অভিনেত্রী লিসা রায় ও তাঁর স্বামী। ছবি: সংগৃহীত
বেঁচে থাকার ইচ্ছার কাছে হার মেনেছিল ক্যানসার। মারণরোগের কবল থেকে বেরিয়ে নতুন জীবনের স্বাদ পেয়েছেন ‘লগান’ ছবির অভিনেত্রী লিসা রায়। ২০১৩ সালে বোন ম্যারো বা অস্থিমজ্জায় ক্যানসার ধরা পড়েছিল লিসার। ক্যানসারকে হারিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পথটা মোটেই সহজ ছিল না অভিনেত্রীর পক্ষে।
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট শেয়ার করে অভিনেত্রী তাঁর জীবনে হার না মানার গল্প ভাগ করে নিয়েছেন অনুরাগীদের সঙ্গে। পোস্টে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘৪০ বছর বয়সে বিয়ে করি। ক্যানসারকে জয় করে ৪৫ বছর বয়সে দুই সন্তানের মা হই, সবটাই উন্নত প্রযুক্তির দয়ায়।’’ জর্জিয়ায় সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম হয়েছে লিসার দুই কন্যাসন্তান সুফি এবং সোলেইলের। দুই সন্তান লিসার কাছে ‘মিরাক্যাল ডটার’।
ক্যানসার তাঁকে হারাতে পারেনি। বরং ক্যানসার তাঁর মধ্যে আরও কাজ করার তাগিদ বাড়িয়েছে। লিসা বলেছেন ছোট থেকেই তাঁর লেখক হওয়ার ইচ্ছা ছিল। ৪৬ বছর বয়সে তাঁর লেখা প্রথম বই প্রকাশিত হয়। সেই বইয়ে তিনি নিজের জীবনযুদ্ধের গল্প বলেছেন। ক্যানসার তাঁকে এক জায়গায় বেঁধে রাখতে পারেনি। বিয়ের পর লিসা এশিয়া মহাদেশের ৫ শহরে গিয়ে বেশ অনেক দিন করে সময় কাটিয়েছেন। লিসা লিখেছেন, ‘‘ক্যানসার থেকে সেরে ওঠার পরেই জীবনকে উপভোগ করতে শিখেছি, স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দিতে শিখেছি, অল্পতেই খুশি হতে শিখেছি।’’
৪২ বছর বয়সে টেনিস খেলতে শিখেছেন লিসা। জীবনকে চুটিয়ে উপভোগ করার একটা সুযোগও ছাড়তে নারাজ তিনি।
ক্যানসারের চিকিৎসা চলাকালীন কাজ হারান লিসা। ট্র্যাভেল চ্যানেলের চাকরি আর মাথাভরা চুল একসঙ্গেই চলে যায় তাঁর জীবন থেকে। কেমোথেরাপির পর কিছু দিন পরচুলা পরতেন। কিন্তু নিজেকে দেখে নিজেরই হাসি পেত। তাই টাকমাথায় ঘুরতেন। তা নিয়ে শিরোনামেও এসেছিলেন অভিনেত্রী। তবু লড়াইটা ছিল একার। একটি ভ্রমণের শো-তে সেই চুল নিয়ে যাওয়ার পরই তাঁকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান। লম্বা চুলের নারী চেয়েছিল সেই সংস্থা। লিসা জানান, জীবন তাঁর প্রতি এতটাই নির্মম হয়েছে। তবু টিকে গিয়েছেন। হাল ছাড়েননি। তবে অভিনয় জীবনে ফিরে আসাটা সহজ ছিল না। কিন্তু মনের জোরে সেটাও সম্ভব করেছেন তিনি। ৪৯ বছর বয়সে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে অভিনয় করেছেন তিনি। ওই সাফল্য তাঁর কাছে অনেক বড় বিষয়।
ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের উদ্দেশে লিসা বলেছেন, ‘নিজের জীবন নিজের শর্তেই বাঁচুন। সমাজকে তোয়াক্কা করার কী প্রয়োজন?’