‘ট্রু ন্যাট’ প্রক্রিয়ায় টেস্ট হলে করোনার পরীক্ষা অনেক সহজসাধ্য হবে। ছবি: পিটিআই।
করোনা পরীক্ষা করতে এ বার আগের পদ্ধতির সঙ্গে ‘ট্রু ন্যাট’ পদ্ধতিরও শরণ নিতে অনুমোদন দিল ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। শুক্রবার এই পদ্ধতির কথা জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, ‘ট্রু ন্যাট’ প্রক্রিয়ায় টেস্ট হলে করোনার পরীক্ষা অনেক সহজসাধ্য হবে। এত দিন শুধুমাত্র পিসিআর বা পলিমারেস চেন রিঅ্যাকশনের উপর ভিত্তি করে করোনার পরীক্ষা চলছিল।
কী এই ‘ট্রু ন্যাট’ পদ্ধতি?
‘ন্যাট’-এর পুরো কথা ‘নিউক্লিক অ্যাসিড অ্যামপ্লিফিকেশন টেস্ট’। এই পদ্ধতিতেও আরএনএ-কে বার বার কপি করে তার ভিতরে থাকা নিউক্লিক অ্যাসিডকে অ্যামপ্লিফাই করা হয়। এতে ওই আরএনএ থেকে থেকে ভাইরাসকে আলাদা করে চিহ্নিত করা সহজ হয়। যক্ষ্মার বেলাতেও এই পরীক্ষায় শরণ নেওয়া হয়।
আগের পদ্ধতি কী?
পলিমারেস চেন রিঅ্যাকশনের সাহায্যে এত দিন করোনার পরীক্ষা চলছিল। সেখানেও কোষের আরএনকে বার বার কপি করে একটি পলিমার (বৃহৎ অণু বা মাইক্রোমলিকিউল)-এর মালা বা চেন তৈরি করে। সেখান থেকে ভাইরাসকে আলাদা করা হয়। এতেও রোগনির্ণয় নির্ভুল ভাবে সম্ভব।
আরও পড়ুন: ভারতে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা কি সত্যিই নিয়ন্ত্রণে?
এসি থেকেও ছড়ায় সংক্রমণ, রুখতে কী কী করবেন?
এত দিন শুধুমাত্র পিসিআর বা পলিমারেস চেন রিঅ্যাকশনের উপর ভিত্তি করে করোনার পরীক্ষা চলছিল।
তা হলে কোথায় সমস্যা হচ্ছিল?
পিসিআর বা পলিমারেস চেন রিঅ্যাকশনের খরচ যেমন বেশি, তেমন এটি সময়সাপেক্ষও। এই পদ্ধতিতে মাত্র কয়েকটি জায়গায় পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছিল। ফলে কোনও রোগীর স্যাম্পেল আগে সেখানে পাঠাতে হচ্ছিল। ফলে সময় লাগছিল। এলেও তা দূরে পাঠাতে হলেএকসঙ্গে অনেক কেস এলে এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এই পদ্ধতির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রও সব জায়গায় মেলে না।
ট্রু ন্যাট-এ কী সুবিধা?
যেহেতু যক্ষ্মার পরীক্ষা দেশের প্রত্যন্ত গ্রামীণ হাসপাতালেও হয়, তাই নতুন এই পদ্ধতি অর্থাৎ ‘ট্রু ন্যাট’-এর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র সর্বত্র মিলবে। এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা হলে স্যাম্পেল দূরে পাঠাতে যে সময় ব্যয় হচ্ছিল, তা বাঁচবে। ট্রু ন্যাটের খরচও অনেক কম।
ট্রু-ন্যাট নিয়ে আশাবাদী কলকাতার চিকিৎসকমহলও। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ‘‘আইসিএমআর এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দেশে করোনা পরীক্ষার স্যাম্পেল পাঠানো ও রিপোর্ট আসতেও যে সময় ব্যয় হচ্ছিল, তা কমবে। কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছিল, রিপোর্ট আসার আগেই মারা যাচ্ছিলেন রোগী। সেই প্রতিকূলতা এ বার সরবে।’’
একই মত সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নন্দীরও। তাঁর কথায়, ‘‘এই পদ্ধতি ঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারলে এটি করোনা রোখার ক্ষেত্রে একটা বড় উপায় হয়ে দেখা দিতে পারে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)