ব্যাগ গোছানোর পর্বে সচেতন হোন। ছবি: আইস্টক।
পায়ে যদি সর্ষে থাকে, তা হলে বর্ষা মানেই ট্রেকিংয়ের গোছগাছ শুরু। কঠিন কঠিন পথ ভেঙে জীবনকে আর একটু অন্য চোখে দেখার আরাম। পা-হাঁটুর যত্ন নিয়ে নিয়মিত হাঁটাহাঁটি ও শরীরচর্চা করে শরীরকে না হয় জুতে আনা গেল, কিন্তু ট্রেকিং মানেই কি শুধু শরীর ঠিক রেখে পিঠে ব্যাকপ্যাক চাপিয়ে বেরিয়ে পড়া?
এই ধারণা থাকলে তা থেকে সরে আসুন। বরং ট্রেকিং শুরু করার আগে ব্যাগ গোছানোতে অনেকটা মন ও সময় ব্যয় করতে হয় বইকি। বাড়ির বাইরে গেলে যে বাড়ির আরাম পাবেন, এমনটা যেমন ঠিক নয়, তেমনই বাইরে বেরিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হাতের কাছে না পাওয়াটাও খুব কাজের কথা নয়।
তাই ট্রেকিংয়ের আগে ব্যাগ গোছাতে হবে বেশ কিছু জরুরি বিষয় মাথায় রেখে। ব্যাগ ভারী করা যাবে না, তাই এমন কিছু জিনিস নিতে হবে যা অতিরিক্ত হবে না, আবার দরকারি সব জিনিসই সঙ্গে রাখতেও হবে। তাই এই ব্যাগ গোছানোর পর্বে সচেতন হোন। কী কী জিনিসে ভরবেন ব্যাগ, রইল তার হদিশ।
আরও পড়ুন: বর্ষায় যখন তখন হানা দিতে পারে ফাঙ্গাল ইনফেকশন, কী ভাবে বাঁচবেন?
জিনিসপত্র কী নেবেন
জিনিস হবে যৎসামান্য৷ একটা হলোফিল জ্যাকেট, যে রকম ঠান্ডায় যাবেন, সেই অনুযায়ী৷ তিন–চারটে ফুল হাতা জামা৷ একদম নিচে বিশেষ ধরনের সিন্থেটিক জামা পরে নিলে ঠান্ডা কম লাগে৷ তার উপর আরও একটা কি দুটো জামা পরে, দরকার মতো সোয়েটারের উপর জ্যাকেট পরে নেবেন৷ রাতের দিকে ভাল উলিকট লাগবে৷ বেশ কিছু পকেটওলা কার্গো প্যান্ট নিতে হবে৷ তুষারপাত ও হালকা বৃষ্টি আটকানোর মতো প্যান্টও পাওয়া যায়৷ কয়েক জোড়া উলের মোজা নেবেন৷ গ্লাভস, উলের টুপি, মাফলার নিতে হবে৷ বেশি উচ্চতায় গেলে মাথা ও গলা ভাল করে ঢেকে কান খোলা রাখা দরকার৷ তবে খুব হাওয়া দিলে তাৎক্ষণিক ভাবে কান ঢেকে নিতে হতে পারে৷ আন্ডার গারমেন্ট নিতে হবে বেশ কয়েক সেট৷ স্নান করার পরিস্থিতি সচরাচর থাকে না৷ কাজেই হাত–মুখ পরিষ্কার করার জন্য টিস্যু, ক্রিম, তুলো ইত্যাদি নেবেন৷ বডি স্প্রে নেবেন৷ বাথরুমে ব্যবহার করার জন্যও টিস্যু নিতে হবে৷ সানস্ক্রিন, ভাল সানগ্লাস ও রোদ আটকানোর টুপি নিতে ভুলবেন না৷ পাহাড়ে যখন–তখন বৃষ্টি বা তুষারপাত হয়৷ কাজেই নিজেকে ঢাকার বর্ষাতি যেমন নেবেন, ব্যাগের কভারও নিতে হবে৷
আরও পড়ুন: দৈনন্দিন জীবনে এ সব ভুল আর নয়, স্ট্রোক রুখতে মেনে চলুন কিছু মাস্টারস্ট্রোক
ব্যাগ ভারী করা যাবে না, তাই এমন কিছু জিনিস নিতে হবে যা অতিরিক্ত হবে না। ছবি: আইস্টক।
লাঠি নিতে হবে৷ ফোল্ডিং স্টিক কিনে নিন না থাকলে। উতরাই ভাঙার সময় তো লাগবেই৷ ওষুধের প্যাকেটে নিজস্ব ওষুধপত্রের পাশাপাশি থাকবে নাকের ড্রপ, ওআরএস, আমাশা, লুজ মোশন জ্বরের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ, ভাল ক্রেপ ব্যান্ডেজ, নি ক্যাপ৷ হাঁটুতে অল্পস্বল্প সমস্যা থাকলে হাঁটা শুরু করার দিন থেকেই দিনে ৩টে করে ১০০০ মিগ্রা প্যারাসিটামল খেতে থাকুন, ব্যথা না হলেও৷ ব্যথার বাম বা স্প্রে সঙ্গে নিতে ভুলবেন না৷ গরমজলের ফ্লাস্ক নেবেন৷ কারণ খুব ঠান্ডা জল খেলে ক্র্যাম্প ধরে যেতে পারে৷ একটা ডায়েরিতে দরকারি ফোন নম্বর লিখে নিয়ে যান। নিজের পরিচয়পত্রও সঙ্গে রাখুন। যে কোনও পরিস্থিতিতে কাজে লাগতে পারে।