কেরলে নরবলি! প্রতিকী ছবি
‘মানুষকে বলি দিলেই আর্থিক সমৃদ্ধি হবে’— এক ভণ্ড সাধুবাবার এমন বচনেই প্রাণ গেল দুই মহিলার। ঘটনাটি ঘটেছে কেরলে। এই ঘটনায় দু’জনকে আটক এবং এক জনকে গ্রেফতার করেছে কেরলের পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মৃত দুই মহিলা পেশায় লটারির টিকিট বিক্রি করতেন। তিন মাস আগে দুই মহিলার বাড়ির লোকই পুলিশের কাছে তাঁদের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। পেশায় বদ্যি ভগবল সিংহ ও তাঁর স্ত্রী লালিয়ার বাড়ির পিছনে মাটি খুঁড়ে পুলিশ ওই দুই মহিলার টুকরো করা দেহ উদ্ধার করে। কোচি থানার পুলিশ সেই দেহগুলির ডিএনএ পরীক্ষা করে দেহগুলি শনাক্ত করে।
ঘটনার সূত্রপাত আট মাস আগে। যখন মহম্মদ সাফি ওরফে রশিদ নামক এক ব্যক্তি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেন যে, তাঁর টোটকা মেনে চললেই ধনবান হওয়া যাবে। পাঠানমথিত্তার ওই দম্পতি ভণ্ড সাধু বাবার ওই বিজ্ঞাপন পড়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সাফি মাসের পর মাস ধরে ওই দম্পতিকে বোঝাতে থাকেন যে, নরবলি দিলেই তাঁদের ভাগ্যে ধনসম্পদ নিশ্চিত।
বাঁদিকে রোশিলি ও ডানদিকে পদ্মা। ( মৃত দুই মহিলা)
কোচির পুলিশ জানায়, রোশিলি নামক এক লটারি টিকিট বিক্রেতাকে ভুল বুঝিয়ে সেই দম্পতির বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে বিভিন্ন নিয়ম-রীতি মেনে তাঁকে হত্যা করা হয়। সবার আগে তাঁর দেহ থেকে মাথা ছিন্ন করে বাকিটা টুকরো টুকরো করে কবর দেওয়া হয়। তবে ওই ঘটনার বেশ কিছু দিন পরেও দম্পতির আর্থিক অবস্থার কোনও রকম উন্নতি না হওয়ায় দম্পতি সাফির কাছে জবাব চান। সাফি তাঁদের বোঝান, আরও এক জনকে বলি দিলে তবেই তাঁদের মন্দা কাটবে। সাফির সাহায্য নিয়েই দ্বিতীয় মহিলার খুন করেন দম্পতি। এই জন্য সাফিকে তাঁরা লক্ষ লক্ষ টাকাও দেন। দ্বিতীয় মহিলার ফোন ট্র্যাক করেই সাফির খোঁজ পায় পুলিশ।
অভিযুক্ত দম্পতি।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের এই ঘটনায় স্তম্ভিত। দেশের যে অংশে সাক্ষরতার হার সবচেয়ে বেশি সেখানে আর্থিক সমৃদ্ধি পেতে খুনের ঘটনা সত্যিই মেনে নেওয়া যায় না, বক্তব্য তাঁর। তিনি জনগণকে আরও সতর্ক থেকে এই ধরনের নৃশংস প্রথা সামনে নিয়ে আসার আর্জি জানিয়েছেন, যাতে তা বন্ধ করা সম্ভব হয়। জাতীয় মহিলা কমিশনও এই বিষয় কেরল পুলিশের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছে। কেরল হাইকোর্টও এই ঘটনায় বেশ উদ্বিগ্ন।