বিরাট কোহলির ফিটনেস। ছবি: সংগৃহীত।
এ বছর আইপিএলে সর্বোচ্চ রানশিকারির কমলা টুপি গিয়েছে বিরাট কোহলির মাথায়। তাঁর দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু মাঝপথ থেকে ছিটকে গেলেও, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে কোনও ঘাটতি রাখেননি কোহলি। তবে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরুটা তাঁর ভাল ভাবে হয়নি।
আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে শূন্য রান করেই সাজঘরে ফিরতে হয়েছিল বিরাটকে। আইপিএল শেষ হতেই ফিটনেসের দিকে কি কম নজর দিচ্ছেন বিরাট? এমন প্রশ্নও উঠেছিল। পরে অনুসন্ধান করে জানা গিয়েছিলে, নিউ ইয়র্কের নতুন পিচের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে না পারার কারণেই রান করতে পারেননি বিরাট। তার সঙ্গে কোহলির ফিটনেসের কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ ম্যাচ থাক বা না থাক, ফিটনেস সচেতন বিরাটের শরীরের প্রতি কড়া নজর থাকে বারোমাস। মাঝেমাঝেই বদলে ফেলেন ফিটনেস এবং ডায়েট রুটিন। আইপিএলের শেষ এবং বিশ্বকাপ শুরুর মাঝের সময়ে কড়া রুটিনে ছিলেন বিরাট।
রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের মাটিতে মুখোমুখি খেলতে নামছে ভারত-পাকিস্তান। গত ম্যাচে রান করতে না পারার খারাপ লাগা, এ দিন মাঠে নেমে বিরাট ভুলিয়ে দেবেন বলে আশা অনুরাগীদের। তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগে ফিটনেসে সতীর্থদের পিছনে ফেলে দিতে কতটা পরিশ্রম করেছিলেন বিরাট?
শত সমালোচনা এবং বিতর্কের মুখে দাঁড়িয়েও বিরাট বার বার বুঝিয়ে দেন অন্য সকলের থেকে তিনি কতটা আলাদা। একটানা ফর্মে থাকার পিছনে যেমন অধ্যবসায় আছে, তেমনই রয়েছে শরীরচর্চা এবং ডায়েটের কঠিন বে়ড়াজাল।
বিরাটের প্রস্তুতি কতটা কঠিন? ছবি: সংগৃহীত।
ভারতীয় ক্রিকেট খেলোয়াড়দের মধ্যে বিরাটের শারীরিক ফিটনেস অন্যতম চর্চার বিষয়। হয়তো সেই কারণেই খেলতে গিয়ে কোনও চোট পেলে, চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে, তা দিন পনেরোর মধ্যেই সারিয়ে তুলতে পারেন বিরাট।
যে কোনও ধরনের শরীরচর্চার ক্ষেত্রেই ওয়ার্ম আপ জরুরি। অনেকেই এই পর্বটিতে বিশেষ জোর দিতে চান না। মূল ব্যায়াম শুরু করার আগে শরীরকে তৈরি করতে না পারলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই এই পর্বের উপর বিশেষ জোর দেন তিনি। ব্যায়াম শুরুর আগে অন্ততপক্ষে আধ ঘণ্টা দৌড় বিরাটের রুটিনে থাকবেই। ওয়ার্ম-আপ ছাড়াও কার্ডিয়ো, স্ট্রেচ, ওজন তোলা, পেটের মাংসপেশি টান টান রাখার দিকে নজর দেন বিরাট।
বিরাটের ফিটনেসের আর একটি মন্ত্র হল, শরীরচর্চার গতে বাঁধা ছকে নিজেকে বেঁধে না ফেলা। শরীরের পেশিগুলির কর্মক্ষমতা বাড়াতে প্রায় প্রতি দিনই স্কোয়াটস্, ডেডলিফ্ট, টুইস্ট, ফ্রন্ট লাঞ্জেসের মতো ব্যায়ামগুলি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে অভ্যাস করেন বিরাট।
সাধারণত বাড়িতে রান্না করা খাবার খেতেই পছন্দ করেন বিরাট। বাড়ির খাবারের মতো পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ভাল খাবার আর দ্বিতীয় হয় না, তা নিশ্চয়ই সকলে জানেন। বাইরের খাবার খেতে ইচ্ছে করলেও এই অনুশাসনে নিজেকে বেঁধে ফেলা, বিরাটের সুস্থ থাকার অন্যতম চাবিকাঠি। বিরাট আগে আংশিক নিরামিষাশী হলেও এখন তিনি পুরোপুরি ভিগান। প্রাণিজ কোনও খাবার তিনি ছুঁয়ে দেখেন না। ডাল, টোফু, কিনোয়ার মতো খাবার খান তিনি। সেই সঙ্গে পাতে থাকে ফল, সব্জি। শরীরে মিনারেলস এবং ভিটামিনের পরিমাণের ঠিক রাখতে শাকসব্জি আর ফল খাওয়া জরুরি বলে মনে করেন বিরাট।
ভিটামিন এবং মিনারেলস ছাড়া ফিটনেসের জন্য প্রয়োজন কার্বোহাইড্রেটও। তাই এই উপাদান-সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু, ব্রাউন রাইস, বিভিন্ন শস্যের মতো খাবার বেশি করে খান তিনি। কারণ এগুলিতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। ফিট থাকতে বাদাম, নানা ধরনের বীজ, অ্যাভোকাডোর মতো খাবার নিয়মিত খান কোহলি।