বাড়তি অক্সিজেনের জোগান দিতে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর কার্যকরী। ফাইল চিত্র
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে জেরবার গোটা দেশ। অক্সিজেনের আকাল এখন নিত্য ভোগান্তি। হাসপাতালে বেড না পেয়ে বহু রোগী কোভিডের গুরুতর পরিস্থিতিতেও বাড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই প্রিয়জনেরা অক্সিজেন কনসেনট্রেটার কেনার বা ভাড়া নেওয়ার কথা ভাবছেন। একটি ছোট্ট যন্ত্র যার সাহায্যে বাড়তি অক্সিজেন ভরা বাতাস জোগান দেওয়া সম্ভব, তা হল অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর।
কখন ব্যবহার করা প্রয়োজন
যে কোভিড রোগীদের খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এবং রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৪এর নীচে নেমে গিয়েছে, তাঁদের তক্ষুণি অক্সিজেন থেরাপি শুরু করা প্রয়োজন, যাতে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রতঙ্গের ক্ষতি না হয়। তাই বাড়তি অক্সিজেনের জোগান দিতে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর কার্যকরী। অনেকটা শীততাপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রের মতোই কাজ করে. বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে সেটাই অন্য ভাবে জোগান দেয় রোগীর শরীরে। বলা যেতে পারে, বাতাসে যত অক্সিজেন মজুত থাকে, সেটা নিয়ে তার মাত্রা আরও বাড়িয়ে রোগীকে সাহায্য করে।
কী ভাবে কাজ করে এই যন্ত্র
ঘরের বাতাস থেকে অক্সিজেন আলাদা করে সেটার মাত্রা বাড়িয়ে রোগীকে জোগান দেয় এই যন্ত্র। অক্সিজেন সিলিন্ডারের তুলনায় এটা আকারে ছোট এবং সহজেই এদিক থেকে ওদিকে নিয়ে যাওয়া যায়। যেখানে লিক্যুইড অক্সিজেন বা প্রেশারাইজ্ড অক্সিজেন রাখা খুব বিপজ্জনক বা মুশকিল, সেখানে এই যন্ত্রগুলি দারুণ কাজ দেয়। এগুলি ঘরে রাখাও সুবিধে। সাধারণত, অক্সিজেন সিলিন্ডারের দাম ৮০০০ থেকে ২০০০০ টাকা পর্যন্ত। সেখানে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটরের দাম ৪০০০০ থেকে ৯০০০০ টাকা। খরচ বেশি হলেও বাকি সুবিধের জন্য অনেকেই এগুলি কেনার বা ভাড়া নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। বিদ্যুতের সাহায্যে চলে এই যন্ত্র। ৯২ থেকে ৯৫ শতাংশ বিশুদ্ধ অক্সিজেন তৈরি করে। ভিতরে একটি সেন্সর রয়েছে যেটা অক্সিজেনের শুদ্ধতা কমে এলে জানান দেয়। যন্ত্রের ভিতরে ফিল্টার এবং সিভ বেড বছরের পর বছর ব্যবহারের পর ক্ষয়ে যেতে পারে। তখন সেগুলি বদলানো প্রয়োজন।
কত রকমের
দু’ধরনের অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর পাওয়া যায় বাজার। একটা যেটা অবিরাম অক্সিজেন জোগান দেয়, অন্যটা পাল্স ডোজের মতো। প্রথমটা বন্ধ না করা পর্যন্ত সারাক্ষণ অক্সিজেন জোগাবে। দ্বিতীয়টা রোগীর শ্বাস প্রশ্বাসের ধরন বুঝে শুধু শ্বাস নেওয়ার সময় অক্সিজেন জোগাবে। ভারতে নানা ব্র্যান্ডের অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর পাওয়া যায়। ফিলিপ্স, বিপিএল মে়ডিক্যাল টেকনোলজি লিমিটেড, মেডট্রনিক, ইনোজেন ও আরও অনেক ব্র্যান্ড রয়েছে।
কী মাথায় রাখবেন
রোগীকে কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন দেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যিক। সঙ্গে সব সময় পাল্স অক্সিমিটার রাখতে হবে। ১ লিটার অক্সিজেন যদি কনসেন্ট্রেটরের মাধ্যমে দেওয়া যায় তা হলে ফুসফুসে অক্সিজেনের মাত্রা ২৪ শতাংশ বাড়া সম্ভব। ২ লিটার দিলে বাড়বে ২৮ শতাংশ। কতটা প্রয়োজন সেই অনুযায়ী মিনিটে কতটা অক্সিজেন দিতে হবে, সেটা নির্ধারিত করতে হবে।