প্রচণ্ড দাবদাহে প্রতিদিনই বাড়ছে অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটছে। মাথা ঘোরা, বমি, গা হাত পায়ে ব্যথা, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু হিসাব নেই সরকারের কাছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত দশ দিনে ১০ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। প্রত্যেকেই অসুস্থ হয়েছেন গরমে। একজনের মৃত্যুও হয়েছে। পিংলার চাহাট গ্রামের বাসিন্দা পুলিন নায়েক (৪২) সোমবার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে মারা যান। এ বিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে, প্রচণ্ডে গরমেই পুলিন নায়েকের মৃত্যু হয়েছে। আরও নিশ্চিত হতে আমরা ময়নাতদন্ত করছি।”
প্রখর দাবদাহ চলছেই। সোমবার সন্ধ্যায় সামান্য বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি মিললেও ফের সকাল থেকে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে রোদ। মঙ্গলবার বিকেলেও সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। গরমে অসুস্থের সংখ্যা বাড়ছে। সরকারি হিসাবে অবশ্য তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। চিকিত্সকদের কথায়, সব অসুস্থ রোগী যে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন এমন তো নয়। অনেকে বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমে ভর্তি হচ্ছেন। অনেকে আবার স্থানীয় চিকিত্সকের কাছে চিকিত্সা করিয়ে বাড়িতেই থাকছেন। যে কয়েকজন সরকারি হাসাপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তাঁদেরই পরিসংখ্যান থাকছে।
চলতি মাসের ১৬ তারিখ থেকে গরমে অসুস্থ হওয়া রোগীদের উপর নজর দিতে শুরু করে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, দশ দিনে ১০ জন এই অসুস্থ হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে একজনের। অসুস্থের তালিকায় রয়েছেন বছর কুড়ির যুবক স্বপন সিংহ, ২২ বছরের চন্দন চক্রবর্তী আবার বালিয়া গ্রামের ৬৫ বছরের সুরেন মাহাতো বা বেলদার ছোটমাতকাতপুর গ্রামের ৫০ বছরের মানিক বারিকও।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, রোদ থেকে হিট স্ট্রোক, হিট হাইপারপাইরেক্সিয়া, হিট ক্র্যাম্প জাতীয় রোগ হতে পারে। এর থেকে নিজেদের বাঁচাতে হলে কী করতে হবে? স্বাস্থ্য দফতরের দাওয়ায়, ১৩টি বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সরাসরি তাপ এড়াতে ছাতা ব্যবহার করতে হবে, দীর্ঘক্ষণ রোদে না-থাকাই ভাল। একান্তই থাকতে হলে মাথা এবং শরীর হালকা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। মাঝে মধ্যেই ওআরএস বা নুন চিনির জল খেতে হবে। হালকা রঙের সুতির জামাকাপড়, রোদ চশমা, হেলমেট ব্যবহার করতে হবে। শিশু, গর্ভবতী মহিলা ও রোগগ্রস্ত ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া জরকরা।
সেই অনুযায়ী সতর্কতা মূলক বিধি লিখে তৈরি করা হয়েছে লিফলেট ও ব্যানার। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে লিপলেট বিলি এবং ব্যানার টাঙানো হচ্ছে জনবহুল স্থানগুলিতে। জেলার উপ-মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিও সব সময় সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ওরাল ডিহাইড্রেশন থেরাপিও রাখতে বলা হয়েছে।’’