Soha Ali Khan

Soha Ali Khan: মায়ের পরামর্শেই হচ্ছে সন্তানের যত্ন, আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন সোহা

অতিমারি অনেক কিছু বদলে দিয়েছে। তবে সেগুলির কিছু ভাল দিকও রয়েছে। ‘আনন্দবাজার অনলাইন’কে জানালেন সোহা আলি খান।

Advertisement

পৃথা বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২১ ১৪:৪৯
Share:

মা শর্মিলা ঠাকুর আর মেয়ে ইনায়ার সঙ্গে সোহা আলি খান। ছবি: সংগৃহীত

অতিমারি আমাদের সকলের জীবন কমবেশি বদলে দিয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেও ভাল দিকগুলি খোঁজেন পটৌডি-কন্যা সোহা আলি খান। শরীরচর্চা, স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোই এখন সোহার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সে সব কথাই জানালেন ‘আনন্দবাজার অনলাইন’কে।

Advertisement

অতিমারির ধাক্কা সামলে উঠতে পেরেছেন?

অনেকটাই সময় লেগেছে। কিন্তু ধীরে ধীরে এই নতুন জীবনই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। এই লড়াইয়ে আমি একা নই, সকলেই রয়েছেন। তবে বাড়িতে আমরা এখন খুব সচেতন ভাবে কিছু বদ অভ্যাস বদলে ফেলেছি। বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে। এখন সন্ধেবেলাগুলি আমরা সকলে একসঙ্গে কাটাই। হয় ধ্যান করি, নয়তো ইনায়াকে (সোহা এবং কুণাল খেমুর কন্যা) হাতের কাজ বা ছবি আঁকা শেখাই। মাঝেমাঝে গল্প পড়ে শোনাই। আমরা সপরিবার হাসিঠাট্টা করি, একসঙ্গে খেলাধুলা করি, শরীরচর্চা করি। এতে জীবনের ইতিবাচক দিকগুলি দেখতে সুবিধা হয়। তার উপরে আমরা পরিবার হিসাবে অনেক বেশি সময় কাটাতেও পারি।

Advertisement

ইনায়ার সবে তিন বছর বয়স। ওর শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে আপনি চিন্তিত?

আসলে বাচ্চারা তো খাওয়া নিয়ে খুব ঝামেলা করে। সামলাতে গিয়ে অনেক সময়ে আমরা হয়তো অস্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে ফেলি। তাই আমি একটা নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকা বেঁধে দিয়েছি ওর জন্য। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন, ফ্যাট, ফাইবার এবং বাকি পুষ্টিগুণ যাতে ঠিক মতো যায়, সেটা দেখার চেষ্টা করি। এই সময়ে ঠিক করে না খেলে বৃদ্ধি হবে কী করে? ওট্‌স, গাজর, শসা, ডাল, শাক-সব্জি দিই ওকে। কলা, বেরি, আপেল ও অন্যান্য মরসুমি ফল খাওয়াই।

আপনি তা হলে মা হিসাবে বেশ কড়া?

ইনায়ার স্বাস্থ্য নিয়ে আপস করতে রাজি নই। আমার মেয়ে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যভ্যাসে বড় হোক, চাই না। তাই ওর খিদে পেলে ভাজাভুজি কম দিই। তার বদলে মরসুমি ফল, ছোলা ভিজানো বা কাঠবাদাম খাওয়াই। কাঠবাদাম রাতে ভিজিয়ে রাখি। ছোট থেকেই এটা বাচ্চাদের খাওয়ানোর অভ্যাস করলে অনেক মা সুফল পাবেন। বাচ্চাদের মধ্য অফুরন্ত স্ফূর্তি থাকে। কিন্তু সেগুলি ঠিক পথে যাচ্ছে কি না এবং একটি রুটিন তৈরি হচ্ছে কি না, সেটা তো দেখতে হবে! তাই ইনায়ার গোটা সপ্তাহের পরিকল্পনা আমি শুরুতেই করে ফেলি। ছবি আঁকা, জুম্বা ক্লাস, নাচ বা গল্প বলার মতো কিছু জিনিস ঠিক করা থাকে ওকে ব্যস্ত রাখার জন্য।

আপনি সারা দিনে কী খান?

ঘুম থেকে উঠে গরমে জলে সামান্য হলুদ গুলে খেয়ে নিই। এতে শরীরের যাতীয় বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে যায়। শরীরচর্চা করা আগে সারা রাত ভিজানো কাঠবাদাম খাই। এতে যে পরিমাণে প্রোটিন ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ রয়েছে, তাতে শরীরচর্চার করার আগে খাওয়ার জন্য আদর্শ। অনেক বেশি পরিশ্রম করা যায়। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ছোট থেকে মাকে (শর্মিলা ঠাকুর) দেখেই শেখা। তাই জলখাবারে ধোসা বা উত্তাপম, দু’টো সিদ্ধ ডিম আর এক মুঠো বাদাম খাই। দুপুরে রুটি, এক বাটি ডাল আর মাছ খাই। বিকেলের দিকে খিদে পেলে আবার কাঠবাদাম বা ড্রাই ফ্রুট খাই। তাতে এই উটকো খিদেগুলি মরে। রাতে একটু হাল্কা খাবার খেতে পছন্দ করি। এক বাটি স্যালাডের সঙ্গে কিছু ছোলা বা ডাল ভিজানো। সঙ্গে ব্রকোলি বা টোম্যাটোর স্যুপ।

সোহা আলি খান ছবি: সংগৃহীত

আপনার কি কোনও ‘চিট ডে’ নেই?

অবশ্যই আছে। তবে খুব কড়া ডায়েট তো আমি করি না। কিছু কিছু দিন খুব মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করে। তখন হয়তো একটা ভিগান চকোলেট কেকের টুকরো খেলাম। স্পাইস্‌ড আমন্ড বানানা কেকও আমার খুব প্রিয়। তবে চিনির বদলে গুড় দিয়ে বানানো।

স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মতো ঝকঝকে ত্বকও কি মায়ের কাছ থেকেই পাওয়া? নাকি নিয়মিত যত্ন নেন?

খাওয়া-দাওয়া বলুন কিংবা রূপচর্চা, মায়ের কাছ থেকেই সব শেখা। এখনও আমি মায়ের পরামর্শ নিই। খুব ছোট বয়স থেকেই মা শিখিয়েছিলেন, শুধু ঘরোয়া টোটকাতেই ঝকঝকে ত্বক পাওয়া সম্ভব নয়। ত্বককে ভিতর থেকে পুষ্টি দিতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে যাতে অ্যাকনে সমস্যা কমে, চামড়া টানটান হয় এবং প্রাকৃতিক জেল্লা তৈরি হয়। তাই দিনে ২-৩ লিটার জল খাই।

ইনস্টাগ্রাম দেখলে বোঝা যায়,আপনি যোগাভ্যাসেও খুব ভরসা করেন।

শরীরচর্চা একটা অভ্যাসের ব্যাপার। আমি চেষ্টা করি প্রত্যেক দিন এক ঘণ্টা অন্তত শরীর এবং মনের স্বাস্থ্যের জন্য রাখার। ঘুম থেকে উঠেই ধ্যান করি। তার পরে যোগাভ্যাস করি। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যোগাভ্যাস সত্যিই মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। আমি যোগাসন করলে একটু শান্ত হই, মন হাল্কা হয়। রোজ ১৫ মিনিট ধ্যান করার ফলে আমার মনোযোগ অনেকে বেড়েছে। এমন কিছু দিন থাকে, যে দিনগুলিতে আমি মার্জারিআসন বা বিতিলাসনের মতো কিছু আসন করে মন শান্ত করি। তার পরে বাকি দিনের কাজ করতে তেমন অসুবিধা হয় না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement