‘কাওয়াহ’ চা হাতে ‘কাওয়াহ ম্যান’ মুস্তাক। ছবি- সংগৃহীত
শীতের গোড়ার দিকেই কাশ্মীরেরে পর্যটক সংখ্যা বেড়েছে নজরে পড়ার মতো। ভূস্বর্গের কনকনে ঠান্ডায় ডাল লেকের জলে শিকারা চড়ার সঙ্গে অতিথিদের আপ্যায়নের বিশেষ ব্যবস্থা করেন স্থানীয় শিকারাচালক মুস্তাক হুসেন আখুন। অবশ্য স্থানীয় লোকেরা তাঁকে ‘কাওয়াহ ম্যান’ নামেই চেনেন।
কাশ্মীরি কাওয়াহ চা এখন কলকাতার সর্বত্রই পাওয়া যায়। অনেকেই এই চায়ের গুণাগুণ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তবে কাশ্মীরে বসে এই চা খাওয়ার আনন্দই আলাদা। শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে বিশেষ এই চায়ের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের স্বাস্থ্য, হার্ট, হজমের সমস্যা— সবের দেখভাল করতে পারে এই চা। এ ছাড়াও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর কাওয়াহ শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। মুস্তাক বলেন, “আমার ধারণা, অনেকে শুকনো ফল বা গোলাপ ফুলের পাপড়ি না দিয়েই সেই চা কাওয়াহ বলে চালিয়ে দিতে চান। কিন্তু এই দু’টি উপাদান ছাড়া কাশ্মীরের কাওয়াহ চা তৈরিই করা যায় না। বিশেষ এই চা আমাদের উপত্যকার ভালবাসা এবং আতিথেয়তার প্রতীক।”
পর্যটকদের সঙ্গে মুস্তাক। ছবি- সংগৃহীত
ডিসেম্বর-জানুয়ারির ভরা ঠান্ডাতেও সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হয় না মুস্তাকের। বিগত ন’বছর ধরে ডাল লেকের জলে ভেসে থাকা স্থানীয় সব্জি বিক্রেতা থেকে শুরু করে পর্যটক— সকলকেই এই চা দিয়ে থাকেন তিনি।
কাশ্মীরের এই বিশেষ চা তৈরি করতে মুস্তাক কোন ১৬টি উপাদান ব্যবহার করেন?
মুস্তাক জানান, চায়ের মধ্যে কাঠবাদাম, আখরোট, কাজুবাদাম, খেজুর, গোলাপ ফুলের পাপড়ি, মধু, জাফরান, ছোট এলাচ, দারচিনি, আদার মতো উপাদান দিয়ে তৈরি হয় কাশ্মীরি কাওয়াহ। মুস্তাক বলেন, “কাশ্মীর ঘুরতে আসা পর্যটকরা যখন আমার শিকারায় চড়ে ডাল লেকে ঘুরতেন, তখন আমি তাঁদের এই চা পরিবেশন করতাম।” মুস্তাকের শিকারায় উঠে এক কাপ কাওয়াহ খেতে গেলে খরচ করতে হবে মাত্র ৫০ টাকা।
শিকারায় চা বানাচ্ছেন মুস্তাক। ছবি- সংগৃহীত
২০১৪ সাল থেকে এই বিশেষ চায়ে নিজের দক্ষতার ছাপ রেখে চলেছেন মুস্তাক। বর্তমানে তাঁর কাছে প্রায় ১৬ রকম কাশ্মীরি কাওয়াহ চা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও তাঁর শিকারায় উঠলে পর্যটকরা কিনতে পারবেন সেখানকার বিখ্যাত সব সুগন্ধি মশলা।