Anuttama Bandyopadhyay

পড়ার এত বিষয় থাকতে মনোবিদ্যা কেন বেছে নিচ্ছে তরুণ প্রজন্ম? আলোচনায় মনোবিদ

মন ভাল রাখার বিশেষজ্ঞেরা মনোবিদ্যা নিয়ে কী ভাবেন, তাঁদের আগামীর গতিপথই বা কেমন, তাই নিয়েই আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক এবং ইউটিউব পেজে আলোচনায় বসেছিলেন মনোবিদ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৩২
Share:

আলোচনায় মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

সকাল থেকে অনেক ক্ষণ কিছু না খেয়ে, খালি পেটে থাকলে শরীর খারাপ হতে পারে। নিয়মিত এই অভ্যাসে যে শারীরিক নানা বিপত্তি হতে পারে, সে তো সকলেই জানেন। কিন্তু শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও যে খারাপ হতে পারে, সেই ধারণা চট করে সাধারণ মানুষের মাথায় আসে না। আবার মনের অসুখ হয়েছে বললেই অনেকেই তা ‘মাথার ব্যামো’ বলে ধরে নেন। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যাতে আরও বেশি করে সচেতনতা ছড়িয়ে পড়ে তার জন্যই বিশ্বজুড়ে ১০ অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস।

Advertisement

সেই উপলক্ষে ‘লোকে কী বলবে সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ সপ্তাহের বিষয় ‘বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস’। এ বারের থিম ‘মানসিক স্বাস্থ্য সার্বজনীন অধিকার’। এই অনুষ্ঠানে মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন একঝাঁক তরুণ অতিথি। তাঁদের প্রত্যেকেই মনস্তত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করছেন বা কাজ করার ইচ্ছে রাখেন। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তাঁদের ধারণা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বা কাজ করার গতিপথ কেমন, সেই বিষয়টিও উঠে আসে আলোচনায়। আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক এবং ইউটিউব পেজে ছয় তরুণ মনোবিদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন অনুত্তমা।

প্রতি পর্বের আগেই অনুত্তমার কাছে প্রশ্ন পাঠানো যায়। তবে এই পর্বে ব্যতিক্রম ঘটেছে। অতিথিদের জীবনে ঘটা নানা ঘটনার মধ্যে থেকেই উঠে এসেছে নানা রকম প্রশ্ন। মনোবিদ্যা নিয়ে সদ্য স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন অনুষ্কা। তিনি বলেন, “আমি বহরমপুরের মেয়ে। পাঁচ বছর আগেও মনোবিদ্যা বিষয়টি যে কী, তা কেউ জানতেন না। এই বিষয় নিয়ে যে পড়াশোনা করা যায়, সে ধারণাই ছিল না কারও। আমার পরিবারের একটি আত্মহননের ঘটনা আমাকে নাড়িয়ে দেয়। হঠাৎ করে কেন এক জন মানুষ নিজেকে শেষ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেন, সেই বিষয়টি আমাকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। আমার স্কুলের জীববিদ্যার শিক্ষক আমাকে প্রথম বুঝিয়েছিলেন যে, এই বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করা যায়। সেই থেকেই শুরু।” অনুষ্কার মতো অনেকেই জীবনে কোন না কোনও পর্যায়ে ধাক্কা খেয়ে, ব্যক্তিগত ক্ষত থেকে এই বিষয়টির ব্যাপারে উৎসাহিত হন। মানুষকে সচেতন করতেই এগিয়ে আসা, তার পর নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা— সব মিলিয়ে মনোবিদ্যার প্রতি কৌতূহল তৈরি হওয়া।

Advertisement

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়েও কি বেগ পেতে হয়? অতিথিদের মধ্যে থেকেই এক জন জানালেন, এই বিষয়ে পড়তে চাওয়াতে উল্টো দিক থেকে মারাত্মক ভাবে না বলার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হলেও, খুব যে এগিয়ে দেওয়া হয়েছে, এমনটাও নয়। এই রোগ সমাজের সকল স্তরেই রয়েছে। কোথাও কম, কোথাও বেশি। কিছু আগেও সাধারণ মানুষের কাছে ‘মেন্টাল হেল্‌থ’ বা ‘মেন্টাল থেরাপি’ মানেই পাগলের চিকিৎসা। তবে পরিবর্তন যে একেবারেই যে আসেনি, তা নয়। অনেকেই বুঝতে পারছেন, তাঁর থেরাপির প্রয়োজন। কিন্তু সাহস করে গিয়ে উঠতে পারছেন কি? না কি সকালবেলা উঠে প্রাণায়াম করলেই মন শান্ত হবে, এই নিদান দিয়ে মনোবিদের কাছে যাওয়ার দিন পিছিয়ে দিচ্ছি। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে, লোক সমাজে উন্নত মানসিকতার পরিচয় দিতে গিয়ে হয়তো মেনে নিচ্ছি মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা করার প্রয়োজন রয়েছে। মনে হচ্ছে আমরা এই বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন হয়েছি। তবে সেই সচেতনতা কি আদৌ অন্যের উপকারে লাগছে, সেই বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখার সময় এসেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement