ফসল ফলানোর এই পদ্ধতির নাম হাইড্রোপনিকস
ছিলেন সাংবাদিক, হয়ে গেলেন চাষি। উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা রামবীর সিংহ তিনতলা বাড়ির ছাদ ও ঝুলবারান্দার পুরোটাই ঢেকে ফেলেছেন হরেক রকম উদ্ভিদে। আর তা থেকেই বছরে তাঁর আয় প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা! হাইড্রোপনিকস পদ্ধতিতে ফসল ফলিয়ে এমন অসাধ্যসাধন করেছেন ওই ব্যক্তি।
ছবি: সংগৃহীত
সাংবাদিক হিসাবে কাজ করা রামবীরের জীবন হঠাৎই বদলে যায় ২০০৯ সালে। তাঁর কাছের এক বন্ধুর কাকা ক্যানসারে আক্রান্ত হন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়, শাকসব্জি থেকে খাবারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মেশার ফলেই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন ওই ব্যক্তি। এর পরই রামবীর সিদ্ধান্ত নেন, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই ফসল ফলাবেন তিনি। প্রথমে পৈতৃক চাষের জমিতেই চাষবাস শুরু করেন তিনি। কিন্তু তাঁর বাড়ি থেকে সেই জমিটির দূরত্ব ছিল প্রায় ৪০ কিলোমিটার। তাই রোজ চাষ করতে গিয়ে ক্ষতি হচ্ছিল তাঁর পেশাগত জীবনে। শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকতা ছেড়ে পুরোপুরি চাষবাসেই মন দেন।
রামবীরের জীবন ফের এক বার বাঁক নেয় ২০১৭-১৮ সালে। ওই সময়ে কৃষিকাজ সংক্রান্ত একটি সম্মেলনে দুবাইতে যাওয়ার ডাক পান। সেখানেই এই হাইড্রোপনিকস পদ্ধতির কথা জানতে পারেন। এই পদ্ধতিতে মাটি ও কীটনাশক ছাড়াই সব্জি চাষ করা যায়। জলের খরচও কমে যায় প্রায় ৮০ শতাংশ। দুবাই থেকে ফিরেই নিজের বাড়ির ছাদ ও ঝুলবারান্দায় এই হাইড্রোপনিকস পদ্ধতিতে ফসল ফলানোর সিদ্ধান্ত নেন রামবীর। বর্তমানে তাঁর বাড়িতে দশ হাজারেরও বেশি উদ্ভিদ রয়েছে। ফলাচ্ছেন করলা, লঙ্কা, পটল, পালংশাক, ফুলকপি, টোম্যাটো ও ক্যাপসিকামের মতো হরেক রকমের শাক-সব্জি। প্রাথমিক ভাবে নিজেদের জন্য এই সব ফসল ফলালেও এখন পুরোদমে ফসল বিক্রি করার দিকেও নজর দিয়েছেন তিনি। রামবীরের দাবি, এই ফসল বিক্রি করেই বছরে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা আয় করছেন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।