বেশি সংখ্যক মানুষকে ঠকানোর প্রবণতা বাড়ছে।
করোনাকালে মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা কমে গিয়েছে। মানুষের আত্মবিশ্বাস কমেছে। এমনই বলছে হালের এক সমীক্ষা। কিন্তু পাশাপাশি বেড়েছে সততার পরিমাণ।
এর আগে অর্থনীতির সঙ্গে মানুষের আচরণের সম্পর্ক নিয়ে যতগুলি সমীক্ষা হয়েছে, তার প্রতিটিতেই দেখা গিয়েছে, যখনই অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়েছে, মানুষের সততার হার কমেছে। কিন্তু এই প্রথম বার পরিস্থিতি অন্য রকম। সেই হিসেবে করোনাকাল একটি ব্যতিক্রমী সময়।
জুরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালিয়েছেন। সেই সমীক্ষার ফলাফল ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়র’ নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মানুষের সার্বিক সততার মাত্রা কিছুটা বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে সহমর্মিতা, কমেছে স্বার্থপরতা।
এই সমীক্ষাটি চালানোর জন্য প্রাথমিক ভাবে এমন কয়েক জন মানুষকে বেছে নেওয়া হয়, যাঁদের বিরুদ্ধে এর আগে টাকাপয়সা চুরি, জালিয়াতি বা লুঠের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এবং তার অনেকগুলি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। দেখা গিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁদের লুঠ বা জালিয়াতির সুযোগ করে দিলেও, তাঁরা পিছিয়ে আসছেন। যেখানে একসঙ্গে বহু মানুষের স্বল্প মাত্রায় ক্ষতি করার সুযোগ রয়েছে, তাঁরা তা নিচ্ছেন। কিন্তু উল্টো দিকের মানুষের সংখ্যা যত কমছে এবং ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে, সমীক্ষায় অংশ নেওয়া এই ব্যক্তিরা তত পিছিয়ে আসছেন।
করোনাকালে বদলেছে মানুষের সততার মাত্রা
এমনকি জালিয়াতি বা লুঠের অর্থ অন্য একজনের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার কথা যখন বলা হচ্ছে, তাঁরা সেটাও করছেন নির্দ্বিধায়। ভাগ করছেন সম পরিমাণে। যদিও যাঁর সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন, তিনি হয়তো সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং শারীরিক ভাবে খুবই দুর্বল। ফলে এই ভাগাভাগির পিছনেও কোনও ভয় নয়, কাজ করছে সহমর্মিতা। সমীক্ষা থেকে এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন জুরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
সব মিলিয়ে তাঁদের দাবি, করোনাকাল সব হিসেবেই অত্যন্ত ব্যতিক্রমী। মানুষের অর্থনীতিগত চরিত্রও এই সময়ে অনেক বদলে যাচ্ছে।