এই পুজোয় সেজে উঠুক ঘরের কোণ।
এমনটা প্রায়ই দেখা যায় যে, কোনও একটি উৎসব বা অনুষ্ঠানে খুব সেজেগুজে গিয়েছেন কোনও এক জন বিশিষ্ট মহিলা। কিন্তু কোথায় যেন একটা খামতি রয়ে গিয়েছে। কেউ আলাদা করে তাঁকে দেখছেন না। তাকাচ্ছেনই না।এতে রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। মন খারাপও হবে।
আবার এর উল্টোটাও ঘটে কখনও কখনও। কেউ হয়তো খুবই সাদামাটা পোশাকে গেলেন কোথাও। সাজগোজ একেবারেই নেই। কপালে শুধু একটা বড় টিপ। কিন্তু তাতেই সকলের প্রিয় হয়ে উঠেছেন। সব আলো যেন তাঁকে ঘিরেই। সবাই শুধু তাঁকেই দেখছেন।
অন্দরসজ্জার ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটে। খুব বেশি সাজালে-গোছালে বাড়ির অন্দরসজ্জার গুরুত্ব যেন কোথায় হারিয়ে যায়! আর ঠিক সে কারণেই অন্দরসজ্জার ক্ষেত্রে পরিমিতি বোধটা দরকার। খুব বেশি সাজসজ্জা নয়। প্রয়োজনীয় আসবাব এবং কিছু সামগ্রীতেই ঘর হয়ে উঠবে সুন্দর।
আরও পড়ুন: রান্নাঘর সেজে উঠুক আধুনিকতার ছন্দে
দেওয়ালের চারটি দিকই যে খুব ভাল ভাবে সাজিয়ে তুলতে হবে এমনটা জরুরি নয়। বরং বিশেষ কোনও দেওয়াল, কিংবা শুধুমাত্র ঘরের একটা কোণকেই সাজিয়ে তোলা যেতে পারে
ঘরের কোণগুলো কিছুটা অবহেলায় থাকতে দেখা যায় সারা বছর। যতই প্রতি দিন ঝাড়া-মোছা করা হোক না কেন, অযত্নের ছাপ স্পষ্ট বোঝা যায়৷ যা-ই করুন না কেন, মলিনতা প্রথম এই জায়গাগুলোকেই স্পর্শ করে।
পুজোর সময় এই কোণগুলোর দিকে যদি নজর দেওয়া যায়, সোজা কথায় সাজিয়ে তোলা যায়, তা হলে বেশ হয়। তবে হ্যাঁ, ঘরের সবক’টা কোণ না সাজিয়ে, একটি কিংবা দু’টি কোণ সাজিয়ে তোলাই ভাল।
আরও পড়ুন: অজানা উৎসের উৎসারিত আলোতে সেজে উঠুক ঘর
ঘরের কোণগুলোতে সাধারণত, বিশেষ ধরনের তাক রাখা হয়। সাধারণত সেগুলি বানানো হয় রট আয়রন, কাঠ অথবা কাচ দিয়ে। তার উপর নানা সুদৃশ্য ঘর সাজানোর জিনিস রাখা হয়। তাতে খানিকটা বদল আনা যেতে পারে। ঘরের যে কোনও একটা কোণে তাক রাখা হোক। মাটি থেকে ধাপে ধাপে উঠবে সেটি। তাতে সারিবদ্ধভাবে কিছু গাছ-সমেত টব রাখতে পারেন। নীচ থেকে উপর পর্যন্ত এভাবেই সাজানো যায়।
আর যদি তাকটা কোনও ভাবে জানলার পাশে হয়, তা হলে তো কথাই নেই। সরাসরি গাছের রোদ এসে পড়বে। তা যদি না সম্ভব হয়, তাহলে আপনাকেই একটু কষ্ট করতে হবে। গাছগুলোকে নিয়মিত রোদে বের করতে হবে আপনাকেই।
একটা কথা মাথায় রাখবেন, টবের নীচে ফাইবার, সিরামিক অথবা প্লাস্টিকের পাত্র রাখবেন। এতে অতিরিক্ত জলে মেঝে নোংরা হবে না। তবে হাঁটাচলার জন্য যথেষ্ট জায়গা রেখে তবেই কোণ সাজাবেন।
ঘরের বিশেষ একটি কোণে দেওয়ালের উপর একটি নিম্নমুখী আলো লাগাতে পারেন। তার নীচে বেশ কিছু ছবি ঝুলিয়ে দিন। তবে বাঁধানোটা যেন সুন্দর হয়। জায়গা বুঝে ছবিগুলি আয়তাকার বা বর্গাকারভাবে ফ্রেম করাবেন। আলোর নীচে ছবিগুলি দেখতে এক কথায় দারুণ লাগবে।
ছোট ছোট ঝর্না রাখলে কিন্তু বেশ দেখায়। যে কোনও একটি কোণে উঁচু একটি জায়গা তৈরি করুন।তার উপর ছোট ঝর্না রাখতে পারেন। বাড়িতেও তৈরি করা যায়। তবে খেয়াল রাখবেন, জল যেন জমতে না পারে।
ঘরের কোণ চওড়া হলে রঙিন মাছের অ্যাকোরিয়াম রাখা যায়। তবে পরিচর্যা জরুরি। যথেষ্ট পরিমাণ আলো পৌঁছচ্ছে কি না তাও দেখা দরকার।
ছবি সৌজন্য: লেখক।
(লেখক অন্দরসজ্জা বিশেষজ্ঞ)