গত বছর হিজাব মামলায় কর্নাটক হাই কোর্টের রায় নিয়ে ঐকমত্যে আসতে পারেনি সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কর্নাটকের সরকারি স্কুলগুলিতে পরীক্ষা দেওয়ার সময়ে ছাত্রীদের হিজাব পরার অনুমতি দিতে হবে, সুপ্রিম কোর্টে এমন আর্জি জানায় কয়েক জন ছাত্রী। বুধবার সেই সংক্রান্ত মামলার শীর্ষ আদালত জানায়, এই বিষয়টি নিয়ে শুনানি করা হবে।
প্রধান বিচারপরি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চকে জানানো হয়, হিজাব পরার বিষয়ে শীর্ষ আদালতের বিভক্ত রায়ের পরে কর্নাটকের সরকারি স্কুলগুলিতে ৯ মার্চ থেকে যে পরীক্ষা শুরু হবে, তাতে হিজাব পরা ছাত্রীদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হচ্ছে না। ছাত্রীদের তরফের উকিল সাদান ফারাসাত শীর্ষ আদালতকে বলেন, ‘‘হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞার কারণে বেশ কয়েক জন ছাত্রী সরকারি স্কুল ছেড়ে বেসরকারি স্কুলে চলে গিয়েছে। তবে পরীক্ষা দিতে তাদের সরকারি স্কুলে যেতে হবে। হিজাব পরার অুমতি না পেলে তাদের একটা বছর নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।’’ এই যুক্তি শুনে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘আমি এ বার একটা সিদ্ধান্ত নেব।’’
গত ১৫ মার্চ কর্নাটক হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, হিজাব পরাকে ধর্মাচরণের প্রয়োজনীয় অঙ্গ হিসাবে দেখা ঠিক নয়। ছবি: সংগৃহীত।
গত বছর হিজাব মামলায় কর্নাটক হাই কোর্টের রায় নিয়ে ঐকমত্যে আসতে পারেনি সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে শেষ পর্যন্ত বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চে ‘খণ্ডিত রায়’ দিয়েছে। গত ১৫ মার্চ কর্নাটক হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, হিজাব পরাকে ধর্মাচরণের প্রয়োজনীয় অঙ্গ হিসাবে দেখা ঠিক নয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে মুসলিম ছাত্রীদের আবেদনের ধারাবাহিক শুনানির পর ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে নিজেদের রায় সংরক্ষিত রেখেছিল বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ। বিচারপতি হেমন্ত কর্নাটক হাই কোর্টের রায়ের পক্ষে মত জানিয়ে আবেদন খারিজ করে দিলেও সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারার উল্লেখ করে বিচারপতি ধুলিয়া মুসলিম ছাত্রীদের আবেদনের যৌক্তিকতা মেনে নিয়েছেন। হিজাব পরার ব্যক্তিগত অধিকারকেও স্বীকৃতি দিয়েছেন তিনি।
এ বার প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপে হিজাব মামলার শুনানি হতে চলেছে। এ বার কী রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট, সে দিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ।