আত্মহননের প্রবণতা ঠেকাতে পারে এই ‘টয়লেট পেপার’। ছবি- সংগৃহীত
উদীয়মান সূর্যের দেশে ‘আত্মহত্যা’ বহু পুরনো প্রথা। যুদ্ধে প্রতিপক্ষের কাছে হেরে গিয়ে, স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করতেন সামুরাইরা। সেই প্রথাই চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। শুধু তা-ই নয়, আত্মঘাতী হওয়ার জন্য এখানে বিশেষ একটি জঙ্গলও আছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’-র তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘ দিন ধরেই বিশ্বে শীর্ষ স্থানে রয়েছে জাপান। জাপানের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিগত বছরগুলির তুলনায় করোনা অতিমারির সময়ে দেশে আত্মঘাতীর সংখ্যা ছিল সব চেয়ে বেশি।
দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই আত্মহননের প্রবণতা ঠেকাতে ব্যতিক্রমী একটি উপায় খুঁজে বার করেছে জাপান সরকার।
আত্মহত্যা করার এই মানসিকতা জন্ম নেয় মানুষের একাকিত্ব থেকে। ঘরে সব সময় মানুষ সেই সুযোগ পান না। পাশের মানুষটি পাশে থেকেও বুঝতে পারেন না ওই ব্যক্তির মনের অবস্থা। একমাত্র শৌচাগারই এমন একটি জায়গা, যেখানে মানুষ একেবারে একা থাকেন। এই সময়টি তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত সময়। এই সময়েই কারও মনের মধ্যে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার মতো নেতিবাচক চিন্তা গ্রাস করে। তাই আত্মহত্যা ঠেকাতে ‘টয়লেট পেপার’-এ লেখা থাকবে ‘হেল্পলাইন নম্বর’ এবং আশ্বাসমূলক কিছু বার্তা।
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তাঁরা শৌচাগারে ব্যবহৃত ‘টয়লেট পেপার’-এ ছাপার অক্ষরে লিখে রাখছেন বার্তা। যা সেই নিঃসঙ্গ মুহূর্তে তাঁদের একাকিত্ব অনুভব করতে দেবে না। মনে খারাপ কোনও চিন্তা দেখা দিলেই চোখ যাবে ওই পেপারের দিকে। চাইলেই হেল্প লাইন নম্বরে ফোন করে সেখান থেকে মনোবিদের সাহায্য নিতে পারবেন অবসাদগ্রস্ত ব্যক্তি।
যদিও আত্মহত্যার ধারণা এক একটি দেশে এক এক রকম। কোথাও আত্মহত্যা করা মহাপাপ, আবার কোথাও মুক্তির পথ। অবস্থার পরিবর্তন হলেও জাপানে আত্মহত্যার হারে কোনও ফারাক নজরে আসেনি। তাই অভিনব এই উপায় বেছে নিয়েছেন তাঁরা।