চোখে শুধু মাসকারা, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক
সব বন্ধুর দলেই এমন অনেকে থাকেন, যাঁরা সব সময়ে লিপস্টিক, আই লাইনার, ব্লাশার লাগিয়ে কমপ্লিট মেকআপ করতে ভালবাসেন। আবার অনেকে থাকেন যাঁদের ফোকাস স্কিন কেয়ারে। হয়তো বেরোনোর সময়ে একটু লিপস্টিক লাগিয়ে নিলেন ঠোঁটে, ব্যস। এই দু’দলের ঠিক মাঝ বরাবর চললেই কিন্তু মিনিমালিস্ট মেকআপ হাতের মুঠোয়। আরও ভাল করে বুঝতে গেলে চোখ রাখতে হবে আলিয়া ভট্টের ইনস্টাগ্রাম পেজে। এই মেকআপের ভীষণ ভক্ত যে তিনি।
মিনিমালিস্ট মেকআপ আদতে কী?
নামেই বোঝা যায়, মেকআপে বাড়াবাড়ি থাকবে না। তবে তার মানে এই নয় যে, মেকআপ কম হবে। প্রথমেই মনে রাখতে হবে যে, মিনিমালিস্ট মেকআপ মানে কিন্তু নুড মেকআপ নয়। এই ধরনের লুক পেতে কিন্তু মেকআপ করতে হবে যত্ন নিয়ে। বিশেষত স্কিন টেক্সচার ভাল রাখায় জোর দিতে হবে। তার জন্য নিয়মিত স্কিন কেয়ার জরুরি। আর ফাউন্ডেশন ও প্রাইমার হতে হবে উচ্চ মানের, যাতে মুখের দাগছোপ ঢেকে যায়। মুখের কোনও একটি ফিচার হাইলাইটেড হবে। যদি ঠোঁট হাইলাইট করতে চান, তা হলে চোখের মেকআপ হবে হালকা। আবার চোখের মেকআপ ডার্ক হলে, ঠোঁট হবে হালকা। একে একে লুকগুলি কী ভাবে পাব, সেটাই স্টেপ বাই স্টেপ দেখার পালা।
ত্বকের যত্ন নিন
মিনিমালিস্ট মেকআপে সকলের আগে প্রাধান্য পাবে ত্বক। তাই নিয়মিত স্কিনকেয়ার জরুরি। স্ক্রাবিং, টোনিং, ময়শ্চারাইজ়িং তো থাকবেই। তিরিশ পেরোলে তার সঙ্গে জুড়তে থাকবে অ্যান্টি-এজিং ট্রিটমেন্ট, ফেস লিফ্টিং ইত্যাদি, যাতে বয়সের ভার কমে। ত্বকের অ্যাকনে, পিগমেন্টেশন, সানবার্নও কমিয়ে ফেলতে হবে ফেসপ্যাকের সাহায্যে। মেকআপ ছাড়াই ত্বককে করে তুলতে হবে সুন্দর ও প্রাণবন্ত।
বেস ভাল হোক
ভিত ভাল হলে যেমন বাড়ি ভাল হয়, তেমনই মেকআপের বেস ভাল করা দরকার। এমন ফাউন্ডেশন বাছতে হবে, যাতে তা নিখুঁত ফিনিশ দেয় ত্বকে।
• ফাউন্ডেশন কেনার সময়ে সচেতন হন। হাতের উল্টো দিকে ফাউন্ডেশন পরখ না করে জ-লাইনে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে দেখে নিন আপনার স্কিন টোনের সঙ্গে তা মানাচ্ছে কি না। আর ফিনিশ বোঝার জন্য মিনিট দশেক অপেক্ষা করুন।
• ত্বক উজ্জ্বল দেখাতে মেকআপের পরে ফেস মিস্ট ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে হাইলাইটার।
চোখে পড়ার মতো
আইলাইনার, আইশ্যাডো এবং কাজল— এই তিনটি মেকআপ প্রডাক্ট ব্যবহার করে তিন রকমের লুক পেতে পারেন।
• চোখে ফল্স ল্যাশ লাগিয়ে তাতে মাসকারা লাগিয়ে নিন। দেখবেন বেশ ড্রিমি একটা লুক পাবেন। এটাই মিনিমালিস্ট মেকআপে সবচেয়ে প্রচলিত লুক। পরে অবশ্য এই ধরনের মেকআপে যোগ করা হয়েছে আইলাইনার, কাজল ইত্যাদি।
• আইলাইনার দিয়ে উইংগড আই করে চোখ হাইলাইট করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ঠোঁটে থাকুক হালকা পিচ, পিঙ্ক বা ভায়োলেট। ব্লাশার না লাগালেও চলবে। কারণ এ ক্ষেত্রে চোখই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তাই চোখের আইলাইনার পরার ধরন পালটে তাকে আরও আকর্ষক করতে পারেন।
• কাজল লাগাতে চাইলে চোখের নীচের পাতায় কাজল আর উপরের পাতায় থাকুক হালকা মাসকারা। সে ক্ষেত্রে আইলাইনার লাগানোর প্রয়োজন নেই।
• আইশ্যাডো লুক পেতে পোশাকের রঙের সঙ্গে মানানসই আইশ্যাডো লাগিয়ে নিন। সাজ সম্পূর্ণ করতে চোখের পল্লবে থাকুক মাসকারার ছোঁয়া।
ধরা থাকুক ওষ্ঠাধরে
• এ ক্ষেত্রে চোখে খুব বেশি মেকআপ করা হয় না। শুধু মাসকারা লাগিয়ে ড্রিমি লুক দেওয়া হয় চোখে। আর ঠোঁটে থাকে হালকা বা গাঢ় রঙের লিপস্টিক।
• ঠোঁটের গ্লসি ভাব কমাতে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ছড়িয়ে নিন। একটি টিসু পেপার চেপে নিলেও ম্যাট লুক পেয়ে যাবেন। ম্যাট ঠোঁটই কিন্তু মিনিমালিস্ট মেকআপকে বেশি আকর্ষক করে তোলে।
ভ্রু যুগলে
মিনিমালিস্ট মেকআপে ভুরুর শেপ ঠিক রাখাও জরুরি। তাই প্লাক করা থাকলে ভাল। না হলে শেপ করে ভ্রুদ্বয় আঁচড়ে নিন। প্রয়োজনে ব্রো মাসকারা দিয়ে এঁকে নিন।
চুলের কেয়ারি
যেহেতু সাজ হালকা হয়, তাই ভাল করে চুল বাঁধা জরুরি। মেসি বান করলেও সামনের দিকটা পরিষ্কার করে আঁচড়ে নিতে হবে। চুল ছেড়ে রাখলেও তা সুন্দর করে আঁচড়ে নিন। বাহারি খোঁপা বা বিনুনিও ভাল লাগে এই ধরনের মেকআপে।
সাজতে সাজতে অনেক খুঁটিনাটি আপনিও আবিষ্কার করে ফেলবেন। তবে নিট লুকেই এই সাজ সম্পূর্ণ হবে।
মডেল: ডিম্পল আচার্য, সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়, রিয়া ভট্টাচার্য ছবি: আশিস সাহা (ডিম্পল), অমিত দাস মেকআপ: নবীন দাস (ডিম্পল), অনিরুদ্ধ চাকলাদার; পোশাক: ইমেজ অ্যান্ড স্টাইল (গড়িয়াহাট),
একরু গয়না: আভামা জুয়েলারি, গ্ল্যামার