অতীত থেকেও শিক্ষা নিল না বহরমপুর মানসিক হাসপাতাল। ফের জলবসন্ত (চিকেন পক্স) আক্রান্ত রোগীদের রাখা হচ্ছে অন্যান্য মনোরোগীদের সঙ্গে। ফলে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০। জলবসন্তের রোগীদের মশারির মধ্যে রাখা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ।
তিন বছর আগে একই ভুল করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল জলবসন্ত। এ বার কেন ঘর আলাদা করা হল না? হাসপাতালের সুপার পবিত্র সরকার বলেন, ‘‘হাসপাতালে ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’ বলে কিছু নেই। তাই আলাদা ব্যবস্থা করা যায়নি।’’ যদিও মুর্শিদাবাদের জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা বলেন, ‘‘মানসিক হাসপাতালের একটি ঘরকে আইসোলেশন ওয়ার্ড করে ওই রোগীদের রাখার বন্দোবস্ত করা উচিত ছিল। পরে ঘরটির জীবাণুনাশ করে নিলেই হত।’’ তিনি এ বিষয়ে সুপারের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক।
মানসিক হাসপাতাল ও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর অনুযায়ী, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জলবসন্ত-আক্রান্ত প্রায় ৩০ জন মনোরোগী ভর্তি ছিলেন। একটু সুস্থ হতেই তাঁদের আবার মানসিক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরও ১৫-২০জনকে মানসিক হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা চলছে। আক্রান্তরা সকলেই পুরুষ রোগী।
কিন্তু রোগীদের মশারির মধ্যে রাখার ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করেনি কেন? হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, রোগী কল্যাণ সমিতিকে সরকার প্রতি মাসে যে অনুদান দেয়, সেই টাকায় রোগীদের মশারি কেনা যেত। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। ফলে বিনা মশারিতে, অন্যান্য আবাসিকদের সঙ্গে ওয়ার্ডের মধ্যেই জলবসন্ত রোগীদের রাখা হয়েছে। হাসপাতালে এখন মোট ২২৯জন পুরুষ রোগী আছেন। রোগ আরও ছড়ানোর আশঙ্কা তাই রয়েই যাচ্ছে।
সমাজকর্মী রত্নাবলী রায় বলেন, ‘‘বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে জায়গার তো অভাব নেই। চিকেন পক্সে আক্রান্ত রোগীদের চিহ্নিত করে শুরুতেই পৃথক ঘরে রাখার বন্দোবস্ত করা হলে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এতটা বাড়ত না।’’