Parenting Tips

ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকতে পারে না সন্তান? ইতিবাচক দিকে ঘুরিয়ে দিন সেই আগ্রহ

ইন্টারনেটের যুগে নেটদুনিয়া থেকে শিশুদের দূরে রাখাও কার্যত অসম্ভব। নেট ঘাঁটলেই বকাঝকা না করে বিষয়টিকে যদি সুকৌশলে ইতিবাচক দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায়, তবে সমাজমাধ্যমই শাপে বর হতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:১৫
Share:

ইন্টারনেটের যুগে নেটদুনিয়া থেকে শিশুদের দূরে রাখাও কার্যত অসম্ভব। ছবি: প্রতীকী

দিনরাত ফোনে মুখ গুঁজে বসে থাকে সন্তান। সন্তানের বয়স ৮ হোক বা ১৮, সমাজমাধ্যমে আসক্তি নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। একেবারে খুদেদের ক্ষেত্রে থাকে গেম কিংবা কার্টুনের আকর্ষণ আর কৌশোরে পা দেওয়ার পর বয়ঃসন্ধির কৌতূহল। ইন্টারনেটের যুগে নেটদুনিয়া থেকে শিশুদের দূরে রাখাও কার্যত অসম্ভব। তাই ইন্টারনেট ঘাঁটলেই বকাঝকা না করে বরং বিষয়টিকে যদি সুকৌশলে ইতিবাচক দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায়, তবে নেটমাধ্যমই শাপে বর হতে পারে।

Advertisement

১। বন্ধুত্ব বাড়ুক

পড়াশোনা চাপ বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিশুদের একাকিত্ব। যৌথ সংসারে ভাঙন, আলাদা আলাদা ফ্ল্যাটে থাকা, খেলার মাঠের অভাব, সব মিলিয়ে বন্ধু তৈরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে অনেক শিশুকেই। ফলে চাপ বাড়ছে শিশু মনে, সমস্যা হচ্ছে মানুষের সঙ্গে মিশতে। এখানেই মুশকিল আসান হতে পারে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম কিংবা টুইটারের মতো মাধ্যম। বিশেষ করে কৈশোরে পা দেওয়ার পর বন্ধুত্বের সীমা বাড়াতে কাজে আসতে পারে সমাজমাধ্যম। তবে মাথায় রাখতে হবে, বন্ধুত্বের অছিলায় অনেক রকম প্রতারণার ফাঁদও থাকে সমাজমাধ্যমে। সন্তানকে সেই সম্পর্কে সতর্ক করার দায়িত্ব মা-বাবারই

Advertisement

২। দেখব এ বার জগৎটাকে

শৈশব থেকে কৈশোরে পা দেওয়ার সময়ে বদ্ধ ঘরে মন না টেকা অস্বাভাবিক নয়। বয়ঃসন্ধির কালে বাইরে নানা বিষয়ে কৌতূহল তৈরি হওয়াও স্বাভাবিক। আর এই কৌতূহল নিরসনে বিভিন্ন শিক্ষামূলক ওয়েবসাইটের জুড়ি মেলা ভার। বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে সচেতনতাই হোক বা কৃষক আন্দোলনের মতো সামাজিক আন্দোলন; সব কিছু নিয়েই প্রাথমিক ধারণা মিলতে পারে সমাজমাধ্যমের নানা শিক্ষামূলক ভিডিয়োতে। সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধি করতেও কাজে আসতে পারে ইন্টারনেট। এখন বহু খবরের কাগজ অনলাইনেও প্রকাশ পায়। সেগুলিও দেখার অভ্যাস করাতে পারেন সন্তানকে।

শিশুদের ব্যবহারের উপযোগী অ্যাপও এনেছে একাধিক সংস্থা। ছবি: সংগৃহীত

৩। জীবনশৈলীর পাঠ

বয়ঃসন্ধির কালে মানসিক স্বাস্থ্য, যৌনতা, লিঙ্গপরিচয়ের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে কথা বলতে সঙ্কোচবোধ করে অনেকেই। মা-বাবার সঙ্গেও বহু ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলি নিয়ে সরাসরি কথা বলতে পারে না সন্তান। সমাজমাধ্যমে এই বিষয়গুলি নিয়ে নানা সচেতনতামূলক প্রচার চলে। যা বিষয়গুলি নিয়ে সাবলীল ভাবে কথা বলতে সাহায্য করতে পারে আপনার সন্তানকে।

৪। সৃজনশীলতার প্রকাশ

নিজের আঁকা ছবি, সদ্য শেখা আবৃত্তি কিংবা ভালবেসে গেয়ে ওঠা গানে কয়েকটি প্রশংসা শিশুদের মনে সঞ্চার করতে পারে অনাবিল আনন্দ। কৌশোরের সেই সৃজনশীলতা প্রকাশের অদ্বিতীয় মাধ্যম হতে পারে নেটদুনিয়া। ফেসবুকে প্রকাশ করা কোনও গানের ভিডিয়োতে আসা লাইক উৎসাহ দিতে পারে।

তবে ভাল দিকের পাশাপাশি, সমাজমাধ্যমে রয়েছে নানা বিপদও। তাই সেখানে সন্তানদের আনাগোনা নিয়ে কিছুতেই চিন্তামুক্ত হতে পারেন না অভিভাবকরা। সে ক্ষেত্রে উপায় হতে পারে ‘পেরেন্টাল লক’-এর মতো ব্যবস্থা। তা ছাড়া শিশুদের ব্যবহারের উপযোগী অ্যাপও এনেছে একাধিক সংস্থা। তবে অভিভাবকদের অতিরিক্ত নজরদারি যেন শিশুর মনে ভয় বা অবিশ্বাসের কারণ না হয়ে ওঠে, সতর্ক থাকা দরকার সেটা নিয়েও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement