেকে অনেকের দাবি, ভারতের মতো দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পিছনে এই ধরনের সাধারণের ব্যবহার করা শৌচালয়গুলির বড় ভূমিকা রয়েছে।
‘ফিজিক্স অব ফ্লুইড’ নামক জার্নালে প্রকাশি হওয়া এই গবেষণাপত্রে সিদ্ধার্থ দাবি করেছেন, সাধারণ শৌচালয়ের মতোই যে সব শৌচালয়ে শুধুমাত্র পুরুষদের মূত্রত্যাগের জায়গা থাকে, সেগুলির বাতাসেও ৩ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাপের জলকণা ভেসে বেড়ায়। এগুলি আকারে এতটাই ছোট, যে এরা সহজেই বহু ক্ষণ ভেসে থাকতে পারে। এবং এর ফলে ইবোলা থেকে করোনাভাইরাস— সব ধরনের জীবাণুরই ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা অনেকটা বেড়ে যায়।
পশ্চিমি ধাঁচের শৌচালয়গুলি ব্যবহার করার পর ঢাকনা বন্ধ করে বোতাম টিপে জল ঢাললে বাতাসে ভাসমান জলকণার পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে কম বাড়ে। ফলে জীবাণুও কম ছড়ায়। তবে সেটাও যে খুব নিরাপদ তাও নয়, এমনটাই বলছে এই গবেষণাপত্র।
শৌচালয়গুলিতে বাতাস চলাচলের মাত্রা বাড়িয়ে সংক্রমণের হার কমানো সম্ভব। এমন কথা বলেছেন সিদ্ধার্থ।