মেডিসিন বিভাগের করিডরে ডাস্টবিনের কাছে বেহুঁশ হয়ে পড়ে রয়েছেন অজ্ঞাতপরিচয় ওই রোগী। —নিজস্ব চিত্র।
অজ্ঞাতপরিচয় এক রোগীকে প্রায় ঘণ্টা তিনেক হাসপাতালের করিডরের মেঝেতে ডাস্টবিনের ধারে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কেউ বা কারা অজ্ঞাত পরিচয় অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে রেখে চলে যান। সেখান থেকে তাঁকে মেল মেডিক্যাল ১-এ ভর্তি করানো হয়। তবে ভর্তি করানো হলেও রোগীকে ওয়ার্ডের করিডরে আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিনের কাছে ফেলে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে বিষয়টি নিয়ে হইচই হওয়ায় তাঁকে ভাল জায়গায় মেঝেতে শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস বাইরে রয়েছেন। ডেপুটি সুপার বিজয় থাপা বলেন, ‘‘অজ্ঞাতপরিচয় ওই রোগী বেঁহুশ রয়েছেন। কেউ বা কারা তাঁকে ভর্তি করিয়ে চলে গিয়েছে। ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কর্মীরা জানিয়েছেন, অন্যান্য রোগীদের সঙ্গে তাঁকে করিডরে মেঝেতে শয্যায় রাখা হয়েছিল। কোনও ভাবে সে গড়িয়ে দরজার কাছে চলে গিয়েছে। বিষয়টি জানার পর তাকে ওয়ার্ডে ভিতরের দিকে মেঝেতে শয্যা করে রাখা হয়েছে। বেহুঁশ বলে শয্যা দেওয়া হয়নি। কেন না তাতে শয্যা থেকে পড়ে য়াওয়ার সম্ভাবনা থাকত।’’ কিন্তু দীর্ঘ ক্ষণ ধরে ডাস্টবিনের কাছে নোংরার মধ্যে বেহঁশ এক রোগী পড়ে থাকলেও নার্স বা স্বাস্থ্য কর্মীদের নজর কী ভাবে এড়িয়ে গিয়েছে সেই প্রশ্ন উঠেছে। সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনও সদুত্তর দেননি।
এই ঘটনায় হাসাপাতালের নার্স এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওয়ার্ডে নার্স বা স্বাস্থ্য কর্মীরা রোগীদের দিকে নজরই দেন না বলে কয়েক জন রোগীর পরিবারের লোকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এমনকী কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে নার্স স্বাস্থ্য কর্মীদের কোনও কথা এক বারের জায়গায় দু’বার জিজ্ঞাসা করলেই অনেক সময় খারাপ ব্যবহার পেতে হয় বলে অভিযোগ। তা ছাড়া নিরাপত্তা রক্ষীরাও করিডরে থাকেন তারাও বিষয়টি স্বাস্থ্য কর্মীদের নজরে আনতে পারতেন। অথচ এ ভাবে এক জন রোগী পড়ে থাকলেও মানবিকতার খাতিরেও কেউ তাঁকে দেখতে যাননি বলে অভিযোগ। পরে বিষয়টি নিয়ে হইচই হচ্ছে দেখে টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালেরই চিকিৎসক কর্মীদের একাংশ ঘটনার নিন্দা করেছেন। তাঁদের মত, রোগীর পরিবারের লোক থাকুক আর নাই থাকুক হাসপাতালে সকলের প্রতিই যত্ন নেওয়া কর্তব্য। অথচ কেউই সেই দায় নিতে চান না। কোথাও কোনও সমস্যা রয়েছে নজরে পড়লেও দেখেও না দেখার ভান করে অনেকে চলে যান বলে অভিযোগ।