‘ডেথ ইন দ্য গঞ্জ’ ছবিতে বিক্রান্ত মাসির চরিত্রটা মনে করিয়ে দেয় সমাজে নানা রকম ব্যক্তিত্বের পুরুষ থাকতেই পারে।
বাচ্চা ছেলের জন্মদিনের কি উপহার দেওয়া যায়? অবশ্যই খেলনা গাড়ি কিংবা রোবট। খেলনাবাটি বা পুতুল আর কী করে দেওয়া যায়! অথচ সেই ছেলেই হয়তো বড় হয়ে মিশেলিন তারা প্রাপ্ত শেফ হয়ে গেল। এমনটা হয়েই থাকে। সমাজ যে ভাবে ছেলে-মেয়ের আচরণের মধ্যে ফারাক জন্মের পর থেকেই করা শুরু করে। তাতে কিছু ধ্যান-ধারণা কমবেশি সকলের মনেই গেঁথে যায়। হয়তো সেই কারণেই ছেলেরা বুঝতে পারেন না, তাঁরাও কী ভাবে এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার শিকার হচ্ছেন। শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর বিশ্ব পুরুষ দিবস। কিছু কথা যেন সব পুরুষই মনে রাখেন, সেই প্রয়াস করা যাক এই দিনে।
১। মেয়েরা ছিঁচকাঁদুনে। কথায় কথায় তাঁদের চোখে জল আসতেই পারে। কিন্তু ছেলে হয়ে জন্মালে মানসিক ভাবে শক্ত হতে হবে। অত কান্নাকাটি করা যাবে না। চোখের জল মানেই যে কেউ মানসিক ভাবে শক্ত নয়, এমন বস্তা পচা ধারণা মাথায় আনবেন না। কান্না পেলে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলুন। তাতে মন হাল্কা হবে এবং মানসিক জটিলতাও কমবে।
২। ছেলে হলেই খেলাধুলো পছন্দ হতেই হবে? ফুটবল-ক্রিকেট নিয়ে মাতামাতি করতে হবে? এমন কোনও মানে নেই। একজন ছেলের যদি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখার বদলে শ্রীয়মী দেখার উৎসাহ বেশি থাকে, তা হলে তা ব্যক্তিগত পছন্দ। এতে লিঙ্গের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই।
৩। আবেগ বসে রাখতে হবে। কোনও বিষয়ে খারাপ লাগলে মন খুলে এত কথা বলা যাবে না? ঝট করে কোনও মানুষের প্রতি টান অনুভব করা যাবে না। মান-অভিমান সবই যেন মেয়েদের অধিকার। এই ধারণা নিয়ে বাঁচলে জীবনটা উপভোগ করতে পারবেন না। তার চেয়ে বরং আপনি যেমন, তেমনই থাকুন, তেমন ভাবেই বাঁচুন।
‘বয়েজ ডন্ট ক্রাই’ ছবির দৃশ্য।
৪। ছেলে মানেই টাকাপয়সার বিষয়ে মাথা পরিষ্কার? যে কোনও প্রযুক্তি ঝট করে আয়ত্তে করে ফেলতে পারবেন? একদমই নয়, হতেই পারে, আপনি হাতের কাজে বেশি পটু। খুব সহজেই ঘর সাজিয়ে ফেলতে পারেন। হয়তো পাঁচ-সাত রকমের সেলাই আপনার কাছেকোনও ব্যাপারই নয়। তাই নিজে যে বিষয়ে স্বচ্ছন্দ, সেটাতেই মন দিন। কোনও রকম চাপানো ধারণার জন্য জোর করে কোনও কাজ করার চেষ্টা করবে না।
৫। পুরুষ মানেই সুঠাম শরীর আদর্শ। রোগা-পাতলা হলেই ত়়ড়িঘড়ি জিমে গিয়ে আদর্শ চেহারা তৈরি করতে হবে? না হলে কি আপনি কাঙ্খিত পুরুষদের তালিকায় পড়বেন না? এই ধরনের চিন্তাভাবনা এত দিনে বদলানোর সময় চলে এসেছে। নিজের শরীর নিয়ে কোনও রকম হীনমন্যতায় ভোগার কোনও কারণ নেই।