কী করবেন
•যাঁরা পজ়িটিভ এবং খুব বেশি উপসর্গ আছে, তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হলে ভাল। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করতে হবে। আর পজ়িটিভ অথচ উপসর্গ তুলনায় কম, তাঁদের বাড়িতে বা অন্যত্র কোয়রান্টিনে থাকতে হবে। পরীক্ষার ফল আসার তিন দিন পরে যদি জ্বর না আসে, তা হলে উপসর্গ আসার ১০ দিনের পর থেকে তিনি আর রোগ ছড়াবেন না। ১০ দিনের পরে আরও এক সপ্তাহ বাড়িতে থাকতে হবে। তার পরে স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করা যেতে পারে। নতুন করে পরীক্ষা করানোর আর দরকার নেই।
•অ্যান্টিবডি পরীক্ষার উপরে তেমন কিছু নির্ভর করবে না। সেই পরীক্ষায় যদি রিঅ্যাক্টিভ আসে, তা হলে সেই ব্যক্তি প্লাজমা দিতে পারবেন। কিন্তু, রিঅ্যাক্টিভ মানেই যে তিনি আর আক্রান্ত হবেন না, এই ধারণা ঠিক নয়।
বর্তমান পরিস্থিতি
•এই মুহূর্তে কোভিডের চিকিৎসা পুরোটাই চলছে গবেষণার ভিত্তিতে, শুধু উপসর্গের উপরে নির্ভর করে। মাত্র ৬-৭ মাস হয়েছে এটি দেখা দিয়েছে। ফলে এর নির্দিষ্ট চিকিৎসা বার করা মুশকিল। সার্স এবং মার্স-এর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চিকিৎসায় সাড়া মিলছে। এটা করতে করতেই নির্দিষ্ট চিকিৎসা বেরিয়ে আসবে।
•বয়স্ক মানুষ ছাড়াও যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ বা সুগার আছে এবং কিডনি, লিভারের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের অতিরিক্ত সাবধানে থাকতে হবে। যাঁদের ক্যানসার রয়েছে, সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে তাঁদেরও।
•যদি উপসর্গ দেখে কারও সন্দেহ হয় এবং তার পরে পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তা হলেও কোয়রান্টিনে থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরে আবার পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভাল। সে ক্ষেত্রে পরীক্ষার জন্য লালারস দিয়ে তাঁর বাইরে এ দিক-সে দিক ঘোরা চলবে না।
রোজকার রুটিন
•যাঁদের রোজ অফিসের কাজে বা অন্য কাজে বাইরে বেরোতে হচ্ছে, তাঁরা বাড়ি ফিরে আগে শৌচাগারে গিয়ে জামাকাপড় সাবান-জলে চুবিয়ে দিন। সঙ্গে থাকা পেন, ঘড়ি, বেল্ট, চশমা, মোবাইল স্যানিটাইজ়ার দিয়ে অথবা সাবান-জল দিয়ে মুছে রাখুন। আনাজ জাতীয় জিনিস পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিলেই হবে।
ভ্রান্ত ধারণা
•যে বাড়িতে পরিচারক-পরিচারিকারা কাজ করেন, উপসর্গ না-থাকলে তাঁদের আসা নিয়ে সমস্যা নেই। অনেক ক্ষেত্রে আবাসনের অন্য লোকেরা বা প্রতিবেশীরা আপত্তি করছেন। সেটা ঠিক নয়। পরিচারিকা কাজে আসার পরে ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে তবে কাজ শুরু করা উচিত। পরিচারক বা পরিচারিকা গণপরিবহণে এলে তাঁকেও আগেও শৌচাগারে ঢুকে পোশাক কাচতে হবে। সে ক্ষেত্রে তাঁর জন্য আর এক সেট পোশাক রাখতে হবে।
•পড়শি কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত হবেন না। উপসর্গ কম আছে বলেই তিনি বাড়িতে কোয়রান্টিনে রয়েছেন। প্রয়োজনে তাঁর বাড়ির দরজার সামনে ওষুধ, খাবার এবং অন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস রেখে দিয়ে আসুন। এতে আপনার কোনও ক্ষতি হবে না।
তথ্যসূত্র: শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় (মেডিসিন-এর চিকিৎসক)