প্রেমের দিনে ঘুরে আসুন ঘরের কাছেই।
সপ্তাহটা কোনও মতে কাটিয়ে দিতে পারলেই ভ্যালেন্টাইন্স ডে। আগামী সপ্তাহান্তটা অন্য স্বাদের। ব্যাগগুছিয়ে বেরিয়ে পড়ুন প্রিয় মানুষটিকে সঙ্গে নিয়ে।
এখন তো গাড়িই ভরসা। ট্রেনে-প্লেনে উঠে বেড়াতে যাওয়া আবার কবে হবে, সে কথা ভেবে আর মন খারাপ করছেন কেন? বরং গাড়িটা ব্যবহার করুন না। ঘুরে আসুন শহর ছেড়ে অল্প দূরের কোথাও থেকে। যেখানে নিজেই গাড়ি চালিয়ে চলে যাওয়া যাবে। গোয়া, আজমের, লাদাখ আবার না হয় হবে কয়েক মাস পরে। যে সব জায়গায় বেশি সময় কাটানো হয় না, এখন মন দিন না তেমন কোথাও।
কলকাতা শহর থেকে বেশ কাছের তিনটি কম যাওয়া জায়গার কথা জেনে নিন। তেমনই কোথাও চলে পৌঁছে গিয়ে চমকে দিন ভ্যালেন্টাইনকে।
তেপান্তর থিয়েটার ভিলেজ
বর্ধমানের সাতকাহনিয়া গ্রামে অবস্থিত এই জায়গাটিতে আগে গিয়েছেন কি? নাম শুনেই বুঝতে পারছেন, এখানকার পরিবেশ সাংস্কৃতিক। যে ক’টি দিন থাকবেন এখানে, নাচ, গান, নাটকে ভরে থাকবে সময়টা। এই গ্রামের বৈশিষ্ট এটিই। এখানে একটিই থাকার জায়গা। সেই জায়গটির দেখভাল-রক্ষণাবেক্ষণ করেন যাঁরা, তাঁরা সকলেই নাটকের সঙ্গে যুক্ত। দিনে যিনি রান্নাঘরের কাজ করেন, সন্ধ্যায় সেই ব্যক্তিকেই দেখবেন মঞ্চে। ‘এবং আমরা’ নামক নাটকের দলের হয়ে অভিনয় করবেন তিনি। নাটকের পাশাপাশি আছে আরও আকর্ষণ। জায়গাটি একেবারেই অজয় নদীর কাছে। ফলে ঘর থেকে বেরিয়ে কয়েক পা হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন নদীর ধারে। লালমাটির পথ ধরে ফেরার সময়ে দেখা হয়ে যেতে পারে কোনও এক কৃষকের সঙ্গে। অল্প অনুরোধে তিনিই হয়তো শুনিয়ে দেবেন ভাদু গান।
হেনরিজ আইল্যান্ড
সংস্কৃতির ছোঁয়া এখানে কম। সমুদ্র ভরিয়ে রাখবে মন। সাদা বালির সৈকতে বসে কেটে যাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, বকখালি থেকে মাত্র কয়েক মিনিটের পথ। তবে এখানে নেই বকখালির পরিচিত ভিড়। এই জায়গাটি একেবারেই নিরিবিলি। অতিমারির ভয়ের সময়ে না চাওয়া ভিড়ের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে কয়েকটি দিন কাটানোর জন্য ভাল বন্দোবস্ত। সরকারি থাকার জায়গা। সেখান থেকে কয়েক পা হাঁটলেই সমুদ্র। সৈকতে বসে মাছ ধরা দেখেই গড়িয়ে যাবে সময়। সমুদ্রের এক ধারে দেখা যায় জঙ্গলও। জলে-জঙ্গলে মিলেমিশে দিন কাটাতে হলে হাত রাখুন স্টিয়ারিংয়ে। কলকাতা থেকে মাত্র তো ঘণ্টা পাঁচেক।
জয়পুরের জঙ্গল
জলহীন জঙ্গলও আছে এ রাজ্যে। যেমনটা দেখতে চায় মন, তেমনই জায়গা বেছে নিতে পারেন। বিষ্ণুপুর থেকে কয়েক কিলোমিটারের পথ। শাল-পলাশ-কুসুম-মহুয়ার জঙ্গলে ঘেরা এই জায়গাটি বড়ই শান্তিপূর্ণ এখনও। তারই মধ্যে দূরে দূরে কয়েকটি থাকার জায়গা হয়েছে। বন দফতরের বাংলো তো আছেই, তা ছাড়াও সেখানে রয়েছে বনলতা রিসর্ট। এক-দু’টো দিন সকাল-সন্ধ্যায় জঙ্গলের ধারে হাঁটাহাঁটি করে, গল্পে-আড্ডায় দিন কাটিয়ে দেওয়া যায় দিব্যি। হাতে কিছুটা সময় থাকলে গাড়ি চালিয়ে এক বেলার জন্য ঘুরে আসতে পারেন বিষ্ণুপুর শহর থেকে। ভাল ভাবে ঘুরে দেখতে পারেন সেখানকার রাসমঞ্চ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্দির। ফেরার পথে সেখানকার মানুষের হাতে তৈরি একটি বালুচরীও কিনা ফেলা যায় টুক করে।
পরের সপ্তাহান্তেই দেখতে ঘুরে আসতে পারেন কোনও একটি জায়গা থেকে। শুধু তো গন্তব্য নয়, প্রিয় জনেদের সঙ্গে গাড়িতে এতটা পথও আনন্দ দেবে প্রেমের এই সপ্তাহে।