প্রতীকী ছবি।
বিমলবাবুর মাথায় হাত। পুজোর মধ্যে দেহ রাখল ওয়াশিং মেশিন। আর তার ঠিক পর পরই মাইক্রোওয়েভ ওভেনটি। দুটোরই বয়স ১৩ পেরিয়েছে। তখন তিনি প্রতিষ্ঠিত চাকুরিজীবী। কোরীয় দুই সংস্থা গৃহস্থের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল এই দুই মেশিনের। তার পর থেকে যত দিন গিয়েছে ওই দু’টির উপর নির্ভরতা উত্তরোত্তর বেড়েছে।
যন্ত্র দু’টি খারাপ হলে কী করবেন, এ প্রশ্নও মাথায় আসেনি। মোবাইল ফোন বা রেফ্রিজারেটর তো চিরকাল বিনিময় করেই এসেছেন। তাই ফেলে দিতে হলে কী করবেন তা কোনও দিনই ভাবতে হয়নি।
কিন্তু পুজোর মধ্যে দু’টি মেশিন জবাব দিয়ে দেওয়ায় মাথায় হাত বিমলবাবুর। বছর তিনেক হল অবসর নিয়েছেন। তখনও মেশিন দু’টি সুস্থ স্বাভাবিক ভাবেই পরিবারের অংশ হিসাবে কাজ শেষের জানান দিত নানান আওয়াজ করে। কিন্তু হঠাৎ এই ভাবে জবাব দেওয়া!
পাড়ার মণ্ডপে কথাটা পারতেই নানান পরামর্শ। কিন্তু মোদ্দা কথাটা হল যাঁরা পুরনো জিনিস কেনেন তাঁদের বেচে দেওয়া। কিন্তু বিমলবাবুর মন মানে না। বৈদ্যুতিন বর্জ্য বলে কথা। ছেলে বাইরে থাকে। কিন্তু পাড়ায় তার বন্ধুর অভাব নেই। তাদেরই এক জন বলল, “কাকু ইন্টারনেটে দেখে নিন। সরকারি ব্যবস্থায় বাড়ি বয়ে এসে আপনার যন্ত্রণা নিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।”
বাড়িতে এসে নেট ঘাঁটতেই মুখে হাসি আর ধরে না বিমলবাবুর। কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যবস্থাপনায় ২০১৮ সালের নতুন আইনে তৈরি হয়েছে বৈদ্যুতিন বর্জ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা। প্রতি রাজ্যেই আছে এই ব্যবস্থা। মোবাইলের পুরনো ব্যাটারি থেকে পুরনো রেফ্রিজারেটর, নিয়ে যাবে সব। এই ব্যবস্থায় অংশ নিচ্ছে বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরির সংস্থারাও। এই সব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও আপনার সমস্যার সুরাহা হবে। সার্চ করুন ‘ই-ওয়েস্ট ডিসপোজাল ইন্ডিয়া’ লিখে। আর না হলে বৈদ্যুতিন পণ্যের দোকানে বলুন। বিনিয়োগ মূল্য না মিললেও আপনার ঘাড় থেকে বোঝা নামবে। আর হ্যাঁ পরিবেশও বাঁচবে।