আলু বাদ দিলেই কি কমবে মোটা হওয়ার প্রবণতা? ছবি: আইস্টক।
রোগা হওয়ার লড়াইয়ে পাত থেকে সহজেই বাদ পড়ে যায় আলু। বাঙালি যতই তার প্রিয় রসনাবিলাসে আলু পোস্ত, ঝুরঝুরে আলু ভাজা বা আলুর দমের আমোদ রাখুক না কেন, রক্তে শর্করা বৃদ্ধির ভয়, মোটা হওয়ার চোখরাঙানিতে বাধ্য হয়েই অনেকে পাত থেকে সরিয়ে ফেলেন আলু।
কিন্তু আলু কি সত্যিই এতটা ক্ষতিকর? ওবেসিটি থেকে শুরু করে রক্তে শর্করা বাড়ানো, সবেতে কি আলুই ‘ভিলেন’? কী বলছেন পুষ্টিবিদরা? কোনও বিশেষ উপায়ে আলু খেলে কি এই সব ভয় দূর করে নিশ্চিন্ত হওয়া যায়?
পুষ্টিবিদ সুমেধা সিংহের মতে, ‘‘১০০ গ্রাম আলু থেকে ১০০ ক্যালোরি মেলে। আলুতে অস্বাস্থ্যকর তেমন কিছুই নেই। বরং আলুর কার্বোহাইড্রেট বা শ্বেতসার প্রকৃতিগত ভাবে সরল। এই ধরনের কার্বোহাইড্রেট পুরোপুরি বাদ দেওয়াটাও বোকামি। আলুতে ফাইবার থাকে। তা পেট ভরা রাখতেও সাহায্য করে। অন্য আর পাঁচটা সব্জির মতো এরও কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: পাতে এই সব্জি থাকলে বলিরেখা আসবে না, ঝকঝকে হবে ত্বক
আরও পড়ুন: মাত্র কয়েক মিনিট সময় দিলে এই দুই ব্যায়ামেই উধাও হতে পারে ভুঁড়ি!
আলু থেকে তৈরি নানা স্ন্যাক্সেই বিপদ ডাকেন শরীরের।
তা হলে ভিলেন ঠাওরানো হয় কেন?
যে হেতু সরল শর্করা, তাই তা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। এই ভয় থেকেই মেদ জমে যাওয়া বা রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ভয় অনেকে পান।
সরল শর্করা তো বটেই, তা হলে ভয় অমূলক কেন?
ডায়াবিটিস বিশেষজ্ঞ অভিজিৎ চন্দর মতে, ‘‘সেদ্ধ করে বা বেক করে খাওয়ায় আলুর কোনও পুষ্টিগুণই নষ্ট হয় না। তরকারি রান্নার সময় আলু সেদ্ধ করে সেই জল ফেলে দিয়ে রান্না করলেও কোনও ক্ষতি নেই। আলুর সঙ্গে হাইড্রোজেনেটেড তেল ও অনেকটা নুন মিশলে তখন ক্ষতি হয়।’’
ক্ষতি কীসে?
ফাস্ট ফুড সেন্টারের হাইড্রোজেনেটেড তেলে ভাজা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নিয়মিত খেতে আরম্ভ করলে বা চিপস খেলে আলু ক্ষতি করতে শুরু করে। পুষ্টিগুণ বিন্দুমাত্র থাকে না। সরল কার্বোহাইড্রেট বলে এক টুকরো বিরিয়ানির আলুও খাওয়া যাবে না, এমন ভাবনা ভুল। এমনকি, আলুতে কোলেস্টেরলও থাকে না। প্যাকেটবন্দি আলুর স্ন্যাক্সে নুন ও তেলের পরিমাণ বেশি থাকে বলে সেখান থেকে কোলেস্টেরল বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। খাদ্যতালিকা সুষম রাখতে আলু যোগ করুন তাতে।