মূলধন বাড়াতে সঞ্চয়ে জোর দিন। ছবি: শাটারস্টক।
কোভিড ও আমপান (প্রকৃত উচ্চারণ উমপুন) পরবর্তী পৃথিবীতে টিকে থাকতে গেলে খরচ কমাতে হবে। অন্তত আগামী কয়েক বছর এই খরচের রাশ না কমালে সমস্যায় পড়বেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তরা।
বহু সংস্থাই ইতিমধ্যে ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া চালু করে দিয়েছেন। অনেকে বেতন দিচ্ছেন ১০-৫০ শতাংশ কেটে। আগামী দিনে বেশ কিছু ছোট ব্যবসাও যে মুখ থুবরে পড়বে, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তার উপর কমছে সুদের হার। ফলে যাঁরা এর উপর নির্ভর করে যাঁরা সংসার চালান, তাঁদেরও বড় কঠিন সময় এটি।
আদতে ঘোরতর আর্থিক মন্দার হাত এড়িয়ে কেউই আর বাঁচতে পারবেন না। কাজেই বিপদ বেড়ে যাওয়ার আগেই খরচের হাত কমানো আয়ত্তে আনা জরুরি। কিন্তু খরচ কমান বললেই ব্যয়সঙ্কোচ সব সময় সম্ভব হয় না। তার জন্য প্রয়োজন পড়ে কিছু নিয়ম মেনে চলার।
আরও পড়ুন: মাস্ক পরে ভারী কাজ বা ব্যায়াম করছেন? অজান্তেই বিপদ ডেকে আনছেন কিন্তু!
ক্যাব বা ট্যাক্সির চেয়ে আস্থা রাখুন বাসে-ট্রামে।
কী ভাবে কমাবেন
• যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকু খরচ করুন। আপাতত সমস্যা নেই বলে শৌখিন জিনিস কিনে পয়সার অপচয় করবেন না, কাল কেমন দিন আসছে কে বলতে পারে!
• গত দু’মাসে ঘরোয়া খাবার খাওয়ার যে অভ্যাস গড়ে উঠেছে, তা বজায় রাখুন। তাতে স্বাস্থ্য যেমন ভাল থাকবে, খরচও কমবে। এমনিও এখন বাইরে খাওয়া ঠিক নয়। কে কী ভাবে খাবার বানাচ্ছেন, কী ভাবে পরিবেশন করছে, তা জানা নেই। তাই সাবধান হওয়াই ভাল।
• বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে যান। অফিস ক্যান্টিনে খাওয়া নিরাপদ নাও হতে পারে। খরচের ব্যাপারও আছে।
• জামাকাপড় যতটুকু না কিনলেই নয়, ততটুকুই কিনুন। প্রথমত পয়সা বাঁচবে। ট্রায়াল রুম থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকবে না। তা ছাড়া এমনিও আগামি বছরখানেক উৎসব-অনুষ্ঠান খুব একটা হবে না। কাজেই যা আছে, তাই দিয়ে কাজ চালিয়ে দিন।
• রূপচর্চায় বেশি খরচ করার দরকার নেই। মুখের অর্ধেক তো ঢাকা থাকবে মাস্কে, মাথা ঢাকা থাকবে টুপি বা ওড়নায়। তা ছাড়া পার্লারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারবেন না, যা থেকে কোভিডের আশঙ্কা আছে। কাজেই মা-ঠাকুমার ঘরোয়া রূপটানে ভরসা রেখে চলুন। চুল কাটতে হয়তো ২-৩ মাসে এক বার যেতে হতে পারে। তার বেশি না যাওয়াই ভাল।
• কাটছাঁট করুন উপহারের বাজেটে। উৎসবে-অনুষ্ঠানে উপহার দেওয়া-নেওয়ার পাট তুলে দিলেই সবচেয়ে ভাল।
• বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান অন্তত এই বছরের জন্য মুলতুবি রাখুন। এর পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য কিছু টাকা জমানোর চেষ্টা করুন।
আরও পড়ুন: এই অস্থির সময়ে যখন তখন হতে পারে অ্যাংজাইটি অ্যাটাক, কী ভাবে সামলাবেন?
সঞ্চয়ে ফাঁকি নয়।
টাকা জমানোর পদ্ধতি
রোজগারের ৫-১০ শতাংশ অন্তত জমান। শেয়ার মার্কেট এখন খুব নড়বড়ে। কাজেই খুব অভিজ্ঞ না হলে ওই রাস্তায় না যাওয়াই ভাল। রেকারিং ডিপোজিট মোটের উপর নিরাপদ। সেখানে টাকা রাখতে পারেন। টাকা যেন সরাসরি মাইনে থেকে কেটে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
বিনিয়োগ করুন স্বাস্থ্যবিমায়। যত বেশি করা সম্ভব। করা থাকলে টপ আপ করুন নিয়মিত, যাতে বর্ধিত চিকিৎসা-খরচের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেন।
মাইনে পাওয়ার পর বাড়ি ভাড়া, ইলেকট্রিক বিল, স্কুলের মাইনে ইত্যাদি মিটিয়ে দিন প্রথমেই।
যে টাকা রইল তার ১০ শতাংশ সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা রাখুন। বছরের শেষে প্রিমিয়াম দিতে বা কোনও দরকারে কাজে লাগবে।