ছবি ও তথ্য: অনন্যা ইন্দু
কমিক্সের চরিত্র, বিখ্যাত ব্যক্তির পোর্ট্রেট বা থ্রিডি হাওড়া ব্রিজ... ম্যাগনেটে বৈচিত্রের শেষ নেই। তবে তা খুঁজতে সময় নষ্ট না করে বাড়িতে বসেই তৈরি করতে পারেন সুন্দর সুন্দর চুম্বক। কোনও কিছুই ফেলনা নয়, হাতের কাছে যা রয়েছে, তা-ই হতে পারে ম্যাগনেটের উপকরণ। আবার এমন চুম্বকের আকর্ষণেই ছবি আঁকার শখটিও পূরণ হতে পারে। ক্লে দিয়েও তৈরি করতে পারেন আকর্ষক চুম্বক। বানানোর আগে আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট শোরুম বা অনলাইনে ম্যাগনেট কিনে রাখুন। ভাল আঠার মাধ্যমে ম্যাগনেট লাগাতে হবে ছবি বা মডেলের পিছনে। আঠা ভাল না হলে তা খুলে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বার জেনে নিন কী কী দিয়ে তৈরি করতে পারেন এই ম্যাগনেট।
• ড্রয়িং ম্যাগনেট: আঁকতে জানলে কাগজে ছবি আঁকুন আগে। এ বার কাঠ বা পিচবোর্ডের উপরে আঠা দিয়ে আটকে নিন ছবিটি। কাঠ বা পিচবোর্ডকেও ক্যানভাস বানাতে পারেন। ছবির ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখতে অবশ্যই বার্নিশ করবেন শেষে। ম্যাগনেট লাগিয়ে সেঁটে দিন ফ্রিজে।
• ডেকুপাজ: আইফেল টাওয়ার, তাজমহল, পোর্ট্রেট বা আবোল-তাবোলের ছবি রাখতে চান ফ্রিজ ম্যাগনেটে? তা-ও সম্ভব! উপায়ের নাম, ডেকুপাজ। এটি একটি পাতলা ন্যাপকিনের মতো পেপার, তার মধ্যে নানা ধরনের ছবির প্রিন্ট করা থাকে। একটি বিশেষ ধরনের আঠার সাহায্যে এই ডেকুপাজ ছবিগুলো কাঠ, প্লাস্টিক বা পাথরের টুকরোর উপরে আটকে ফেলুন। ছবি দীর্ঘস্থায়ী করতে দ্বিতীয় বার আঠা বুলিয়ে নিন। ম্যাগনেট বসিয়ে ফ্রিজে আটকান।
• ক্লে ম্যাগনেট: ফ্রিজ ম্যাগনেটের মধ্যে থ্রিডি এফেক্ট আনতে চাইলে, তৈরি করুন এয়ার ডাই ক্লে বা পেপার পাল্প ক্লে দিয়ে মনের মতো ফিগার। তার উপরে আঠা দিয়ে আটকে দিন ম্যাগনেট। নানান ফলের ছোট সংস্করণ, কোনও বইয়ের প্রচ্ছদ বা শহরের কোনও ভাল লাগা দ্রষ্টব্যকেও তুলে ধরতে পারেন ক্লে’র মাধ্যমে। তবে বিষয়টি সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা দরকার। অপটু হলে বাজারচলতি মোল্ড কিনেও বানিয়ে নিতে পারেন। তৈরি হয়ে গেলে রং লাগানোর পরে বার্নিশ করতে ভুলবেন না। এতে রং টিকবে বেশি।
•রকমারি চুম্বক: ছোট কৌটো, লম্বাটে ঢাকনা, বোতলের ছিপি, হোমিয়োপ্যাথি ওষুধের ছোট্ট শিশি দিয়েও হতে পারে চমৎকার ফ্রিজ ম্যাগনেট। ছিপি পরিষ্কার করে, রংচঙে চেহারা দিয়ে একই ভাবে চুম্বকের সাহায্যে সেঁটে দিন। এ ছাড়া মিনিয়েচার প্লাস্টিকের টবে বাহারি রং লাগিয়ে ম্যাগনেট দিয়ে আটকাতে পারেন। টব, ঢাকনা, শিশির মধ্যে জল ঢেলে এমন ছোট্ট গাছ লাগান, যা জলের মধ্যেই বেঁচে থাকে। চারপাশের পরিবেশ বদলাতে বেশিক্ষণ সময় নেবে না। কিছু দিন অন্তর জল বদলে দিন।
• ছবির গল্প: অ্যালবামের পুরনো ছবির পিছনে থাকা গল্পগুলো চোখের সামনে পেতে, সেই ছবি হতে পারে চুম্বকের ক্যানভাস। পছন্দের ছবি বেছে কার্ডবোর্ডের উপরে আঠা দিয়ে আটকে নিন। ছবির ওজন একটু ভারী করে তোলার পরই, ছবির পিছনে চুম্বক লাগিয়ে আটকে দিন ফ্রিজে।
• কাপড়ের ম্যাগনেট: হাতি, মাছ, ঘোড়া, প্রজাপতি... এ সবও হতে পারে ম্যাগনেট। কাপড়ের মধ্যে তুলো পুরে সেলাই করে তৈরি করুন এমন পছন্দের পশুপাখি। তারপর চুম্বকের সাহায্যে সেঁটে দিন ফ্রিজে।
• শখের চুম্বক: ছোটবেলার শখের কোনও খেলনারও রূপান্তর ঘটতে পারে ম্যাগনেটে। পুতুল, খেলনা বা শখের জিনিস ঝাড়াই বাছাই করে, ম্যাগনেট লাগিয়ে নিন।
জরুরি কথা
• ম্যাগনেট ফ্রিজ বা আসবাবের কোনও ক্ষতি করে না।
•যার উপরে ম্যাগনেট বসানো হচ্ছে, তার ওজন খুব বেশি হলে ম্যাগনেট ধরে রাখতে পারবে না।
• ম্যাগনেট বসানোর সময়ে ব্যালান্স যাতে নষ্ট না হয়, সে দিকে লক্ষ রাখবেন। না হলে বস্তুটি পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। কাচের হলে তা ভেঙে যাবে।
• বার্নিশ বা ফিনিশিং কোট ঠিক মতো না ধরলে, ম্যাগনেটের উপরের ছবি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
• ম্যাগনেট পরিষ্কার করতে শুকনো কাপড় বা টুথব্রাশের সাহায্য নিতে পারেন। জল ব্যবহার না করলেই ভাল হয়।
এ বার বাড়িতে বসেই তৈরি করুন মনের মতো ম্যাগনেট, প্রিয়জনকে উপহারও দিতে পারেন।