Safe Holi With Kids

দোলের রঙে যেন ক্ষতি না হয় শিশুর, আনন্দে মাতুন, কিন্তু খেয়ালও রাখুন অভিভাবকেরা

ছোটদের নিয়ে আনন্দে মাতবেন অবশ্যই, কিন্তু কিছু বিষয়ে খেয়ালও রাখতে হবে। ছোটদের নিয়ে রং খেলতে হলে অভিভাবকদের কী কী বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে, সে নিয়ে রইল কিছু পরামর্শ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫ ১০:২১
Share:
How to celebrate safe Holi with kids, parents should know the safety tips

দোল খেলবে শিশু, বাবা-মায়েরা কী ভাবে সুরক্ষিত রাখবেন? ছবি: সংগৃহীত।

বাড়ির সবচেয়ে ছোট সদস্যটির আনন্দ যেন কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। দোলের রং খেলতে তো সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে ছোটরাই। লাল-নীল-সবুজ-হলুদ হরেক রকম রং মাখতে, ছোড়াছুড়ি করাতেই আনন্দ। ছোটদের নিয়ে আনন্দে মাতবেন অবশ্যই, কিন্তু কিছু বিষয়ে খেয়ালও রাখতে হবে। ছোটদের নিয়ে রং খেলতে হলে অভিভাবকদের কী কী বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে, সে নিয়ে রইল কিছু পরামর্শ।

Advertisement

সঠিক রঙের নির্বাচন

বাজারে যে সব রং বেশি পাওয়া যায়, সেগুলিতে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক মেশানো থাকে। এমনকি ভেষজ আবির বলে যা বিক্রি হচ্ছে, তাতেও রাসায়নিকের আধিক্য থাকে। তাই বাড়িতে তৈরি রং যদি ব্যবহার করা যায়, তা হলে সবচেয়ে ভাল। না হলে শিশুদের রং অল্পই দেবেন, আবিরও যেন সামান্যই ব্যবহার করে তারা। এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, “দুধের শিশুদের নিয়ে রং খেলা একেবারেই ঠিক হবে না। পাঁচ থেকে দশ বছরের শিশুদেরও রং মাখানোর সময়ে সতর্ক থাকবেন। ছোটদের ত্বক নরম ও স্পর্শকাতর হয়। রঙের রাসায়নিক থেকে ত্বকে অ্যালার্জি, কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস হতে পারে।”

Advertisement

পিচকারি বা বেলুন জোরে ছুড়বেন না

নানা রকম রঙে ভরা পিচকারি ও রং ভর্তি বেলুনই ছোটদের সবচেয়ে বেশি পছন্দ। কিন্তু এই দু’টি জিনিসই শিশুদের জন্য ক্ষতিকর। অরুণাংশুবাবুর মতে, বেলুন ছোড়াছুড়ি করতে গিয়ে দুর্ঘটনা অনেক ঘটে। চোখে-নাকে মুখে বেলুন ফেটে রং ঢুকে গিয়ে বিপদ হতে পারে। তা ছাড়া পিচকারি দিয়ে রং ছোড়ার সময়ে ছোটরা সতর্ক থাকে না। অসাবধানতায় চোখে বা নাকে রং ঢুকে যেতে পারে।

চোখ বাঁচিয়ে

দোলের রঙে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় চোখের। রং ঢুকে রেটিনা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের পরামর্শ, “জলরঙের চেয়ে আবির খেলায় শিশুদের উৎসাহিত করুন। ভেষজ আবির দেখে কিনুন বা বাড়িতেই বানিয়ে নিন। রাসায়নিক দেওয়া রং চোখে ঢুকলে এবং তার উপর চোখ রগড়ালে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটতে পারে।” দোল উৎসব মিটলে এমন বহু ঘটনাই সামনে আসে প্রতি বছর। তাঁদের পরিভাষায় যাকে বলে, ‘ব্লান্ট ট্রমা’। যার জেরে ‘ট্রম্যাটিক ক্যাটারাক্ট’ থেকে শুরু করে রেটিনা ছিঁড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

অ্যালার্জি থাকলে রং খেলা নয়

শিশুর যদি ডাস্ট অ্যালার্জি, কোল্ড অ্যালার্জি বা অ্যালার্জিক রাইনিটিস থাকে, তা হলে রং না খেলাই ভাল। জল রং হোক বা আবির, চোখে-নাকে গেলে অ্যালার্জি ভয়ানক ভাবে বেড়ে যেতে পারে। প্রিয়ঙ্করবাবুর মতে, “ছোটদের রং খেলতে বারণ করা যাবে না। আর উৎসবের আনন্দে মাতবে না-ই বা কেন। কিন্তু সাবধান হতে হবে অভিভাবকদেরই। ত্বকের সমস্যা থাকলে, শিশুর হাঁপানি বা অ্যালার্জি থাকলে সে ক্ষেত্রে বাড়িতে তৈরি আবির অল্প করে কপালে বা গালে লাগিয়ে দিন। তার বেশি নয়।“

অভিভাবকেরা যা যা মনে রাখবেন—

১) ফুলহাতা জামা ও প্যান্ট পরিয়ে তবেই শিশুকে রং খেলতে পাঠাবেন।

২) চোখে রং ঢুকে গেলে কচলাবেন না, বারে বারে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিতে হবে। তাতেও জ্বালা না কমলে বা দৃষ্টি ঝাপসা লাগলে দেরি না করে কাছাকাছি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

৩) রং খেলতে যাওয়ার আগে ভাল করে নারকেল তেল মালিশ করে দিতে হবে শিশুর সারা শরীরে। তাতে রং চেপে বসবে না। রং মাখার পরে সঙ্গে সঙ্গে তা ধুয়ে দিতে হবে।

৪) রং তোলার জন্য বেশি ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে শিশুকে স্নান করাবেন না। এতে ত্বকের ক্ষতি হবে।

৫) রোদের মধ্যে বেশি ক্ষণ রং খেলে শিশুর শরীরে যেন জলশূন্যতা তৈরি না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বারে বারে জল, ফলের রস, ডাবের জল খাওয়ালে ভাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement